অব্যবস্থাপনার প্রতিবাদে হাসপাতাল ঘেরাও, তত্ত্বাবধায়কের কক্ষে তালা

অনিয়ম, দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনার প্রতিবাদে নওগাঁ সদর হাসপাতাল ঘেরাও করে তত্ত্বাবধায়কের কার্যালয়ে তালা দিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা। তবে এ সময় তত্ত্বাবধায়ক ডা. জাহিদ নজরুল অফিসে উপস্থিত ছিলেন না।

মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে হাসপাতালে অবস্থান নিয়ে ঘেরাও কর্মসূচি পালন করেন জেলার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা। 

ঘেরাও কর্মসূচি পালনকালে শিক্ষার্থীরা বসে সমস্যা নিরসনে হাসপাতাল প্রশাসনকে ১ ঘণ্টার সময় বেঁধে দেন। কিন্তু হাসপাতাল প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো সাড়া না পাওয়ায় তারা হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়কের কার্যালয়ে তালা লাগিয়ে দেন। 

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা জানান, ৫ আগস্টের পর হাসপাতালের চিকিৎসাসেবার মানোন্নয়ন, ওষুধ কালোবাজারে বিক্রি, চিকিৎসকদের ঠিকমতো দায়িত্ব পালন না করা, রোগীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার-হয়রানিসহ বিভন্ন অনিয়ম-দুর্নীতি ও হাসপাতাল চত্বরে ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের দৌরাত্ম্য দূর করার বিষয়ে হাসপাতাল প্রশাসনকে বারবার বলা হয়। কিন্তু তারা এসব বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ না নিয়ে হীরকজয়ন্তী পালনে ব্যস্ত। তাই বাধ্য হয়ে হাসপাতাল ঘেরাও করে তত্ত্বাবধায়কের কার্যালয়ে তালা দেওয়া হয়েছে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থী ফজলে রাব্বী বলেন, ‘হাসপাতালটি অনিয়ম, দুর্নীতি, অব্যবস্থাপনাসহ নানা সমস্যায় জর্জরিত। জেলার আশপাশের উপজেলাসহ পার্শ্ববর্তী জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে আগত রোগীরা সঠিক চিকিৎসাসেবা পায় না। কর্তব্যরত চিকিৎসকরা হাসপাতালে ঠিকমতো না এসে বিভিন্ন ক্লিনিকে রোগী দেখা নিয়ে ব্যস্ত থাকেন। চিকিৎসাসেবা আমাদের মৌলিক চাহিদার একটি হলেও আমরা সাধারণ মানুষ তা কতটুকু পাচ্ছি?’

ফজলে রাব্বী আরও বলেন, ‘হাসপাতাল ঘেরাও কর্মসূচি চলাকালে হাসপাতাল থেকে সরকারি ওষুধ কালোবাজারে বিক্রির জন্য নিয়ে যাওয়ার সময় একজনকে হাতেনাতে আটক করা হয়েছে। অথচ চিকিৎসাসেবা নিতে আসা রোগীরা ওষুধ পায় না। হাসপাতাল চত্বরে ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের দৌরাত্ম্যের কারণে রোগী ও তাদের স্বজনদের বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে হয়। এসব বিষয় সমাধানের জন্য আমরা হাসপাতাল প্রশাসনকে বহুবার বলেছিলাম। কিন্তু তারা এসব সমস্যা নিরসনে কোনো উদ্যোগ না নেওয়ায় বাধ্য হয়ে আমরা তত্ত্বাবধায়কের কার্যালয়ে তালা লাগিয়ে দিয়েছি।’

হাসিব চৌধুরী নামে আরেক শিক্ষার্থী বলেন, ‘এসব সমস্যা সমাধানের জন্য যতক্ষণ হাসপাতাল প্রশাসনের পক্ষ থেকে উদ্যোগ গ্রহণ করা না হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত তত্ত্বাবধায়কের কার্যালয় তালাবদ্ধ থাকবে। এ সময় দায়িত্বরত চিকিৎসকদের তাদের চিকিৎসাসেবা চালু রাখার পাশাপাশি এসব সমস্যা নিরসন না করে চিকিৎসকরা যদি কোনো আন্দোলনের চেষ্টা করে, তাহলে তা কঠোরভাবে প্রতিহত করা হবে।’ 

হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. জাহিদ নজরুলের ব্যবহৃত মোবাইলে কয়েকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি কল রিসিভ না করায় তার বক্তব্য পাওয়া সম্ভব হয়নি।