× ই-পেপার প্রচ্ছদ সর্বশেষ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি শিক্ষা ধর্ম ফিচার ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

প্রকল্প পাস হয়নি ছয় মাসেও, মিলছে না জন্মনিয়ন্ত্রণ সামগ্রী

রাজু আহমেদ

প্রকাশ : ২৪ জানুয়ারি ২০২৫ ১৩:২৭ পিএম

আপডেট : ২৪ জানুয়ারি ২০২৫ ১৬:৪৯ পিএম

পরিবার পরিকল্পনা বিভাগ রাজশাহী। প্রবা ফটো

পরিবার পরিকল্পনা বিভাগ রাজশাহী। প্রবা ফটো

প্রান্তিক পর্যায়ে জন্মহার নিয়ন্ত্রণ ও মাতৃমৃত্যু হার রোধে সরকারিভাবে দম্পতি ও প্রসূতি মায়েদের মাঝে ওষুধ ও মেডিকেল সামগ্রী সরবরাহ করা হয়ে থাকে পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের মাধ্যমে। তবে জুনে ফোর্থ সেক্টর প্রোগ্রাম শেষ হওয়ার ৬ মাস পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত ফিফথ সেক্টর প্রোগ্রাম অনুমোদন না হওয়ায় পরিবার-পরিকল্পনা বিভাগ এসব উপকরণ কিনতে না পরার কথা জানিয়েছে। এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে রাতারাতি কনডম, ইমারজেন্সি পিলসহ জন্মনিরোধক ওষুধ ও সরঞ্জামের মূল্যবৃদ্ধির অভিযোগ উঠেছে ওষুধ কোম্পনিগুলোর বিরুদ্ধে। এভাবে চলতে থাকলে জন্মহার বৃদ্ধির আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা। বাড়তে পারে প্রান্তিক পর্যায়ে মাতৃমৃত্যু হারও।

এদিকে ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র গুলোতে এফডব্লিউএ পদের স্বাস্থ্যকর্মীদের রেজিস্ট্রি খাতা বা ট্যাব না থাকায় রাজশাহীর প্রান্তিকের দম্পতি ও প্রসূতি মায়েদের তথ্য সংগ্রহেও ভাটা পড়েছে। এ ছাড়া ইউনিয়ন পর্যায়ের স্বাস্থ্য ও পরিবার-কল্যাণ কেন্দ্রগুলোতে নির্ধারিত পদের বিপরীতে কাঙ্ক্ষিত স্বাস্থ্যকর্মীর ঘাটতি প্রকট আকার ধারণ করেছে। বাধ্য হয়ে ফার্মাসিস্ট দিয়ে রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তবে ফার্মাসিস্টদের কাছে চিকিৎসা নিতে প্রান্তিকের নারী রোগীদের অনাগ্রহ দেখা গেছে।

রাজশাহী পরিবার-পরিকল্পনা বিভাগের দেওয়া তথ্যমতে, রাজশাহী বিভাগের নাটোর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও রাজশাহী জেলায় প্রতি মাসে গড়ে ৫ লাখ পিস কনডম, ৪ লাখ ৮৭ হাজার পিল (সুখি), ৩০০ ডিডিএস, ৫ হাজার মিজোপ্রোস্টলের চাহিদা রয়েছে। এর মধ্যে তিন মাস অন্তর দেওয়া জন্মনিরোধক ইনজেকশনের সিরিঞ্জ, ডেলিভারি কিটসহ ডিডিএস ও মিজোপ্রোস্টলের সরবরাহ ডিসেম্বর মাস থেকে বন্ধ। চাহিদার বিপরীতে কনডম মিলছে দুই লাখ এবং পিল মিলছে দুই লাখ। জন্মনিয়ন্ত্রণ, নিরাপদ প্রজননসহ মা ও শিশুর চিকিৎসা এবং সাধারণ রোগের চিকিৎসার জন্য ৫৮৬টি ওষুধ ও মেডিকেল সামগ্রী সরবরাহ করা হয় সরকারিভাবে। যার মধ্যে থেকে সম্প্রতি ৬০টি ওষুধ ও সামগ্রী সরবরাহ করা হচ্ছিল। তাও ডিসেম্বর মাস থেকে পর্যায়ক্রমে একটার পর একটা বন্ধ হতে শুরু করেছে।

রাজশাহী নগরীর স্টার মেডিকেল হলের কর্মী মো. কাউসার বলেন, ওষুধের দাম বাড়তেই আছে। আমরা রাতে এক দামে বিক্রি করছি সকালে এসে দেখছি ওই ওষুধ বা মেডিকেল পণ্যের দাম বেড়ে যাচ্ছে।

নিশান ফার্মেসির কর্মী ওসাম আলী বলেন, কনডম, পিলের দাম বেড়েছে প্যাকেট প্রতি ১০ থেকে ১৫ টাকা। এ ছাড়া ইমারজেন্সি পিলের দাম বেড়েছে ২০ থেকে ২৫ টাকা।

রাজশাহী বিভাগের পরিবার-পরিকল্পনা দপ্তরের আঞ্চলিক পণ্যাগারের সরবরাহ কর্মকর্তা সৌরভ কুমার কুণ্ডু বলেন, রাজশাহী, নাটোর ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার ২১টি উপজেলায় জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতিগুলোর যে পরিমাণ চাহিদা সে অনুপাতে আমরা সরবরাহ দিতে পারছি না। সেইসঙ্গে ঘাটতি রয়েছে নিরাপদ প্রজনন সামগ্রী এবং স্বাস্থ্যকর্মীর। ওষুধ ও মেডিকেল সামগ্রী যা আসছে আমরা তা রেশনিং করে ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার-কল্যাাণ কেন্দ্রসহ সংশ্লিষ্ট স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলোতে বিতরণ করছি। দ্রুতই সরবরাহ স্বাভাবিক হবে বলে আশা করছি।

রাজশাহী জেলার পরিবার-পরিকল্পনা বিভাগের উপ পরিচালক আনোয়ারুল আজিম বলেন, সরকারি লক্ষ্যমাত্রা অনুসারে টোটাল ফারটিলিটি রেট (টিএফআর) বা মোট উর্বরতা হার ২ থাকতে হবে। অর্থাৎ পরিবারপ্রতি দুটি সন্তান। বর্তমানে রাজশাহী বিভাগে টিএফআর ১.৯। তবে আমাদের মধ্যে আশঙ্কা আছে জন্মহার বৃদ্ধির।

তিনি বলেন, সরবরাহ না থাকায় ডিডিএস কিট, কনডম, ওরাল পিলসহ জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতিগুলো চাহিদার তুলনায় অপ্রতুল। ঘাটতি মেটাতে আমরা দম্পতিদেরকে বাইরে থেকে কিনে নিতে বলছি বা ভিন্ন পদ্ধতি নিতে বলছি। জন্মনিয়ন্ত্রণের উপকরণ সরকারিভাবে সরবরাহ পেতে আরও ৬ থেকে ৭ মাস লাগতে পারে। সরকারি ক্রয়ের একটি পদ্ধতি আছে; এ কারণে সময়টা বেশি লাগছে। আমরা চাই যেসব গ্রাহক আছেন তারা যেন আমাদের থেকে বিচ্ছিন্ন না হন এবং পদ্ধতির আওতার বাইরে যেন না যান। এটা হলে টিএফআর বৃদ্ধি পাবে। এই টিএফআর ধরে রাখার জন্য আমরা আপ্রাণ চেষ্টা করছি।

পরিবার-পরিকল্পনা অধিদপ্তরের উপকরণ ও সরবরাহ ইউনিটের পরিচালক মারজিয়া হক বলেন, গত জুন মাসে পরিবার-পরিকল্পনা বিভাগের ফোর্থ সেক্টর প্রোগ্রাম শেষ হয়েছে। জুলাই মাসে ফিফথ সেক্টর প্রোগ্রাম চালু হওয়ার কথা ছিল, তবে একনেকে এই ক্রয়সংক্রান্ত প্রোগ্রাম অনুমোদন না হওয়ায় তা চালু করা সম্ভব হয়নি। ফলে উপকরণ কেনা যায়নি। ক্রয় কমিটির অনুমোদন এবং অর্থ সরবরাহ নিশ্চিত হলে টেন্ডারের মাধ্যমে উপকরণ ক্রয়ের পর তা আঞ্চলিক পণ্যাগারের মাধ্যমে প্রান্তিক পর্যায়ে পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হবে।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : মোরছালীন বাবলা

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা