কচুয়া (চাঁদপুর) প্রতিবেদক
প্রকাশ : ৩১ জানুয়ারি ২০২৫ ২০:৫০ পিএম
আপডেট : ৩১ জানুয়ারি ২০২৫ ২১:০১ পিএম
চাঁদপুরের কচুয়ায় বিদ্যালয়ের আঙিনায় খেলতে গিয়ে দগ্ধ হয়ে শিশুশিক্ষার্থী সামিয়ার (৫) মৃত্যুতে ৮ শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বিভাগীয় কর্মকর্তার কাছে সুপারিশ করা হয়েছে।
বিষয়টি দুর্ঘটনা হলেও শিশুটিকে রক্ষায় শিক্ষকদের অবহেলা থাকার প্রমাণ পেয়েছে তদন্ত কমিটি। গত বুধবার বিদ্যালয়টি পরিদর্শন করে কমিটি। এরপর ১০ শিক্ষকের মধ্যে ৮ জনকেই সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
গত ২১ জানুয়ারি সকালে কচুয়ায় ৪১নং তেতৈয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের আঙিনায় খেলছিল শিশুশিক্ষার্থী সামিয়া। এক পর্যায়ে আঙিনায় আগুনে পোড়ানো ময়লার স্তূপে পড়ে দগ্ধ হয় সে। ৫ দিন পর ২৬ জানুয়ারি হাসপাতালে মারা যায় শিশুটি। এ ঘটনায় জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস ৫ সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করে। গত বুধবার তদন্ত কমিটি সরেজমিনে তদন্ত করে। তাদের সুপারিশের ভিত্তিতে বিদ্যালয়ের ১০ শিক্ষকের মধ্যে ৮ জনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
সামিয়ার চাচা মাহমুদুল হাসান বলেন, সামিয়ার শরীরে আগুন লাগার পর তার শরীরে কোনো শিক্ষক পানি দেননি বা আগুন নেভানোর চেষ্টা করেননি। তারা শরীরের জামা কাটার জন্য কাঁচি আনতে বাড়িতে গিয়েছিলেন। এতে সে আরও বেশি দগ্ধ হয়। এমনকি তার বাড়িতেও খবর দেওয়া হয়নি। তার পরিবারকে না জানিয়ে ওই অবস্থায় সামিয়াকে কচুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে পাঠানো হয়।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ফাতেমা মেহের ইয়াসমিন বলেন, আমি তদন্ত কমিটির প্রধান হিসেবে কমিটির অন্য সদস্যদের নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে সবার লিখিত বক্তব্য নিয়েছি। আমরা প্রাথমিকভাবে পেয়েছি, এটি একটি দুর্ঘটনা। তবে এতে শিক্ষকদের অবহেলা ছিল। এ কারণে তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী আট শিক্ষককে দায়িত্বে অবহেলার দায়ে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। এ ছাড়া প্রধান শিক্ষক মাসুক হাসানকে বরখাস্তের জন্য বিভাগীয় কর্মকর্তার কাছে সুপারিশ করা হয়েছে। তাদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলাসহ আরও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। তা ছাড়া সুমন মজুমদার নামের এক কর্মচারীর চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিল করা হয়েছে।
বহিষ্কৃত ৮ শিক্ষক হলেনÑ ফারুক হোসেন, জসিম উদ্দিন, সাহিদা আক্তার, সুমি আক্তার, রোকেয়া আক্তার, কাজী শাকিরীন, ফয়েজুন নেছা ও ফাতেমা আক্তার। একজন শিক্ষক ওই দিন ছুটিতে ছিলেন।