× ই-পেপার প্রচ্ছদ সর্বশেষ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি শিক্ষা ধর্ম ফিচার ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

২৩ বছরেও স্বীকৃতি মেলেনি সুন্দরবন দিবসের

খুলনা অফিস

প্রকাশ : ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৭:১০ পিএম

আপডেট : ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৭:২৬ পিএম

ছবি : সংগৃহীত

ছবি : সংগৃহীত

২৩ বছরেও স্বীকৃতি মেলেনি সুন্দরবন দিবসের। প্রতি বছরই বেসরকারি আয়োজনে এ দিবসটি পালিত হয়ে আসছে । প্রাকৃতিক দুর্যোগের বিরুদ্ধে দেশের ‘রক্ষা কবচ’ হিসেবে বিবেচিত সুন্দরবনের সুরক্ষায় জাতীয় উদ্যোগ নিশ্চিত করার জন্য এ দাবিটি এখন সময়ের অন্যতম প্রয়োজনীয় ইস্যুতে পরিণত হয়েছে। তা সত্ত্বেও বছরের পর বছর সরকারের নিকট এ দাবি উপেক্ষিতই রয়ে গেছে।

বিশ্বের সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ বনভূমি সুন্দরবন উপকূলের মানুষের জন্য প্রাকৃতিক ঢাল হিসেবে কাজ করছে। এ বন সবাইকে রক্ষা করছে সামুদ্রিক ঝড় ও জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব থেকে। ভালোবাসার প্রতীক হিসেবে ১৪ ফেব্রুয়ারি পালিত হচ্ছে ২৫তম সুন্দরবন দিবস। তবে অতিরিক্ত পর্যটনের কারণে বন ও জীববৈচিত্র্য আজ হুমকির মুখে পড়েছে।

সুন্দরবনে ভ্রমণের প্রতি পর্যটকদের আগ্রহ বাড়ছে। দেশি-বিদেশি লাখো পর্যটক প্রতিবছর ছুটে আসছেন এ ম্যানগ্রোভ বনে। পর্যটনের এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে গত ৬ বছরে যুক্ত হয়েছে ২৯টি বিলাসবহুল নৌযান। এসব নৌযানে থাকছে তিন-তারকা মানের সুযোগ-সুবিধা, এমনকি সুইমিংপুলও। এতে লগ্নি হয়েছে প্রায় ৩০০ কোটি টাকা।

তবে পর্যটকের অতিরিক্ত চাপ বন ও পরিবেশের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। ২০১৪ সালে সুন্দরবন ভ্রমণ নীতিমালা তৈরি করা হলেও তা পুরোপুরি মানা হচ্ছে না। অভয়ারণ্যে একদিনে ৩০টির বেশি নৌযান অবস্থান করছে, যেখানে মূলত ইকোট্যুরিজমের নামে নৌযানে পিকনিক পার্টি বসছে।

গেল ২৫ বছরে সুন্দরবনে পর্যটকের সংখ্যা প্রায় চার গুণ বেড়েছে। ২০০১-০২ অর্থবছরে ৫৯ হাজার ১৬৯ জন পর্যটক বন ভ্রমণ করেন। ২০০৯-১০ অর্থবছরে এ সংখ্যা এক লাখ ছাড়িয়ে যায়। ২০২২-২৩ অর্থবছরে পর্যটকসংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ১৬ হাজার ১৪৩ জনে। সাম্প্রতিক তথ্য বলছে, এবার আগের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

পর্যটন ব্যবসার আড়ালে চাপা পড়ছে নিরাপত্তার বিষয়টি। চলাচল-নিষিদ্ধ নৌযানে সুন্দরবনে ভ্রমণ করছেন অনেক পর্যটক। কেউ গুরুতর অসুস্থ হলে উদ্ধার বা চিকিৎসার কোনো ব্যবস্থা নেই। ছোট ট্রলার ও জালি বোটে গভীর বনে প্রবেশের ঘটনা বাড়ছে, যা ঝুঁকি বাড়িয়ে তুলছে।

পরিবেশ বিজ্ঞানীরা সতর্ক করেছেন, অনিয়ন্ত্রিত পর্যটন বনের বাস্তুতন্ত্রের জন্য মারাত্মক হুমকি।

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. সালমা বেগম বলেন, ‘সুন্দরবনে যেসব নৌযান চলে, সেগুলোর শব্দ বন্যপ্রাণীর প্রজননে বাধা সৃষ্টি করছে। বাদুড় ও ডলফিনের চলাচলেও ব্যাঘাত ঘটছে।’

অধ্যাপক ড. আবদুল্লাহ হারুন চৌধুরী বলেন, ‘বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্যে উন্মুক্ত পর্যটনের সুযোগ কমাতে হবে। পর্যটকের ব্যবহৃত পারফিউম ও কসমেটিকসের গন্ধ প্রাণীদের প্রজননে বিরূপ প্রভাব ফেলে।’

বন বিভাগের তথ্য মতে, মোট পর্যটকের ৮০ শতাংশ এক দিনের জন্য করমজল, হারবারিয়া ও কলাগাছিয়া যান। তবে অভয়ারণ্যের কটকা, কচিখালী ও নীলকমলে পর্যটকের চাপ বেড়েছে। ট্যুর অপারেটররা পর্যটকদের ধরে রাখতে বাধ্য হন এ জায়গাগুলোতে নিয়ে যেতে।

বন সংরক্ষক মিহির কুমার দো জানান, সুন্দরবনের জন্য ২০ বছর মেয়াদি পর্যটন মহাপরিকল্পনা তৈরির কাজ চলছে। বিশেষায়িত নৌযান ছাড়া অন্য যান বনে প্রবেশ করতে পারবে না। পর্যটকের সংখ্যাও নির্ধারণ করা হবে, যাতে অভয়ারণ্যের ওপর চাপ কমে।’

পরিবেশবিদরা মনে করেন, টেকসই ও নিয়ন্ত্রিত পর্যটন ব্যবস্থা ছাড়া সুন্দরবনের ভবিষ্যৎ রক্ষা করা সম্ভব নয়। নীতিমালার যথাযথ প্রয়োগ ও বন সুরক্ষায় কঠোর পদক্ষেপ এখন সময়ের দাবি।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : মোরছালীন বাবলা

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা