আব্দুস ছালাম সফিক, সাটুরিয়া (মানিকগঞ্জ)
প্রকাশ : ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১০:৩৮ এএম
সাটুরিয়ার গোপালপুরে প্রতিদিন সকাল সাড়ে ৮টায় বসে দুধের বাজার। সম্প্রতি তোলা। প্রবা ফটো
ঘড়ির কাঁটায় সময় তখন সকাল সাড়ে ৮টা। বাজারের পাশ দিয়ে চলে গেছে ধলেশ্বরী নদী। নদীর পাশ দিয়ে গ্রামীণ মেঠোপথ। সেই পথ ধরে যারা হেঁটে আসছেন, তাদের কারও হাতে বালতি, কারও মাথায় কলস। সবার গন্তব্য একটাইÑ সাটুরিয়ার গোপালপুর বাজার। সেখানে গিয়ে দুধ বিক্রি করবেন তারা। ততক্ষণে দুধের পাইকার বড় বড় ড্রাম প্রস্তুত করে বসে আছেন খামারিদের অপেক্ষায়।
দুধের এই বাজারের নাম গোপালপুর। অবস্থান মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলায়। বাজারটি বসে সকাল সাড়ে ৮টায়। শেষ হয় সাড়ে ৯টায়। এক ঘণ্টার এই বাজারে দুধ বিক্রি হয় আট হাজার থেকে ১০ হাজার লিটার। এ বাজারে উপজেলার ছনকা, রাজৈর, সালুয়াকান্দি, বরাইদ, ধুলটসহ বিভিন্ন গ্রাম থেকে দুধের খামারিরা দুধ বিক্রি করতে আসেন।
রাজৈর গ্রাম থেকে দুধ বিক্রি করতে আসা কামরুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের পাঁচটি গাভীর দুধ গোপালপুর বাজারে বিক্রি করি। দুধ বিক্রির টাকা দিয়ে দানাদার খাবার কিনে গরুকে খাওয়াই।’
একই এলাকার বাবুল মিয়া বলেন, ‘এক ঘণ্টার বাজারে প্রচুর দুধ কেনাবেচা হয়। তবে আমরা সব সময় ন্যায্য দাম পাই না।’ কাকরাইদ গ্রামের ফজল হক বলেন, ‘প্রতিদিন বাজারে ২০০ থেকে আড়াইশ মণ দুধ বিক্রি করা হয়। পাইকাররা দুধ সংগ্রহ করে ঢাকা, টাঙ্গাইলসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে দুধের ছানা তৈরি করে বিক্রি করেন।’
গোপালপুর বাজার বণিক সমিতির সভাপতি মো. আবুল হোসেন বলেন, ‘আমাদের গোপালপুর বাজারের আশপাশের প্রায় ১৫টি গ্রাম থেকে খামারিরা দুধ বিক্রি করতে আসেন। দুধ বাজারের স্থায়িত্বকাল হয় মাত্র এক ঘণ্টা। এই সময়ে বাজারে প্রতিদিন প্রায় সাত লাখ টাকার দুধ কেনাবেচা হয়।’
সাটুরিয়া উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ইমরান হোসেন বলেন, ‘দুধ একটি আদর্শ খাবার। দুধ থেকে নানা রকম বাইপ্রোডাক্ট তৈরি হয়। দই, মাখন, ঘি, শিশুখাদ্য ও মিষ্টিজাতীয় খাবার।’ তিনি বলেন, ‘প্রান্তিক খামারিদের কথা মাথায় রেখে উপজেলায় দুধ সংগ্রহ কেন্দ্র নির্মাণ করা হবে। এ বিষয়ে খামারিদের নিয়মিত পরামর্শ ও প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।’