ভৈরব (কিশোরগঞ্জ) প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ০০:৩০ এএম
আপডেট : ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১০:৫০ এএম
কিশোরগঞ্জে কুকুরের কামড়ে নারী-শিশুসহ অন্তত ৪০ জন আহত হয়েছে। এর মধ্যে দুজনকে গুরুতর অবস্থায় ঢাকার মহাখালী হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি)
বিকাল ৩টা থেকে রাত ৮টার মধ্যে তারা কুকুর দ্বারা আক্রান্ত হয়। আহতদের মধ্যে ৩৩ জন উপজেলা স্বাস্থ্য
কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছে।
এসব তথ্য নিশ্চিত
করেছেন ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা বুলবুল আহমেদ। এ ছাড়া অন্য আহতরা
বিভিন্ন প্রাইভেট হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন বলে জানা গেছে।
এ ঘটনায় আহতরা হলো পৌর শহরের চণ্ডীবের এলাকার আবদুর রহমান (১১), আসমা (৪৮) জান্নাত (৫ বছর) সাহেরা (৮০), ইয়ামিন (১২), ঈশান (১৪), আমলাপাড়ার হুসাইন (৬ বছর), ভৈরবপুরের শাহার বেগম (৫০), রামশঙ্করপুরের নারায়ণ চন্দ্র (৪৫), মাজেদা (৪২), দীপ (১১), ফরিহা ইসলাম (৭ বছর), মৌসুমি (৯ বছর), আবদুর রহমান (৬ বছর), তানজিনা (১০), রফিয়া (২৭), রাতুল (২০), মারুফা (১৭), রাজন (১৭), ইতি (২৫), আলেয়া (৪ বছর), গাফফার (সাড়ে ৪ বছর), রায় (১২), গোছামারা গ্রামের সুইটি (১৬), সখিনা (৩০), রাবিয়া (১৩), চানপুর গ্রামের ফরিদা বেগম (৫৫), রসুলপুর গ্রামের বাচ্চু মিয়া (৫০), শিমুলকান্দি গ্রামের আয়েশা (৩৫), জামালপুর এলাকার আদিল (৩ বছর), রিয়াদ (১০) ও শিবপুর গ্রামের মুনতাহা (২৭)।
এ বিষয়ে স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ৩ ফেব্রুয়ারি বিকাল ৩টা থেকে শহরের কালীপুরের রামশঙ্কপুর থেকে কুকুর কামড়ানো শুরু করে। পর্যায়ক্রমে শহরের চণ্ডীবের, গাছতলাঘাট এলাকা,
ভৈরবপুর ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এলাকার সামনে পথচারী ও স্থানীয় বাসিন্দা
শিশু, বৃদ্ধাসহ বেশ কয়েকজনকে রাত পর্যন্ত কামড় দিয়ে আহত করে।
প্রত্যক্ষদর্শী
শফিক মিয়া বলেন, ‘রাস্তায় দাঁড়িয়ে ছিলাম। হঠাৎ একটি কালো কুকুর যাকে পাচ্ছে তাকেই কামড়
দিচ্ছে দেখে কোনোরকম দৌড়ে প্রাণে বেঁচে যাই।’
আহত পথচারী বাচ্চু মিয়া বলেন, ‘আমার নিজ বাড়ি রসুলপুর যাচ্ছিলাম, হঠাৎ একটি কুকুর আমাকেসহ বেশ কয়েকজনকে কামড় দেয়। আমি দ্রুত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে এসে দেখি অনেকেই চিকিৎসা নিচ্ছে।’
এ বিষয়ে রামশঙ্করপুরের আহত রাজন মিয়া বলেন, ‘আমি বাড়ির সামনে রাস্তায় দাঁড়িয়ে ছিলাম। হঠাৎ একটি কুকুর এসে আমাকে কামড় দেয়। আমি পড়ে গেলে দ্বিতীয় দফায় আবার কামড়ায়। আমার সঙ্গে আরও ১০-১৫ জনকে কামড়িয়ে আহত করে। আমরা কুকুরটিকে আটকানোর অনেক চেষ্টা করেছি। কুকুরটি আমার এলাকায় থাকত।’
ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মকর্তা ডা. বুলবুল আহমেদ বলেন, ‘আজ (সোমবার) বিকাল থেকে রাত পর্যন্ত পাগলা কুকুরের কামড়ে ৩৩ জন হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছে। এর মধ্যে দুজনকে ঢাকা সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। কুকুরটি শনাক্ত করতে পারলে বোঝা যাবে হাইড্রোফোবিয়া রোগে আক্রান্ত হয়েছে কি না। কুকুরটি যদি জলাতঙ্ক রোগে আক্রান্ত হয় দ্রুত ভ্যাকসিন দিতে হবে।’
তিনি আরও বলেন,
‘১৫ দিন আগে দুই দিনে বেশ কয়েকজনকে পাগলা কুকুরে কামড়িয়েছে। তারা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে
চিকিৎসা নিয়েছিল।’
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার শবনম শারমিন বলেন, ‘বিষয়টি দুঃখজনক। আমি খোঁজখবর নিচ্ছি। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ যদি কুকুরটি পাগল হওয়ার কারণ নিশ্চিত করে তারপর কুকুরটি দ্রুত শনাক্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’