× ই-পেপার প্রচ্ছদ সর্বশেষ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি শিক্ষা ধর্ম ফিচার ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

দীঘিনালা

এক বছরেও চালু হয়নি তিন কমিউনিটি ক্লিনিক

প্রবীর সুমন, দীঘিনালা (খাগড়াছড়ি)

প্রকাশ : ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৬:২২ পিএম

আপডেট : ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৬:২৯ পিএম

এক বছরেও চালু হয়নি তিন কমিউনিটি ক্লিনিক

দীঘিনালা উপজেলায় স্বাস্থ্যসেবার চরম নাজুক অবস্থা। স্বাস্থ্যসেবা না পেয়ে সাধারণ মানুষ ক্ষুব্ধ। অথচ প্রায় এক বছর আগে বিপুল অর্থ ব্যয়ে উপজেলায় তিনটি কমিউনিটি ক্লিনিক ভবনের নির্মাণকাজ শেষ করা হয়। কিন্তু আজ পর্যন্ত তা চালু করা হয়নি। দ্রুত কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো চালুর দাবি জানিয়েছে স্থানীয়রা।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ক্লিনিকগুলো নির্মাণ করা হয়েছে উপজেলা সদর থেকে ২৬ কিলোমিটার দূরের গ্রাম ক্ষেত্রপুরে, ২০ কিলোমিটার দূরের গ্রাম পনছড়ি নেত্রজয় কার্বারিপাড়ায় এবং ৭ কিলোমিটার দূরে উত্তর ছাদকছড়ায়। স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে গত ২০২২-২৩ অর্থবছরে প্রায় ৯০ লাখ টাকা ব্যয়ে কমিউনিটি ক্লিনিক তিনটির ভবন নির্মাণ করা হয়।

নির্মাণ শেষে উত্তর ছাদকছড়া, পনছড়ি নেত্রজয় কার্বারিপাড়া ও ক্ষেত্রপুর কমিউনিটি ক্লিনিক উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগকে হস্তান্তর করা হয়। বিস্ময়কর ব্যাপার হলোÑ হস্তান্তরের পর এগুলো কাগজে-কলমে চালু দেখানো হলেও বাস্তবে চালু করা হয়নি। এতে কোনো স্বাস্থ্যকর্মীর দেখাও পাওয়া যায়নি। এ ঘটনায় স্থানীয়রা দুর্নীতি ও অনিয়মের গন্ধ পেয়েছে। 

সরেজমিনে কথা হয় ক্ষেত্রপুর, পনছড়ি নেত্রজয় কার্বারিপাড়া ও উত্তর ছাদকছড়া এলাকাবাসীর সঙ্গে। তারা বলে, ক্লিনিক ভবন নির্মাণের পর এক বছর ধরে জনমানবশূন্য হয়ে পড়ে আছে। এক দিনের জন্যও ডাক্তার আসেনি। কেউ ক্লিনিকের তালা খোলেনি। স্থানীয়রা বলে, আমাদের এলাকা খুবই দুর্গম। রাস্তাঘাট ভালো নয়। এলাকার বেশিরভাগ মানুষ দিনমজুর ও কৃষক। উপজেলা সদরে গিয়ে আমাদের চিকিৎসা নেওয়া অসম্ভব হয়ে পড়ে। 

খোঁজ নিয়ে আরও জানা যায়, উপজেলার লক্ষাধিক মানুষের স্বাস্থ্যসেবার জন্য রয়েছে একটি হাসপাতাল, তিনটি সাব-সেন্টার, ২০টি কমিউনিটি ক্লিনিক। তবে এতে জনবল সংকট, পরীক্ষা-নিরীক্ষার যন্ত্রপাতির সংকট রয়েছে। সেই সঙ্গে জরাজীর্ণ ভবনসহ নানা প্রতিকূল অবস্থা মোকাবিলা করে স্বাস্থ্য চালু রাখতে হচ্ছে। 

এ নিয়ে উপজেলা হাসপাতালের পরিসংখ্যানবিদ মিলন স্মৃতি চাকমা বলেন, ‘হাসপাতালে সিনিয়র-জুনিয়র মিলে ৯ জন চিকিৎসকের পদ থাকলেও আছে মাত্র পাঁচজন, একজন গাইনি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের মধ্যে তিনি ডেপুটেশনে রামগড় উপজেলা হাসপাতালে আছেন। স্বাস্থ্য সহকারীর ৩৫টি পদ থাকলেও আছে মাত্র ৯ জন। তা ছাড়া আল্টাসনোগ্রাফি, ইসিজি করার ব্যবস্থা নেই। রয়েছে অবকাঠামোগত সমস্যা। উত্তর ছাদকছড়াপাড়া কার্বারি আনন্দ কুমার চাকমা বলেন, ‘ক্লিনিকটি চালু না হওয়ায় আমাদের এলাকার গরিব মানুষ চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। দ্রুত চালু করার জন্য আমরা সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছি।’ 

পনছড়ি নেত্রজয় কার্বারিপাড়ার কার্বারি পুতুল ময় চাকমা বলেন, ‘উপজেলা সদর থেকে আমাদের এলাকার দূরত্ব প্রায় ১৫-১৬ কিলোমিটার। প্রায় ১৫০ পরিবারের বসতি। এখান থেকে উপজেলা সদরে ঠিকমতো গাড়ি চলাচল করে না। গরিব মানুষ টাকার অভাবে সব সময় উপজেলা সদরে গিয়ে চিকিৎসা নিতে পারে না। হাসপাতাল তৈরির এক বছর পরও কেন কমিউনিটি ক্লিনিক চালু হচ্ছে নাÑ ভেবে আমরা অবাক হচ্ছি। আরও অবাক হচ্ছিÑ কাগজে-কলমে এটি চালুর কথা শুনে। এটি চালু না হওয়ায় এলাকার সাধারণ মানুষের খুবই অসুবিধা হচ্ছে। তারা স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।’ 

ক্ষেত্রপুরপাড়ার কার্বারি অমূল্য চাকমা বলেন, ‘আমাদের পাড়ায় ১২০ পরিবারের বসতি। ক্লিনিক নির্মাণ হলেও চালু করা হয়নি। ক্লিনিকটি দ্রুত চালু করা হবে বলে আশা করি।’ এ বিষয়ে উপজেলা হাসপাতালের পরিসংখ্যানবিদ মিলন স্মৃতি চাকমা বলেন, ‘নতুন কমিউনিটি ক্লিনিক তিনটি চালু আছে। স্বাস্থ্যকর্মীরা নিয়মিত স্বাস্থ্যসেবা দিচ্ছেন।’ 

এ বিষয়ে স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর খাগড়াছড়ির উপসহকারী প্রকৌশলী হেলাল উদ্দিন বলেন, ‘২০২২-২৩ অর্থবছরে প্রায় ৯০ লাখ টাকা ব্যয়ে উত্তর ছাদকছড়া, ক্ষেত্রপুর ও পনছড়ি নেত্রজয় কার্বারি কমিউনিটি ক্লিনিক নির্মাণ করে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে উপজেলা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়।’ 

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. তনয় তালুকদার বলেন, ‘স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর কর্তৃক নতুন ৩টি ক্লিনিক আমাদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। কিন্তু ঢাকা থেকে পর্যাপ্ত ওষুধ না পাওয়ায় চালু করা সম্ভব হচ্ছে না। দ্রুত চালু করার জন্য আমরা চেষ্টা করছি।’ 

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : মোরছালীন বাবলা

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা