ভূঞাপুর (টাঙ্গাইল) সংবাদদাতা
প্রকাশ : ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৫:৪৫ পিএম
আপডেট : ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৫:৪৮ পিএম
দেশের অন্যতম জাদুঘর যমুনা সেতু আঞ্চলিক জাদুঘরে সংরক্ষিত প্রাণির সংখ্যা প্রায় পাঁচ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। এটি এশিয়া মহাদেশের অন্যতম বৃহৎ জীববৈচিত্র্য সংগ্রহশালায় পরিণত হয়েছে।
টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলার যমুনা সেতুর পূর্ব পাশে অবস্থিত জাদুঘরটি ১৯৯৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। মূলত যমুনা সেতুর নির্মাণকালীন বিভিন্ন তথ্য সংরক্ষণের জন্য এটি গড়ে তোলা হলেও বর্তমানে এটি জীববৈচিত্র্য গবেষণা কেন্দ্র হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে।
প্রাণিসম্পদের পাশাপাশি এখানে রয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির গাছপালা, পাখির বাসা, ডিম, কীটপতঙ্গ, এবং নদীর বাস্তুসংস্থানের নমুনা। এতে শুধু দর্শনার্থীরাই নয়, গবেষকদের কাছেও এটি এক আকর্ষণীয় কেন্দ্র হয়ে উঠেছে।
জাদুঘরে সংরক্ষিত আছে মেছো বাঘ, চিত্রা হরিণ, বন বিড়াল, গন্ধগোকুল, নীলগাই, শকুন, মাছরাঙা, চিল, মহাশকুন, সুন্দরবনের সাদা বক, গাঙ্গেয় ডলফিন, শাপলা মাছ, দারাজ সাপ, গোখরা, গুইসাপ, হলুদ মাথার কচ্ছপ, বিভিন্ন ধরনের কীটপতঙ্গ, প্রজাপতি, মাকড়সা ও পিঁপড়াসহ অসংখ্য।
প্রতিদিন বিভিন্ন স্থান থেকে অসংখ্য দর্শনার্থী এই জাদুঘরে আসেন। তারা এখানে এসে প্রকৃতি ও প্রাণিজগত সম্পর্কে নতুন অভিজ্ঞতা অর্জন করেন।
সিরাজগঞ্জ থেকে আসা মানিক নামে এক দর্শনার্থী বলেন, ‘এখানে এসে অনেক কিছু দেখতে ও জানতে পারলাম, যা আগে কখনো দেখিনি। আমার বেশ ভালো লাগছে।’
আরেক দর্শনার্থী মো. শফিউর রহমান তালুকদার বলেন, ‘জাদুঘরটি প্রাণিজগত সম্পর্কে শেখার এক অসাধারণ জায়গা। এখানে এসে অনেক নতুন তথ্য জানতে পেরেছি।’
জাদুঘরের কিউরেটর মো. জুয়েল রানা জানান, জাদুঘরটিতে সংরক্ষিত প্রাণির সংখ্যা প্রায় পাঁচ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। আমাদের লক্ষ্য শুধু প্রাণিদের সংরক্ষণ করা নয়, তাদের সম্পর্কে সচেতনতা তৈরি করাও। শিক্ষার্থীরা এখানে এসে বাস্তব অভিজ্ঞতা লাভ করতে পারে, যা তাদের প্রকৃতিপ্রেমী হতে উদ্বুদ্ধ করবে।
তিনি আরও বলেন, প্রতিনিয়ত জাদুঘরে বিভিন্ন ধরনের নমুনা সংরক্ষিত হচ্ছে। এভাবে নমুনা সংগ্রহ বৃদ্ধি পেলেও সকলের সহযোগিতা থাকলে জাদুঘরটি বিশ্বের সেরা একটি জাদুঘরে পরিণত হবে বলে আমি আশাবাদী।
ইবরাহীম খাঁ সরকারি কলেজের প্রাণিবিজ্ঞান বিভাগের গবেষক হোসনেআরা পপি বলেন, ‘এ ধরনের উদ্যোগ ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে প্রকৃতি ও প্রাণিসম্পদ সংরক্ষণে উদ্বুদ্ধ করবে। এটি শুধু একটি জাদুঘর নয় বরং একটি জীবন্ত গবেষণাগার।’