পাইকগাছা (খুলনা) প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৩:০০ পিএম
পাইকগাছা পৌরসভার মধুমিতা পার্কের সব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ হলেও রয়ে গেছে আওয়ামী লীগ কার্যালয়। প্রবা ফটো
হাইকোর্টের আদেশে খুলনা জেলা পরিষদের মালিকানাধীন পাইকগাছা পৌরসভার মধুমিতা পার্কের সব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ হলেও ‘অদৃশ্য’ কারণে উচ্ছেদ হয়নি আওয়ামী লীগ কার্যালয়। পার্কটির সকল অবৈধ স্থাপনা দ্রুত উচ্ছেদ করে পার্কটিকে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনার দাবি জানিয়েছেন মধুমিতা পার্ক সংরক্ষণ কমিটির নেতারা।
সরেজমিনে জানা যায়, ১৯৮০ সালে মধুমিতা পার্ক প্রতিষ্ঠিত হয়। ২০০৪ সালে এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী পার্কের জায়গা দখল করে পাকা স্থাপনা তৈরি শুরু করে। দখলের প্রতিবাদে গঠিত হয় মধুমিতা পার্ক সংরক্ষণ কমিটি। সে সময় হয় ব্যাপক আন্দোলন ও সংগ্রাম। অবৈধ দখলদারদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে সহকারী জজ আদালত পাইকগাছায় মামলা করা হয়। আদালত স্থাপনা নির্মাণে নিষেধাজ্ঞা প্রদান করেন। এ আদেশ অমান্য করে স্থাপনা নির্মাণ ও ব্যবসা বাণিজ্য অব্যাহত রাখলে ২০০৫ সালে হাইকোর্টে ৩৫৯০/০৫ রিট পিটিশন করেন মধুমিতা পার্ক সংরক্ষণ কমিটি।
হাইকোর্ট মামলাটির শুনানি শেষে ২০০৫ সালের ২৪ মে পার্কের অভ্যন্তরে অবৈধ নির্মাণকাজ বন্ধ করার আদেশ দেন। এরপরও সকল কর্মকাণ্ড অব্যাহত থাকায় সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে ১০২/২২ কনটেম্পট পিটিশন করা হয়। ২০২৩ সালের ১৩ মার্চ হাইকোর্ট ২০ দিনের মধ্যে সকল অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে পার্কটিকে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে দিতে নির্দেশ দেন।
হাইকোর্টের আদেশে ২০২৩ সালের ২০ মে খুলনা জেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মুহাম্মদ আল-আমিন উচ্ছেদ অভিযান চালান। অভিযানে আওয়ামী লীগ অফিস ছাড়া ৩০টির অধিক পাকা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান উচ্ছেদ করা হয়।
বিষয়টি সেপ্টেম্বরের প্রথম দিকে জেলা পরিষদে লিখিতভাবে জানানো হয়। জেলা পরিষদের নির্বাহী কর্মকর্তা এ ব্যাপারে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ২০২৪ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে অনুরোধ করেন। তবে এর ৫ মাস অতিবাহিত হলেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
এ বিষয়ে মধুমিতা পার্কের আহ্বায়ক সিনিয়র সাংবাদিক জিএম মিজানুর রহমান মিজান বলেন, ‘যাবতীয় নির্মানাধীন স্থাপনা উচ্ছেদ করা হলেও আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়টি এখনও অদৃশ্য কারণে রয়ে গেছে। উচ্ছেদের জন্য কর্তৃপক্ষের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করছি।’
এ বিষয়ে এ্যাড. প্রশান্ত মন্ডল বলেন, ‘২০০৫ সালে রীট হয় আর ২০০৮ সালে রায় হয়। কনটেম্পট পিটিশন ২০২২ সালে দাখিল করা হয়। রিট ও কনটেম্পট দরখাস্তকারী হিসেবে আমার দাবি অবিলম্বে হাইকোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী মধুমিতা পার্কের অবৈধ স্থাপনা অপসারণ করা হোক। না হলে কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।’
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মাহেরা নাজনীন বলেন, ‘প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে। দ্রুতই কার্যকরী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’