কুমিল্লা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ২১:৩৮ পিএম
আপডেট : ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ২১:৪৩ পিএম
স্কুলছাত্র মো. আতিক হত্যায় অভিযুক্তদের বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে এলাকাবাসী। প্রবা ফটো
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে প্রেমের ঘটনার জেরে মেয়েপক্ষের স্বজনদের হামলায় মো. আতিক (১৭) নামে আহত এক স্কুলছাত্র চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে। এ ঘটনার পর অভিযুক্তদের বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে এলাকাবাসী। ঘটনাস্থলে থমথমে পরিবেশ বিরাজ করছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় চৌদ্দগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ হিলাল উদ্দিন আহমেদ এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
নিহত আতিক চৌদ্দগ্রাম পৌরসভার সোনাকাটিয়া আদর্শ গ্রামের আবদুল মান্নান মিয়ার ছেলে। সে স্থানীয় চৌদ্দগ্রাম সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এবার এসএসসি পরীক্ষার্থী ছিল।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, স্কুলছাত্র আতিকের সহপাঠী মো. সজিবের সঙ্গে একই এলাকার সৌদি প্রবাসী মো. নেয়ামত উল্যাহ মেয়ে নাজনিন সুলতানা নাদিয়ার প্রেমের সূত্র ধরে গত বছরের ১৩ অক্টোবর পালিয়ে বিয়ে করেন। মেয়ে পালিয়ে যাওয়ার ঘটনাটি অপহরণের অভিযোগ এনে নাদিয়া মা নাজমা বেগম চৌদ্দগ্রাম থানায় সজিবসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। এর কয়েক দিন পর পুলিশ নাদিয়াকে উদ্ধার করে আদালতের মাধ্যমে তার পরিবারের জিম্মায় দেয়। এ ঘটনায় দীর্ঘদিন যাবত এলাকায় ক্ষোভ বিরাজ করছে।
এর জেরে সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) রাতে নাদিয়ার বাবা নেয়ামত উল্যার নেতৃত্বে ৫-৬ জন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি আতিককে সোনাকাটিয়া এলাকায় পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। পরে স্থানীয়রা তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় উদ্ধার করে চৌদ্দগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে রাতেই তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। পরে সেখান থেকে একটি প্রাইভেট হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় তাকে। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার বিকালে তার মৃত্যু হয়।
এদিকে অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের দাবিতে এলাকাবাসী বিক্ষোভ মিছিল করে নাদিয়াদের বাড়ি-ঘরে হামলার চেষ্টা চালানো হয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
নিহতের বাবা আবদুল মান্নান মিয়া বলেন, ‘প্রেমের ঘটনাকে কেন্দ্র করে নাদিয়ার বাবা নেয়ামত উল্যার নেতৃত্বে সন্ত্রাসীরা আমার ছেলেকে অন্যায়ভাবে পিটিয়ে হত্যা করেছে।’
চৌদ্দগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ হিলাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘পূর্ব বিরোধের জের ধরে সোমবার রাতে আতিক নামে এক স্কুলছাত্রকে প্রতিপক্ষের লোকজন পিটিয়ে আহত করা হয় বলে জানতে পেরেছি। চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার বিকালে ঢাকায় মারা গেছে। এই সংবাদে এলাকায় উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। ঘটনাস্থলে থানা পুলিশের অতিরিক্ত সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।’