আব্দুস ছালাম সফিক, সাটুরিয়া (মানিকগঞ্জ)
প্রকাশ : ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১১:৪৬ এএম
আপডেট : ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ২০:১৩ পিএম
প্রতিদিন দুধ নিয়ে বাজারে যান খামারিরা। প্রবা ফটো
সকাল সাড়ে ৮টা। বাজারের পাড় ঘেঁষে বয়ে গেছে ধলেশ্বরী নদী। গ্রামীণ মেঠোপথ। পথ ধরে হেটে আসছেন নানান পেশার মানুষ। কেউ হাতে বালতি নিয়ে, আবার কেউ মাথায় কলস নিয়ে। সব পাত্রেই দুধ। বাজারে ততক্ষণে দুধের পাইকার বড় বড় ড্রাম প্রস্তুত করে বসে আছেন খামারিদের অপেক্ষায়। বলছি মানিকগঞ্জর জেলার সাটুরিয়া উপজেলার গোপালপুর বাজাররের কথা। যে বাজারে এক ঘণ্টায় বিক্রি হয় ৮ হাজার থেকে ১০ হাজার লিটার দুধ।
এ বাজারে উপজেলার ছনকা, রাজৈর, সালুয়াকান্দি, বরাইদ, ধুলটসহ বিভিন্ন গ্রাম থেকে দুধের খামারিরা দুধ বিক্রি করতে আসেন। রাজৈর গ্রাম থেকে দুধ বিক্রি করতে আসা কামরুল ইসলাম বলেন, আমাদের ৫টি গাভীর দুধ গোপালপুর বাজারে বিক্রি করি। দুধ বিক্রির টাকা দিয়ে দানাদার খাবার কিনে গরুকে খাওয়াই।
একই এলাকার বাবুল মিয়া বলেন, ‘দুধ বাজারটির সময়কাল সকাল সাড়ে ৮টা থেকে সাড়ে ৯টা। এ সময় প্রচুর দুধ কেনাবেচা হয়। তবে আমরা সব সময় ন্যায্য দাম পাই না।’
কাকরাইদ গ্রামের ফজল হক বলেন, ‘প্রতিদিন বাজারে ২০০ থেকে ২৫০ মণ দুধ বিক্রি করা হয়। পাইকাররা দুধ সংগ্রহ করে ঢাকা, টাঙ্গাইলসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে দুধের ছানা তৈরি করে বিক্রি করে।
দুধের পাইকারি ব্যবসায়ী ছাত্তার আলী বলেন, বাজারটি মাত্র এক ঘণ্টায় শেষ হয়ে যায়। আমাদের মতো আরও অনেক পাইকার আছেন যারা এ বাজার থেকে দুধ সংগ্রহ করে ঢাকা, টাঙ্গাইলসহ বিভিন্ন এলাকায় সরবরাহ করে থাকে। দুধের মানের ওপর নির্ভর করে দাম ৫০ থেকে ৭০ টাকা হয়ে থাকে।
গোপালপুর বাজার বণিক সমিতির সভাপতি মো. আবুল হোসেন বলেন, আমাদের গোপালপুর বাজারের কাছাকাছি প্রায় ১৫টি গ্রাম থেকে খামারিরা দুধ বিক্রি করতে আসে। দুধ বাজারের স্থায়িত্বকাল হয় মাত্র ১ ঘণ্টা। এই ১ ঘণ্টার বাজারে প্রতিদিন প্রায় ৭ লাখ টাকার দুধ কেনাবেচা হয়।
সাটুরিয়া উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. ইমরান হোসেন বলেন, দুধ একটি আদর্শ খাবার। দুধ থেকে নানা রকম বাই-প্রোডাক্ট তৈরি হয়। যেমন দই, মাখন, ঘি, শিশু খাদ্য ও মিষ্টি জাতীয় খাবার। প্রান্তিক খামারিদের কথা মাথায় রেখে উপজেলায় দুধ সংগ্রহ কেন্দ্র (চিলিং সেন্টার) তৈরি করা হবে। এ বিষয়ে খামারিদের নিয়মিত পরামর্শ ও প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।