× ই-পেপার প্রচ্ছদ সর্বশেষ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি শিক্ষা ধর্ম ফিচার ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

গ্রামবাংলা

দিগন্তজোড়া হলুদের সমারোহ

রহিম শুভ, ঠাকুরগাঁও

প্রকাশ : ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১২:২৫ পিএম

ঠাকুরগাঁও সদরসহ বিভিন্ন উপজেলায় সরিষার ফুল ফোটায় দিগন্তজোড়া এখন হলুদের সমারোহ। প্রবা ফটো

ঠাকুরগাঁও সদরসহ বিভিন্ন উপজেলায় সরিষার ফুল ফোটায় দিগন্তজোড়া এখন হলুদের সমারোহ। প্রবা ফটো

শীতের শিশিরভেজা সকালে ঘন কুয়াশার চাদরে মোড়ানো মাঠজুড়ে চোখে পড়ে সরিষা ফুলের হলুদ সমারোহ। সরিষা ফুলের নয়নাভিরাম দৃশ্য পাল্টে দিয়েছে প্রকৃতির রঙ। ঠাকুরগাঁও জেলায় এ মৌসুমে ব্যাপক সরিষার চাষ করা হয়েছে। মৌমাছির গুনগুন শব্দে ফুলের রেণু থেকে মধু সংগ্রহ আর প্রজাপতির এক ফুল থেকে আরেক ফুলে ওড়ে বেড়ানোর এক অপরূপ প্রাকৃতিক দৃশ্য; যা সত্যিই মনোমুগ্ধকর।

ঠাকুরগাঁওয়ের গ্রাম অঞ্চলগুলোয় সরিষা গুরুত্বপূর্ণ রবিশস্য। শীতকালে সরিষাক্ষেতে হলুদ রঙের সরিষার ফুল ফোটে, ফলে পুরো গ্রামাঞ্চলের ফসলের মাঠগুলো যেন স্বপ্নের মতো সুন্দর হয়ে ওঠে। এই ফুলের মিষ্টি সুবাস সবকিছুকেই মনোমুগ্ধ করে তোলার পাশাপাশি প্রাকৃতিক সৌন্দর্যকেও বৃদ্ধি করে তোলে। তেমনি সরিষা ফুলের সমারোহে পাল্টে গেছে ঠাকুরগাঁওয়ের বিভিন্ন ফসলের মাঠের দৃশ্যপট।

সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় মাঠজুড়ে এখন শুধু হলুদের সমারোহ। বিশেষ করে সড়কের ধারে সরিষাক্ষেতগুলো প্রাকৃতিক এমন দৃশ্যের সঙ্গে মোবাইলে ছবি তুলতেও দেখা যায় অনেককে।

সচরাচর আমন ধান কাটার পর প্রায় ৩ মাস খালি থাকে কৃষিজমি। এ সময়ের মধ্যেই আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার আশায় ও সরিষা চাষে জমির উর্বতা বৃদ্ধি পাওয়ায় বোরো ধানও ভালো হয়। তাই জমি ফেলে না রেখে সরিষা চাষ করেন এ জেলার কৃষকরা। এতে বিঘাপ্রতি খরচ হয় ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা। ফলন ভালো এবং দাম বেশি হলে বিঘায় ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকার সরিষা বিক্রয় হয়।

কথা হয় সদর উপজেলার কিসমতপুর গ্রামের কৃষক নয়ন আলীর সঙ্গে। তিনি বলেন, এক একর জমিতে সরিষা চাষ করেছি। ফলন বেশ ভালো হয়েছে। জমি এমনি ফেলে না রেখে যা লাভ হবে তাতে খুশি। সরিষায় খরচ তেমন হয় না।

আখানগড় ইউনিয়নের কৃষক জিয়া হক বলেন, জমি ফেলে রেখে লাভ নাই। ৩ মাসে সরিষা হয়ে যায়। এক বিঘা জমিতে সরিষার আবাদ করেছি। বর্তমানে সরিষার ক্ষেতের অবস্থা ও ফুল দেখে তো মনে হয় ফলন ভালো হবে। খরচ হয়েছে সব মিলে ১১ হাজার টাকা। আশা করি ২৫ হাজার টাকার মতো সরিষা বিক্রি করতে পারব।

বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার বড়বাড়ি ইউনিয়নের কৃষক নাসির উদ্দিন বলেন, ৭০ থেকে ৭৫ দিনে সরিষা কাটতে পারি। এই ফসল আবাদ করতে বেশি দিন সময় লাগে না। অন্যান্য ফসলের তুলনায় সরিষা চাষ করতেও খরচ কম হয়। তা ছাড়াও সরিষা গাছের পাতা জমিতে পরে সেগুলো সার হয়ে যায়। এবং মাটি উর্বর করে। তাই সরিষা তোলার পর অন্য ফসলও ভালো হয়।

সদর গড়েয়া ইউনিয়নের কৃষক চৈতন পাল বলেন, আমন ধানের পর এমনিতেই জমিগুলো পড়ে থাকত। কয়েক বছর ধরে জমি ফেলে না রেখে সরিষা আবাদ করছি। এতে বাড়তি ফসল হিসেবে সরিষা করে লাভবান হচ্ছি। অল্প সময়ের এই ফসলে মোটামুটি ভালো ‍লাভবান হওয়া যায়। 

গড়েয়া ইউনিয়নের আরেক কৃষক আব্দুল জাহিদ বলেন, গত বছর এক একর জমিতে সরিষা চাষ করে। তিন গুণ লাভ হয়েছে। তাই এবার তিন একর জমিতে চাষ করছি। ফলন বেশ ভালো দেখা যাচ্ছে। আশা করি একরপ্রতি ২২-২৫ মণ সরিষা পাব। এতে দ্বিগুণ লাভ হবে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক সিরাজুল ইসলাম বলেন, গত বছর আলুর দাম ভালো পাওয়ায় এ বছর কৃষকরা আলু চাষে বেশি ঝুঁকেছেন। তাই গত বছরের তুলনায় এ বছর সরিষা আবাদের লক্ষ্যমাত্রা একটু কম অর্জিত হয়েছে। জেলায় বিশেষ করে বারি সরিষা ১৪, ১৫, ১৭সহ নতুনভাবে বারি ২০ জাতের সরিষা চাষ হয়েছে। গত বছর ১৯ হাজার ৭৮০ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষ হয়েছিল। এবার ২০ হাজার হেক্টর জমিতে সরিষা চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও অর্জিত হয়েছে ১৬ হাজার ২২৫ হেক্টর। আর উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ২৫ হাজার মেট্রিক টন। এবার ঠাকুরগাঁও জেলায় ১৬ হাজার কৃষককে সরিষার বীজ ও সার বিনামূল্যে বিতরণ করা হয়েছে।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : মোরছালীন বাবলা

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা