দিনাজপুর প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ২২:৪০ পিএম
দিনাজপুরের বীরগঞ্জে হিমাগারগুলোতে আলু সংরক্ষণ ভাড়া বৃদ্ধির প্রতিবাদে মহাসড়কে আলু ফেলে বিক্ষোভ করেছেন আলুচাষি কৃষকরা। এ সময় তারা দিনাজপুর-পঞ্চগড় ও ঢাকা মহাসড়কটি প্রায় আড়াই ঘন্টা অবরোধ করে সমাবেশ করে। পরে পাঁচ দফা আল্টিমেটাম দিয়ে প্রশাসনের আশ্বাসে অবরোধ প্রত্যাহার করে বিক্ষোভকারীরা।
বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) সকালে দিনাজপুর-পঞ্চগড় ও ঢাকা মহাসড়কে বীরগঞ্জ উপজেলা পৌর শহরের বিজয় চত্বরে এ সমাবেশ করা হয়। এসময় ওই সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে দু'ধারে আটকা পড়ে স্থানীয় ও দূরপাল্লার কয়েক’শ যানবাহন।
পরে বীরগঞ্জের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফজলে এলাহী ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল গফুর ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে অবরোধ তুলে নেওয়ার আহ্বান জানান। কিন্তু আলু চাষি ও অন্যান্য কৃষকরা তা মানতে রাজি না হয়ে ৫ দফা দাবি পেশ করেন। ইউএনও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করে সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিলে সড়ক অবরোধ প্রত্যাহার করে নেন আন্দোলনকারীরা।
অবরোধে অংশগ্রহনকারী ক্ষুব্ধ কৃষক মমিনুল, আজিজার, নজরুল, মোখলেস, তারিনী কান্ত, ভবেশ, লক্ষ্মী নারায়ন সহ কয়েকজন জানান, আগে প্রতি বস্তা আলুর ভাড়া ছিল ৩০০-৩৫০ টাকা, কিন্তু এখন হিমাগার মালিকরা প্রতি কেজিতে ৮ টাকা হারে ভাড়া নির্ধারণ করেছেন, ফলে এক বস্তার ভাড়া বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫০০ টাকার বেশি। এতে উৎপাদন খরচ বৃদ্ধির পাশাপাশি কৃষকদের লোকসানের শঙ্কা বেড়েছে। তাই তাঁরা দ্রুত আগের ভাড়া নির্ধারণের দাবি জানান।
উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন ধলু ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধি জেমিয়ন রায় আলু চাষীদের আন্দোলনে একাত্মতা প্রকাশ করে বলেন, এই ভাড়া বৃদ্ধি আমাদের জন্য মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা। যদি ভাড়া কমানো না হয়, তাহলে ৭দিনের মধ্যে আরও বড় কর্মসূচির ডাক দেওয়া হবে।
আলুচাষী ও বীরগঞ্জ আলু ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আব্দুল মালেক ও সাধারণ সম্পাদক হরসুন্দর বর্মণ বলেন, চলতি মৌসুমে আলুর আবাদ বেশি হওয়ায় হিমাগার মালিকেরা দুরভিসন্ধি করছেন। এবিষয়ে গত ৩ ফেব্রুয়ারি ইউএনও এবং জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ দেওয়ার পর কোনো সমাধান না পাওয়ায় বাধ্য হয়ে আলুচাষি ও ব্যবসায়ীরা রাস্তায় নেমেছে।
বীরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফজলে এলাহী বলেন, হিমাগার ভাড়া কমানোর বিষয়ে জেলা প্রশাসককে জানানো হয়েছে। এ বিষয়টি কেন্দ্রীয়ভাবে সমাধানের চেষ্টা করা হবে। তা না হলে আমরা স্থানীয়ভাবে হিমাগার মালিক, চাষী ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে সমন্বয় করা হবে।
শাহী হিমাগার লি. (৪) শীতলাই-এর ম্যানেজার মো. আরজু রহমান হিরু বলেন, হিমাগার ভাড়া গত বছর কেজিপ্রতি ৭ টাকা এবছর ৮ টাকা নির্ধারণ করেছে বাংলাদেশ কোল্ড স্টোরেজ এসোসিয়েশন। কারণ, বর্তমানে বিদ্যুৎ, শ্রমিক সহ সব কিছুরই দাম বেশি।