পঞ্চগড়
পঞ্চগড় প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৯:৫৫ পিএম
আপডেট : ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ২০:১৯ পিএম
অনশনকারী তরুণদের পানি পান করিয়ে অনশন ভাঙান জেলা প্রশাসক সাবেত আলী। প্রবা ফটো
পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালসহ চারটি উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১৬৯ চিকিৎসকের পদ রয়েছে। বিপরীতে আছেন ৪৫ জন। চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হয়ে দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন জেলার বাসিন্দারা।
চিকিৎসক সংকট দূরীকরণসহ ৯ দফা দাবিতে অনশন কর্মসূচি পালন করেছে জেলার সম্মিলিত স্বেচ্ছাসেবী ফোরাম। বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) সকালে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে পঞ্চগড়-ঢাকা মহাসড়কের পাশে অনশন কর্মসূচি শুরু করে তারা।
খবর পেয়ে দুপুর ১টায় জেলা প্রশাসক সাবেত আলী ও সিভিল সার্জন ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ছুটে আসেন। তারা অনশনকারীদের সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দেন। পরে দুপুর দেড়টার দিকে অনশনকারী তরুণদের পানি পান করিয়ে অনশন ভাঙান জেলা প্রশাসক সাবেত আলী।
অনশনকারীদের দাবি বৈষম্য দূর করে শূন্য পদগুলোতে চিকিৎসক পদায়ন করে চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করা। একই সঙ্গে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের নতুন নির্মাণ হয়ে পড়ে থাকা ২৫০ শয্যা ভবনে কার্যক্রম শুরু করা। অনশন চলাকালে বক্তব্য দেনÑ জেলার সম্মিলিত স্বেচ্ছাসেবী ফোরামের সমন্বয়ক আহসান হাবিব সরকার, ফোরামের উপ-সমন্বয়ক ওয়াসিম আকরাম, সদস্য মানিক খান, রনি মিয়াজী প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, জেলার সরকারি হাসপাতালগুলোর ১৬৯টি চিকিৎসকের পদের মধ্যে কর্মরত রয়েছেন মাত্র ৪৫ জন। জরুরি রোগী নিয়ে গেলেই তাদের রেফার করা হয়। রাত-দুপুরে রোগী নিয়ে ছুটতে হয় রংপুর, দিনাজপুর কিংবা ঢাকায়। পথেই মৃত্যু হয় অনেক রোগীর। এর বাইরে জেলার প্রান্তিক পর্যায়ের বাসিন্দা ও দরিদ্র মানুষ চিকিৎসাসেবার বাইরেই থেকে যাচ্ছে। কারণ তাদের পক্ষে অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় করে বেসরকারি হাসপাতাল বা ক্লিনিকে চিকিৎসা করানো সম্ভব নয়। তাই স্বাস্থ্য খাতে এই বৈষম্য দূর করতে ৯ দফা দাবি জানান তারা।
পরে জেলা প্রশাসক ও সিভিল সার্জনের কাছে দাবি তুলে আগামী ১৫ দিনের মধ্যে বৈষম্য দূর করে শূন্যপদগুলোতে চিকিৎসক পদায়নের দাবি জানান তারা। অন্যথায় কঠোর অনশন কর্মসূচি পালন করার হুঁশিয়ারি দেন সম্মিলিত স্বেচ্ছাসেবী ফোরামের সমন্বয়ক আহসান হাবিব সরকার।
সিভিল সার্জন ডা. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, পঞ্চগড়ে চিকিৎসক সংকট নতুন নয়। এটা দীর্ঘদিন ধরে চলে আসছে। আমি আসার পর সব সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছি। তরুণরা যে দাবি উপস্থাপন করে অনশনে বসেছে সেটা বাস্তব দাবি। অতি দ্রুত এ সমস্যা সমাধানে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে কথা বলছি। একই সঙ্গে তাদের আজকের এই অনশন কর্মসূচি ভাঙার জন্য আমরা এসেছি।
জেলা প্রশাসক সাবেত আলী বলেন, সিভিল সার্জন ও আমি মিলে এ বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়সহ গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরে একটি করে পরিপত্র পাঠিয়েছি। একই সঙ্গে স্বাস্থ্যসেবার মান উন্নত করার জন্য অবগত করা হয়েছে। আশা করছি স্বাস্থ্য খাতের সব সমস্যা দ্রুত সমাধান হবে।