× ই-পেপার প্রচ্ছদ সর্বশেষ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি শিক্ষা ধর্ম ফিচার ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

সরেজমিন শেরপুর

বালু ও পাথরখেকো চক্রের থাবায় নদী পাহাড় বন

শাহ্ পরান

প্রকাশ : ৩১ জানুয়ারি ২০২৫ ০৯:০৬ এএম

বালু ও পাথরখেকো চক্রের থাবায় নদী পাহাড় বন

তুলসীমালা চাল আর নদী-পাহাড়সমৃদ্ধ জেলা শেরপুর। দেশের উত্তরের এই জনপদকে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে সমৃদ্ধ করেছে তিনটি নদীও। সে সুবাদে এখানে রয়েছে পর্যটন খাত সম্প্রসারণের অপার সম্ভাবনাও। কিন্তু বালু ও পাথরখেকোদের ড্রেজার, এক্সকাভেটর আর কোদালের আঘাতে সেসবই পড়েছে হুমকির মুখে। নষ্ট হচ্ছে এলাকার পরিবেশ-প্রতিবেশ ও জীববৈচিত্র্য।

শেরপুরের পাহাড় আর নদী ধ্বংসের শুরুটা পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়েই। ৫ আগস্ট-পরবর্তী সময়ে এসে ব্যক্তির পরিবর্তন হলেও এই অপকর্ম চলছে আগের মতোই। ক্ষেত্রবিশেষে এই অপতৎপরতা আরও বেড়েছে।

জেলার ঝিনাইগাতী, নালিতাবাড়ী ও শ্রীবর্দীতে নদীতে ড্রেজার আর পাহাড়ে কোদালের কোপ পড়ছে। রেহাই পাচ্ছে না ফসলি জমিও। এভাবে বালুদস্যু আর অবৈধ দখলদারদের কারণে হুমকিতে পড়েছে জেলার জীববৈচিত্র্য। ঘটছে পরিবেশদূষণ। পাল্টে যাচ্ছে নদীর সীমানা। বাড়ছে নদীভাঙন আর বন্যার ঝুঁকি।

আগের সিন্ডিকেটের ধারাবাহিকতায় ৫ আগস্টের পর পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে অসাধু বালুখেকোদের লালসার বলি হচ্ছে ঝিানাইগাতী উপজেলার রাংটিয়া, সন্ধ্যাকুড়া, হালচাটী, শালচূড়া, দরবেশতলা, গজনীসহ উপজেলার অন্যান্য অঞ্চলের আবাদি জমি ও বনাঞ্চল।

গারো পাহাড়ের বনে থাকা হরিণ, বানর, শূকর ও বনমোরগ এখন বিলুপ্তপ্রায়। ইতঃপূর্বে প্রশাসনের চাপে এসব বালু ও পাথরবোঝাই ট্রাক শুধু রাতে চলাচল করত। আগস্টের পর থেকে প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে সকাল থেকে মাঝরাত পর্যন্ত উপজেলা শহরের প্রধান রাস্তা দিয়ে প্রকাশ্যে চলছে এই অবৈধ ব্যবসা।

শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার পাহাড়ি নদী ভোগাইয়ের নয়াবিল, হাতিপাগার, মণ্ডলিয়াপাড়া, তন্তর, হাতিপাগার, কালাকুমা, নাকুগাঁও ও চেল্লাখালী এলাকায়ও চলছে অবৈধ বালু উত্তোলনের বিশাল কর্মযজ্ঞ।

সবশেষ ২৭ জানুয়ারি নালিতাবাড়ী উপজেলা প্রশাসন এসব এলাকাসহ গোবিন্দনগর ছয়আনীপাড়া ও গোবিন্দনগর ঘোনাপাড়ায় অভিযান চালিয়ে প্রায় ৪৩টি শ্যালোচালিত ড্রেজার মেশিন, ৫০টি টাওয়ার ও অসংখ্য পাইপ জব্দ করে। 

এ ছাড়া শেরপুরের সীমান্তবর্তী উপজেলা শ্রীবর্দীর কর্ণঝোড়া ও বালিঝুড়ি এলাকা থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের অভিযোগ রয়েছে। 

ভোগান্তিতে স্থানীয়রা

স্থানীয়রা জানান, বর্তমানে বালুখেকোদের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছে ঝিনাইগাতীর গারো পাহাড়, সন্ধ্যাকুড়া, মহারশি ও সোমেশ্বরী নদী। নামমাত্র অভিযান পরিচালনা করলেও এসব বালুভর্তি ট্রাক ও ট্রলির কারণে রাস্তায় বের হওয়া ‍কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাতাসে উড়ে আসা বালুতে চোখ ও শ্বাসযন্ত্রের ক্ষতি ছাড়াও অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনা ঘটে চলেছে। এসব থেকে বাঁচতে সাধারণ মানুষসহ স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীদের প্রধান সড়ক দিয়ে চলাচল করতেও শঙ্কার মধ্যে থাকতে হচ্ছে। এ ছাড়া অনিয়ন্ত্রিত শব্দদূষণে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে মানুষের জীবন।

স্থানীয় জাহিদুল হক মনির বলেন, ‘আমাদের উপজেলায় প্রতিনিয়ত অবৈধ বালু উত্তোলন হচ্ছে। ফলে রাস্তাঘাট ও পাহাড় এখন ধ্বংসের মুখে। দিনে প্রশাসনের তৎপরতায় কিছুটা কমে এলেও রাতের আঁধারে চক্রগুলো সক্রিয় হয়ে ওঠে।

হুমকিতে নদীর সীমানা

সরেজমিনে দেখা যায়, অবৈধভাবে নির্বিচারে বালু তোলায় বাড়ছে নদীভাঙন। বিলীন হচ্ছে নদীর পাশের বনের অংশ। অন্যদিকে ঝুঁকির মুখে পড়েছে পাহাড় থেকে নেমে আসা নদীতীরবর্তী তিন শতাধিক পরিবারের আবাস। ঝিনাইগাতীতে মহারশি নদী থেকে ড্রেজার ও শ্যালোমেশিন দিয়ে যথেচ্ছভাবে বালু উত্তোলন করায় পরিবর্তিত হচ্ছে নদীর গতিপথ। বর্ষায় মাঝারি মাত্রার বর্ষণেই নদীর বিভিন্ন পয়েন্টে বাঁধ ভেঙে আশপাশের বাড়িঘর ও আবাদি জমির ফসল নষ্ট হচ্ছে। গেল বর্ষায় স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হয় নদীর পার্শ্ববর্তী এলাকাসহ উপজেলার দাড়িকালিনগর, পাগলারমুখ, কান্দুলী, ধানশাইল, হাতীবান্ধাসহ আশপাশের ১০ থেকে ১২টি গ্রামের মানুষ।

স্থানীয় আতিকুর রহমান বলেন, ‘মহারশি নদী থেকে যথেচ্ছভাবে বালু উত্তোলনের কারণে প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে নদীর বাঁধ ভেঙে যাচ্ছে। এতে ব্যাপকসংখ্যক মানুষ ক্ষতির শিকার হচ্ছে। প্রশাসনের উচিত সাঁড়াশি অভিযান চালিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধের পাশাপাশি সংশ্লিষ্টদের আইনের আওতায় আনা।’

নদী গবেষক ও সংগঠক তুহিন ওয়াদুদ বলেন, ‘নদী ও পাহাড় থেকে বালু আর পাথর উত্তোলনের ক্ষেত্রে বিজ্ঞানসম্মত কোনো পদ্ধতি মানা হচ্ছে না। যে যার মতো করে যথেচ্ছভাবে এই অপতৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। এর ফলে নদী তার গতিপথ পরিবর্তন করছে। দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতির শিকার হচ্ছে এলাকার জীববৈচিত্র্য। পাল্টে যাচ্ছে মানচিত্র। নানামুখী সমস্যায় পড়ছে স্থানীয় জনসাধারণ।’ 

তিনি বলেন, ‘নদীভাঙন ও নদী মারা যাওয়ার সঙ্গে অবৈধভাবে নির্বিচারে বালু উত্তোলন সরাসরি জড়িত। স্থানীয় প্রশাসনকে এ ব্যাপারে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে।’

বালু উত্তোলনে আইন

সর্বশেষ বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা (সংশোধন) বিল-২০২৩-এ বিধান রাখা হয়, ‘ব্যক্তিমালিকানাধীন কোনো জমি থেকে বালু বা মাটি তোলা যাবে না, যদি তা উর্বর কৃষিজমি হয় বা বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে হয় বা কৃষিজমির উর্বর উপরিভাগের মাটি হলে বা পরিবেশ-প্রতিবেশ বা জীববৈচিত্র্যের ক্ষতিসাধিত হয় বা ড্রেজারের মাধ্যমে বা যদি অন্য কোনো কৌশলী প্রক্রিয়ায় বালু বা মাটি উত্তোলন করা হয়, যাতে এই জমিসহ পার্শ্ববর্তী অন্য জমির ক্ষতি, চ্যুতি বা ধসের উদ্ভব হয়। তবে কোনো ব্যক্তি বসতবাড়ি নির্মাণ বা নিজের প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অনুমতি নিয়ে নিজের মালিকানাধীন জমি থেকে সীমিত পরিসরে বালু বা মাটি তুলতে পারবেন।’

সংসদে আইন পাস হওয়ার পরও তার তোয়াক্কা না করে প্রতিদিন বিপুল পরিমাণ বালু আর পাথর ট্রাকে করে চলে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। রিভার অ্যান্ড ডেল্টা রিসার্চ সেন্টারের (আরডিআরসি) চেয়ারম্যান মোহাম্মদ এজাজ বলেন, যেকোনো জায়গার বালু তুলতে গেলে বালুমহাল ও পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র লাগে। আমার জানামতে, এখানে কোনো বৈধ বালুমহাল নেই। বালু উত্তোলনের আগে হাইকোর্ট ও পরিবেশ অধিদপ্তরের সার্ভে করাটা গুরুত্বপূর্ণ। সরকারি অনুমতি নিলে কোথা থেকে নিয়েছে, সেটা খতিয়ে দেখতে হবে, নয়তো অচিরেই এটা বন্ধ করতে হবে।

ঝিনাইগাতীতে অবৈধভাবে উত্তোলন করা বালু উপজেলার বাজারসংলগ্ন গার্লস স্কুল, তামাগাঁও ঈদগাহ মাঠসংলগ্ন নদীর পাড়ে, খৈলকুড়া, ডাকাবর, বাকাকুড়া রোডে স্তূপ করে সাজিয়ে রাখা হয়। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি বলেন, পাহাড়ে বালু তোলার কাজে নিয়োজিত সবাই দিনমজুর শ্রমিক। তারা পারিশ্রমিকের ভিত্তিতে কাজ করেন। তবে এসব বালু-পাথর বিকিকিনিতে জড়িতদের বড় অংশই বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত। এদের মধ্যে রয়েছেন বাকাকুড়ার মোল্লা শাকিল, শেখ জামাল, কমল, নলকুড়ার হাবিবুর রহমান, সোলায়মান কবীর প্রমুখ।

সদর উপজেলার ব্যবসায়ী মেহেদী হাসান মামুন এ ব্যাপারে বলেন, ‘মাটি ও বালু পরিবহনের জন্য আমার ব্যক্তিগত কিছু ভেকু ও মাহিন্দ্রা রয়েছে। তবে অবৈধভাবে বালু ও পাথর তোলার খবর জানার পর আমি আর গাড়ি ভাড়া দিইনি।

স্থানীয় মোশাররফ হোসেন জানান, কিছুদিন বালুর ব্যবসা করলেও পরিবেশের ক্ষতি হচ্ছে জেনে ১৫ থেকে ২০ দিন আগে তিনি এই ব্যবসা বাদ দিয়েছেন। অভিযোগ রয়েছে, সংশ্লিষ্টরা স্থানীয় প্রশাসনকে ম্যানেজ করে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন ও বিক্রির কাজটি করে যাচ্ছেন। আর বালু উত্তোলনকারীরা প্রভাবশালী হওয়ায় স্থানীয় পর্যায়ে ভয়ে কেউ কিছু বলার সাহস পান না।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আশরাফুল আলম বলেন, ‘ঝিনাইগাতীর কিছু বালুমহাল ইজারাভুক্ত। এর বাইরে অবৈধভাবে কোথাও থেকে বালু উত্তোলন করা হলে প্রশাসন ব্যবস্থা নিচ্ছে। নিয়মিত মোবাইল কোর্টের অভিযান পরিচালনা করে বিক্রয়কৃত অর্থ সরাসরি রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা করা হচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘এ পর্যন্ত আমরা অবৈধভাবে বালু উত্তোলনে ব্যবহৃত ৬০ থেকে ৭০টি মেশিন ধ্বংস করেছি। সর্বশেষ গারোকোনাতে অভিযানের মাধ্যমে একজনকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।’ 

সর্বশেষ গত ২৭ জানুয়ারি সন্ধ্যায় উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) অনিন্দিতা রাণী ভৌমিকের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালত বাজারে অভিযান চালায়। এ সময় অবৈধ বালুসহ একটি গাড়ি আটক করে বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইনের ১৫(১) ধারায় চারজনকে জরিমানা ও ১০ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়। 

ঝিনাইগাতীর রাংটিয়া বন বিভাগের কর্মকর্তা মো. করিম মিয়া বলেন, ‘বিভিন্ন স্থান থেকে অবৈধভাবে বালু তোলা হচ্ছে। গজনী পাহাড়ের ঝিরিসহ আমাদের এরিয়ার বাইরে থেকে বালু এবং পাথর পেলে সেগুলোও আমরা জব্দ করছি। দুদিন আগেও পাঁচ হাজার ফিট বালুভর্তি একটি ট্রলি জব্দ করে মামলা দেওয়া হয়।’ তিনি বলেন, ‘প্রতিদিন সন্ধ্যার পর থেকে বিভিন্ন সড়ক দিয়ে ছোট-বড় ভ্যান ও ট্রলিতে করে অবৈধভাবে উত্তোলন করা বালু পাচার হচ্ছে। অথচ সব বিট মিলিয়ে আমাদের সদস্য মাত্র ১০ জন। এত কম জনবল দিয়ে বালু-পাথরের এই বিশাল চক্রকে আটকানো কঠিন।’

যেভাবে বালু ও পাথরের অবৈধ কারবার

অবৈধভাবে বালু ও পাথর উত্তোলন থেকে বাজারজাতকরণের কাজটি চার ধাপে করা হয়। প্রথম ধাপে নদী ও ঝিরি থেকে বালু তোলার কাজটি করেন শ্রমিকরা। তারা প্রতিদিনের পারিশ্রমিকের ভিত্তিতে কাজটি করেন। দ্বিতীয় ধাপে উত্তোলন করা বালু ও পাথর বিক্রি এবং হাতবদলের মাধ্যমে চলে আসে পাহাড়ের সর্দারদের কাছে। তৃতীয় ধাপে সর্দারের মাধ্যমে উপজেলা ও জেলা পর্যায়ে বালু বিক্রি করা হয়। সবশেষ ধাপে বড় ব্যবসায়ীরা এসব বালু ও পাথর কিনে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পৌঁছে দেন।

শেরপুরের জেলা প্রশাসক তরফদার মাহমুদুর রহমান বলেন, ‘ঝিনাইগাতীতে কিছু অঞ্চল ইজারা দেওয়া থাকলেও শ্রীবর্দীতে কোনো বালু বা পাথর মহাল ইজারা দেওয়া নেই। ঝিনাইগাতীতে মোট ৯টি বালুমহাল থেকে বালু তোলা হচ্ছে। আর অবৈধভাবে বালু ও পাথর উত্তোলন বন্ধে সর্বশেষ চার মাসে তুলনামূলক বেশি অভিযান পরিচালিত হয়েছে।

পর্যটনের ক্ষতি

শেরপুর বন বিভাগের তিনটি রেঞ্জের অধীনে বনভূমি রয়েছে প্রায় ২১ হাজার একর। রাংটিয়া, মধুটিলা, বালিজুড়িÑ এই তিন রেঞ্জের বেশিরভাগ জুড়েই রয়েছে অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য। প্রতিবছর শীত মৌসুমে সীমান্তবর্তী গজনী অবকাশ ও মধুটিলা ইকোপার্কে থাকে পর্যটকের ভিড়। সাম্প্রতিক সময়ে বন ও পাহাড় কেটে এসব প্রাকৃতিক সৌন্দর্য নষ্ট করে ফেলা হয়েছে। এজন্য দর্শনার্থী-পর্যটকের আগমন কমে গেছে আশঙ্কাজনক হারে। এতে স্থানীয় পর্যটন খাতে বিরূপ প্রভাব পড়েছে।

গণমাধ্যমকর্মী মুরাদ হোসেন বলেন, ‘আগে গজনী ও মধুটিলা ইকোপার্কে পর্যটকের আনাগোনা বেশি ছিল। কিন্তু অধিক পরিমাণে গাছ কেটে পরিবেশ ধ্বংস করা এবং বালু উত্তোলনে পাহাড়ধসের কারণে প্রতিনিয়ত পর্যটক কমছে। বালু ও পাথরবাহী যানবাহনের চলাচলে পরিবেশদূষণের কারণেও পর্যটকরা এখানে আসতে আগ্রহ হারাচ্ছেন।’

পরিবেশ অধিদপ্তর ঘুমিয়ে

শেরপুরের তিনটি উপজেলার নদী ও পাহাড়ে অবৈধভাবে নির্বিচারে বালু ও পাথর উত্তোলনের মচ্ছব চললেও নির্বিকার জেলা পরিবেশ অধিদপ্তর। এসব অপতৎপরতা রোধে তাদের পক্ষ থেকে কোনো ধরনের কর্মতৎপরতা চোখে পড়ে না।

প্রতিদিনের বাংলাদেশ-এর পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হলে শেরপুর জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক নূরে কুতুব আলম সিদ্দিক বলেন, ‘এ ব্যাপারে আমাদের কাছে কোনো তথ্য নেই। অভিযোগ এলে আমরা তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ নেব।’

শেরপুর জজকোর্টের অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ আলামিন বলেন, ‘অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের মাধ্যমে ঝিনাইগাতীসহ জেলার সীমান্তবর্তী এলাকাজুড়ে বনাঞ্চলসহ প্রাকৃতিক ভারসাম্য নষ্ট করা হচ্ছে। এর প্রভাবে নদীভাঙনের সঙ্গে বন্যার প্রকোপও বেড়েছে। অবৈধভাবে বালু ও পাথর উত্তোলন এবং এই কারবারের সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় এনে যথাযথ শাস্তির ব্যবস্থা করা উচিত।’

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : মোরছালীন বাবলা

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা