আখাউড়া (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ২০:১৫ পিএম
আপডেট : ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ২০:২৪ পিএম
আটক নিহতের ছেলে সিয়াম। প্রবা ফটো
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় এক নারীকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে খুন করার অভিযোগ উঠেছে তার একমাত্র ছেলের বিরুদ্ধে। পুলিশ বলছে, প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে এমন নৃশংস খুনের ঘটনা ঘটিয়েছে। এ ঘটনায় ছেলেকে আটক করা হয়েছে।
শুক্রবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ৬টার দিকে উপজেলার দক্ষিণ ইউনিয়নের আনন্দপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
আখাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ছমিউদ্দিন প্রতিদিনের বাংলাদেশকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
নিহত ওই নারীর নাম নাসিমা বেগম। তিনি আনন্দপুর গ্রামের মিজান মোল্লার স্ত্রী। অভিযুক্ত ছেলের নাম সিয়াম। নাসিমার মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য জেলা সদর হাসপাতালে পাঠিয়েছে পুলিশ।
এলাকাবাসী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, রাতে একই ঘরে নাসিমা, স্বামী, ছেলে সিয়াম ও এক নাতিকে নিয়ে ঘুমিয়ে ছিলেন। ভোরে মিজান মোল্লা নামাজ পড়তে যান। সকাল ৭টার দিকে মিজান মোল্লার ঘর থেকে চিৎকার চেঁচামেচি শুনে প্রতিবেশীরা এসে দেখেন খাটের ওপর মরদেহ পড়ে আছে। সংবাদ পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ওই নারীর মরদেহ উদ্ধার করে।
নিহতের স্বামী মিজান মোল্লা বলেন, ‘সকাল ৬টার দিকে নামাজ পড়তে যাই। নামাজ পড়ে খবর পাই- আমার স্ত্রীকে কে বা কারা কুপিয়েছে। বাড়িতে এসে বিছানায় রক্তাক্ত মরদেহ দেখতে পাই। আমি যেহেতু দেখিনি, তাই এ ঘটনায় কাউকে দোষী করতে পারব না।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমার ছেলে মানসিক অসুস্থ, সে এটি করতে পারে বলেও আমি বিশ্বাস করি না।’
নিহতের মেয়ে নাদিরা বেগম, ‘আমার ভাই সিয়াম বোকাসোকা। সে ২০ টাকার নোটও চিনে না। সে কিভাবে মাকে খুন করবে? আমার বিশ্বাস হয় না। অন্য কেউ হত্যা করেছে আমার মাকে।’
স্থানীয় বাসিন্দা নজরুল ইসলাম জানান, সকালে খবর পেয়ে সিয়ামদের বাড়িতে আসি। আমরা খুব উৎকণ্ঠার মধ্যে ছিলাম। কারণ তারা দাবি করছিল- তাদের জায়গা-জমি নিয়ে প্রতিবেশী কামরুল ইসলাম শাহীন ও এমদাদুলদের সাথে মামলা চলমান। এ কারণে তারা এই ঘটনা ঘটাতে পারে।
সাত বছর বয়সী সিয়ামের ভাগিনা ওমর ফারুক জানায়, আমার মামা নানিকে আঘাত করেছে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মুছা মিয়া প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘নাসিমার স্বামী শুক্রবার ভোরে নামাজ পড়তে মসজিদে যান। ফিরে এসে দেখেন বিছানায় স্ত্রীর মরদেহ পড়ে আছে। পরে নিহতের নাতির জবানবন্দিতে বুঝা গেছে সিয়ামই তার মাকে হত্যা করেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘সিয়াম কিছুটা মানসিক প্রতিবন্ধী। সে প্রায়ই বাড়ি থেকে বের হয়ে যেত। তাকে বার বার ফিরিয়ে আনত। তার মা’ই তাকে আগলে রাখত। আজকে সেই মাকেই সে হত্যা করেছে।’
আখাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ছমিউদ্দিন বলেন, ‘ঘরের বিছানায় নিহতের রক্তাক্ত মরদেহ পড়েছিল। আমাদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সিয়াম স্বীকার করেছেন ধারলো বটি-দা দিয়ে কুপিয়ে তার মাকে হত্যা করেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রতিপক্ষকে ফাঁসানোর জন্য এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। তবে এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে কারা জড়িত আছে তা বের করা হবে।’