টাঙ্গাইল ও সিরাজগঞ্জ প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ২০:৩০ পিএম
আপডেট : ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ২০:৩৬ পিএম
প্রবা ফটো
যমুনা নদীর ওপর নবনির্মিত যমুনা রেলওয়ে সেতু দিয়ে বাণিজ্যিকভাবে ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে। বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) দুটি যাত্রীবাহী ট্রেন সেতুটি পাড়ি দেওয়ার মাধ্যমে উত্তরবঙ্গের সঙ্গে রাজধানী ঢাকার রেল যোগাযোগব্যবস্থার নতুন দ্বার উন্মোচিত হলো।
রেল সেতুটি চালুর ফলে আগের মতো দুই প্রান্তে ক্রসিংয়ের ভোগান্তি পোহাতে হবে না যাত্রীদের। বঙ্গবন্ধু সেতুর ৩০০ মিটার উজানে নির্মিত হয়েছে এই রেল সেতু। এটি সিরাজগঞ্জ ও টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরকে সংযুক্ত করেছে।
বুধবার বেলা ১১টা ১৮ মিনিটে রাজশাহী থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী সিল্কসিটি এক্সপ্রেস নবনির্মিত যমুনা রেল সেতু পার হয়। মাত্র ৬ মিনিটে ট্রেনটি সেতু পার হয়। এ সময় এটির গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় প্রায় ৭০ কিলোমিটার। আর বেলা ১১টা ৫৫ মিনিটে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা বুড়িমারী এক্সপ্রেস ট্রেন রেল সেতু পাড়ি দেয়। অন্যদিকে, সকাল ১০টায় ঢাকা-রাজশাহী-চাঁপাইনবাবগঞ্জ রুটের বনলতা এক্সপ্রেস শেষবারের মতো পাশের বঙ্গবন্ধু বহুমুখী সেতু ব্যবহার করে নদী পাড়ি দেয়; যা এই সেতুতে স্থাপিত রেললাইন দিয়ে ট্রেন চলাচলের সমাপ্তি টেনে দেয়।
যমুনা রেল সেতু প্রকল্পের পরিচালক আল ফাত্তাহ মো. মাসউদুর রহমান জানান, ৪ দশমিক ৮ কিলোমিটার দীর্ঘ যমুনা রেল সেতুতে দুটি রেললাইন থাকলেও আপাতত একটি লাইন দিয়েই উভয় দিকে ট্রেন চলাচল করবে। ১৮ ফেব্রুয়ারি আনুষ্ঠানিকভাবে সেতু উদ্বোধন করার কথা। ওইদিন থেকে দুই লাইনেই ট্রেন চলাচল শুরু হবে এবং বঙ্গবন্ধু সেতু দিয়ে আর কোনো ট্রেন চলবে না। নতুন সেতু ব্যবহারে সময় বাঁচবে ৩০-৩৫ মিনিট।
২০১৬ সালের ডিসেম্বরে প্রকল্পের নকশা প্রণয়নসহ সেতুর নির্মাণ ব্যয় প্রথমে ৯ হাজার ৭৩৪ কোটি ৭ লাখ টাকা ধরা হয়েছিল। পরে মেয়াদ কয়েক দফায় ২ বছর বাড়ানোর ফলে ব্যয় বেড়ে ১৬ হাজার ৭৮০ কোটি ৯৬ লাখ টাকায় দাঁড়ায়। এর মধ্যে ২৭ দশমিক ৬০ শতাংশ দেশীয় অর্থায়ন এবং ৭২ দশমিক ৪০ শতাংশ জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা) ঋণ দিয়েছে। দেশের বৃহত্তর ডুয়েলগেজ ডাবল ট্র্যাকের এ রেল সেতুর নির্মাণকাজ বাস্তবায়ন করেছে জাপানি কোম্পানি ওটিজি ও আইএইচআই। প্রকল্পের শুরুতে এই সেতুর নাম ছিল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতু। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর গত বছরের ডিসেম্বরে সেতুর নাম পাল্টে যমুনা রেল সেতু রাখা হয়।
১৯৯৮ সালের ২৩ জুন বঙ্গবন্ধু সড়ক কাম রেল সেতু চালু হওয়ার পর ঢাকার সঙ্গে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের রেল যোগাযোগ স্থাপিত হয়। ২০০৮ সালে সেতুটিতে ফাটল দেখা দেওয়ায় ট্রেনের গতি কমিয়ে দেওয়া হয়। পরে সরকার যমুনা নদীর ওপর আলাদা রেল সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেয়। ২০২০ সালের ২৯ নভেম্বর সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভার্চুয়ালি এই সেতুর নির্মাণকাজের ভিত্তিপ্রস্থর স্থাপন করেন। ২০২১ সালের মার্চে পাইলিংয়ের কাজ শুরু হয়।