আশুলিয়ায় স্বামী-স্ত্রীসহ চারজনের লাশ উদ্ধার

নিহত দম্পতিরা হলেন- বরগুনা জেলার পাথরঘাটা থানার বড়ইতলা গ্রামের মোস্তফার ছেলে মো. শাওন এবং তার স্ত্রী একই জেলার পাথরঘাটা থানার জমাদ্দার বাড়ি গ্রামের শাহ আলম মাতব্বরের মেয়ে হাফিজা। দুইজনই ‘দি রোজ ড্রেসেস লিমিটেড’ কারখানায় শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন। 

অপরদিকে মঙ্গলবার দুপুরে খেজুরবাগান এলাকার একটি তৈরি পোশাক কারখানা থেকে আরেক শ্রমিকের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন আশুলিয়া থানার এএসআই মো. শামসুল হক। নিহত মোস্তফা (৩৫) রেডিয়ান্স জিন্স লিমিটেড কারখানার শ্রমিক ছিলেন।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, প্রায় পাঁচ মাস আগে ওই দম্পতি আশুলিয়ার কাঁঠালতলা এলাকার আফাজ উদ্দিনের পাঁচতলা ভবনের একটি ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে স্থানীয় একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করতেন। প্রতিদিনের মতো সকালে তারা কারখানায় চলে যান এবং রাতে বাসায় ফিরে আসেন। রাতেই তাদের কক্ষে একই রশিতে তাদের মরদেহ ঝুলতে দেখে প্রতিবেশীরা বাড়িওয়ালাকে খবর দেন। পরে বাড়িওয়ালা পুলিশে খবর দিলে আশুলিয়া থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে ওই দম্পতির মরদেহ উদ্ধার করে।

এ ব্যাপারে বাড়িওয়ালা আফাজ উদ্দিন জানান, তাদের মধ্যে কখনো পারিবারিক কলহ হয়েছে তা দেখা যায়নি। ঋণ ছিল কি-না তাও কখনো শুনিনি। কিন্তু কী কারণে তারা এই পথ বেছে নিলো জানা নেই।

এসআই জসিম উদ্দিন বলেন, ‘ধারণা করা হচ্ছে, ফ্যানের সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে প্রথমে শাওন আত্মহত্যা করেন। তার স্ত্রী বাসায় এসে স্বামীর ঝুলন্ত মরদেহ দেখে খাটের ওপর নামিয়ে রাখেন। পরে তিনি নিজেও ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন। এখনও তাদের কোনো আত্মীয়-স্বজনের খোঁজ পাওয়া যায়নি। যে কারণে তাদের ব্যাপারে কোনো তথ্য মেলেনি।’

অপরদিকে, খেজুরবাগান এলাকার ‘রেডিয়ান্স জিন্স লিমিটেড’ কারখানার অষ্টম তলায় ফিনিশিং সেকশন থেকে গলায় ফাঁস দেওয়া অবস্থায় মোস্তফার মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে এএসআই মো. শামসুল হক বলেন, ওই কারখানার ভেদ ভিতরে এক শ্রমিক আত্মহত্যা করেছেন। এরপর থেকে শ্রমিকরা কারখানার ভিতরে বিক্ষোভ করছেন। এখানে শিল্প পুলিশ-১ এর একটি টিম ও সেনাবাহিনীর একটি টিম কাজ করছে। আমরা কারখানার বাইরে অবস্থান করছি। তবে কিভাবে শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে তা তদন্তের দাবি জানিয়েছেন ওই পোশাক কারখানার শ্রমিকরা। তবে তাৎক্ষণিকভাবে নিহতের বিস্তারিত পরিচয় জানা যায়নি। 

এছাড়াও সোমবার বিকালে আশুলিয়ার ডেন্ডাবর এলাকার জনৈক মকবুলের ভাড়া বাসা থেকে ফারজানা আক্তার নামে এক নারীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।  ফারজানা পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ থানা এলাকার ফজলু মিয়ার মেয়ে। তার মরদেহ আইনি প্রক্রিয়া শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন আশুলিয়া থানার এসআই জসিম উদ্দিন।

আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নূর আলম সিদ্দিকী জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে ওই দম্পতিসহ চারজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তবে কী কারণে তারা আত্মহত্যা করেছে, এখনো জানা যায়নি। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলেও জানান তিনি।