ভোলা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ০০:৪৭ এএম
আপডেট : ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ০০:৫১ এএম
হাসানের মরহেদ বহনকারী গাড়ি। প্রিবা ফটো
৫ আগস্ট ঢাকার যাত্রাবাড়ীতে ছাত্র-জনতার মিছিলে গিয়ে শহীদ হন ভোলার মো. হাসান (২২) নামে এক যুবক। আন্দোলনে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর নিখোঁজ ছিল তিনি। রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতাল ও মর্গে ঘুরেও তার কোনো সন্ধান পায়নি তার পরিবার। অবশেষে ঢাকা মেডিকেলের মর্গে মিলল হাসানের মরদেহ।
শুক্রবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) হাসানের পরিবারের কাছে হস্তান্তরের
পর আজ শনিবার সকালের দিকে গ্রামের বাড়ি ভোলার সদর উপজেলা কাচিয়া ইউনিয়নের
৩ নম্বর ওয়ার্ডের সাহামাদার গ্রামে জানাজা শেষে দাফন করা হয় তাকে।
হাসান ভোলা সদর উপজেলার কাচিয়া ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের
সাহামাদার গ্রামের ব্যাপারী বাড়ির মো. মনির হোসেন ও গোলেনূর বেগম দম্পতির
সন্তান।
এদিকে শনিবার সকালে হাসানের জানাজার আগে কান্না করে কয়েক দফা
জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন তার মা গোলেনূর বেগম।
হাসানের বাবা মনির হোসেন ও মা গোলেনূর বেগম জানান, তাদের দুই মেয়ে ও দুই ছেলে। হাসান তাদের দ্বিতীয় সন্তান। বাবা ও মা দুইজনই অসুস্থ। বাবা দিন মজুরের কাজ করে সংসার চালালেও অসুস্থতার কারণে ঠিকমতো কাজ করতে পারত না। তাই অভাবের কারণে পড়াশুনা বাদ দিয়ে বেশ কয়েক বছর আগে রাজধানী ঢাকা চাকরির জন্য যায় হাসান। বেশ কয়েক বছর একটি দোকানে কর্মচারী থাকার কাপ্তান বাজারের এরশাদ মাকের্টের নিজের বড় বোন শাহানাজ বেগমের জামাই মো. ইসমাইল হোসেনের ইলেকট্রনিক্স দোকানে চাকরি করতেন হাসান। তার বেতনের টাকায় সংসার চলত।
তারা আরও জানান, জানুয়ারি মাসে ঢাকা মেডিকেল মর্গে থাকা কয়েকটি অজ্ঞাত লাশের মধ্যে প্রাথমিকভাবে হাসানকে শনাক্ত করে তার পরিবার। পরে ডিএনএ পরীক্ষায় হাসানের পরিচয় শনাক্ত হয়। গতকাল শুক্রবার হাসানের মরদেহ তাদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। ঢাকায় জানাজা শেষে শুক্রবারই হাসানের মরদেহ নিয়ে গ্রামের বাড়ির উদ্দেশে রওনা হন তার পরিবার। রাত আনুমানিক ১২টার দিকে গ্রামের বাড়িতে পৌঁছৈ মরদেহ। শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে সাহামাদার মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মাঠে জানাজা শেষে ১১টার দিকে একই এলাকার আলমগীর মেম্বার বাড়ির দরজা মসজিদের পাশে করস্থানে দাফন করা হয় তাকে। তবে এই ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও খুনি পুলিশদের দ্রুত বিচারের দাবি করে তারা।
হাসানের চাচা মো. নুরে আলম জানান, জানুয়ারি মাসে ঢাকা মেডিকেলের
মর্গে প্রাথমিকভাবে তিনিসহ পরিবারের লোকজন হাসানের মরদেহ শনাক্ত করেন। পরে
হাসানের বাবা-মা ডিএনএ পরীক্ষা করেন। এরপরই নিশ্চিত হন হাসানের মরদেহ।
তিনি আরও জানান, ‘হাসান অনেক ভালো ও শান্ত স্বভাবের ছেলে ছিল।
হাসানের হত্যাকাণ্ড কিছুতেই মেনে নেওয়া যায় না।’
জাতীয় নাগরিক কমিটির ভোলা জেলার সংগঠক মো. শাহাদাৎ খন্দকার
জানান, জুলাই-আগস্টের সকল হত্যাকাণ্ডের দ্রুত বিচার ও শহীদ পরিবারের পাশে সব সময়
সরকারকে পাশে থাকার জন্য আমরা দাবি করছি। শহীদ পরিবারের সকল সুযোগ সুবিধা
সরকারকে নিশ্চিত করতে হবে।