× ই-পেপার প্রচ্ছদ সর্বশেষ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি শিক্ষা ধর্ম ফিচার ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

ভোলা

মেঘনায় তীব্র ভাঙন, হুমকিতে জনবসতি

জুয়েল সাহা বিকাশ

প্রকাশ : ২৪ জানুয়ারি ২০২৫ ১৩:১৩ পিএম

আপডেট : ২৪ জানুয়ারি ২০২৫ ১৩:৩৪ পিএম

ভোলা সদর উপজেলা শিবপুর ইউনিয়নের ভোলার খাল মৎস ঘাট সংলগ্ন এলাকায় মেঘনা নদীর ভাঙনে সেতুটি থেকে মাটি সরে যেকোনো সময় বিলীন হওয়ার পথে। বুধবার তোলা। 
প্রবা ফটো

ভোলা সদর উপজেলা শিবপুর ইউনিয়নের ভোলার খাল মৎস ঘাট সংলগ্ন এলাকায় মেঘনা নদীর ভাঙনে সেতুটি থেকে মাটি সরে যেকোনো সময় বিলীন হওয়ার পথে। বুধবার তোলা। প্রবা ফটো

ভোলায় শীত মৌসুমেও মেঘনা নদীতে তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে। এতে হুমকির মুখে পড়েছে শত শত বসতবাড়ি, কৃষিজমি, বাজারসহ সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন স্থাপনা। ভাঙনের তীব্রতা দেখা দিলেও কার্যকর কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায় ক্ষুব্ধ নদীতীরবর্তী বাসিন্দারা। দ্রুত স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ করে ভাঙন বন্ধের দাবি তাদের। 

সরেজমিনে জানা যায়, চলতি শীত মৌসুমেও উত্তাল মেঘনার তীব্র স্রোতে ভাঙছে ভোলা সদর উপজেলার শিবপুর ইউনিয়নের কালীকীর্তি থেকে ভোলার খাল মৎস্য ঘাট পর্যন্ত প্রায় দুই কিলোমিটার এলাকা। গত কয়েকদিন ধরে রূদ্ররূপে মেঘনা নদী। একে একে বিলীন হচ্ছে নদীতীর সংলগ্ন বাসিন্দাদের বসতঘর, ফসলি জমি ও দোকানপাট। এ ছাড়া ভাঙনের হুমকিতে রয়েছে স্লুইসগেট বাজার ও ভোলার খাল মৎস্য ঘাটটি। 

শিবপুর ইউনিয়নের ভোলার খাল সংলগ্ন বেড়িবাঁধের স্থানীয় বাসিন্দা মশুরা বেগম জানান, তারা তিনবার মেঘনার ভাঙনের শিকার হয়ে কয়েক বছর ধরে ভোলার খাল এলাকার বেড়িবাঁধের পাশে সরকারি জমিতে বসবাস করছেন। অর্থের অভাবে জমিজমা কিনতে পারেননি আজও। বর্তমানে ভোলার খাল এলাকায়ও মেঘনার ভাঙন শুরু হয়েছে। তাদের বসতঘর ভেঙে গেলে কোথায় গিয়ে আশ্রয় নেবেন সেই চিন্তায় বিভোর তিনি। 

আরেক বাসিন্দা নাজমা বেগম জানান, তিনিও তিনবার নদীভাঙনের শিকার হয়ে এখানে সরকারি জমিতে এসে বসতঘর তুলে বসবাস করছেন। এখন যদি তারা ভাঙনের শিকার হন, তাহলে খোলা আকাশের নিচে থাকতে হবে তাদের। কারণ তার স্বামী অন্যের নৌকায় মাছ শিকার করে কোনো রকম সংসার চালান। স্বামীও অসুস্থ। টাকার অভাবে জমিজমাও কিনতে পারেননি তার স্বামী। 

কৃষক আব্দুর রহিম জানান, তাদের যে জমি ছিল সেখানে কৃষিকাজ করে সংসার চালাতেন তিনি। কিন্তু মেঘনার ভাঙনের ফলে তার অনেক জমি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। বর্তমানে পাঁচ গণ্ডা জমি আছে। সেই জমিতে বিভিন্ন ধরনের ফসল চাষ করে কোনোরকম সংসার চালাচ্ছেন। বর্তমানে নদী ভাঙতে ভাঙতে তার জমির কাছে চলে আসছে। এখন যদি তার ওই জমিও ভেঙে যায়, তাহলে তার আয়-রোজগার বন্ধ হয়ে যাবে। আর স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে রাস্তায় দাঁড়াতে হবে তার। 

শিবপুরের ভোলার খাল সংলগ্ন স্লুইসগেট বাজারের ব্যবসায়ী মো. বাবুল জানান, তিনি আগে শিবপুর ইউনিয়নের আনন্দবাজার এলাকায় ব্যবসা করতেন। নদীভাঙনের পর বেশ কয়েক বছর আগে তিনি স্লুইসগেট বাজারে এসে আবারও ছোটখাটো মুদি ব্যবসা করছেন। এখন সেখানেও নদীভাঙন শুরু হয়েছে। ব্যবসার আয় দিয়ে কোনোরকম সংসার চালান তিনি। এই বাজার ভেঙে গেলে তিনি নতুন করে অন্য কোথাও আবার দোকান ভাড়া নিয়ে ব্যবসা করার মতো সামর্থ্য নেই তার। 

স্থানীয় বাসিন্দা মো. আল আমিন ও মো. হারুন ব্যপারী বলেন, বেশ কয়েক বছর ধরে নদী ভাঙছে। আর যখনই নদীভাঙন শুরু হয়, তখন পানি উন্নয়ন বোর্ড জিওব্যাগ ফেলে। কিন্তু বেশ কিছুদিন পর পানির স্রোতে ওই ব্যাগ চলে যায়। আজ পর্যন্ত স্থায়ী কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। আমরা এবার সিসি ব্লক দ্বারা স্থায়ীভাবে বাঁধ নির্মাণের দাবি জানাচ্ছি পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাছে। 

শিবপুর ইউনিয়নের স্থায়ী বাসিন্দা নূর হোসেন ও ইউসুফ হোসেন সুমন বলেন, বেশ কয়েকদিন ধরে তাদের ইউনিয়নের কালিকির্তি থেকে ভোলার খাল মৎস্য ঘাট সংলগ্ন এলাকা মেঘনার ভাঙন তীব্র দেখা দিয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত পানি উন্নয়ন বোর্ড কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি। আমরা এলাকার শত শত লোকজন ভোলার খাল এলাকায় ভাঙন বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপের জন্য মানববন্ধন করেছি। যদি বর্ষার মৌসুমের আগে পানি উন্নয়ন বোর্ড ভাঙন রোধ করতে ব্যবস্থা না নেয়, তাহলে আমরা স্থানীয় বাসিন্দারা মিলে পানি উন্নয়ন বোর্ড ঘেরাও করব। 

ভোলা পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো-১)-এর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জিয়া উদ্দীন আরিফ বলেন, ভোলার শিবপুরের দেড় কিলোমিটার এলাকায় নদীভাঙনের দেখা দিয়েছে। এর মধ্যে ৫০০ মিটার এলাকায় অতি ভাঙন দেখা দিয়েছে। আপাতত পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণ খাতের আওতায় প্রায় ৮০ লাখ টাকা বরাদ্দ পাওয়া গেছ, যার টেন্ডার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। এতে প্রায় ১৬ হাজার জিওব্যাগ ফেলে ৬০ মিটার এলাকা ভাঙন রোধ করা যাবে। বাকি এলাকার জন্যও বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ভবিষ্যতে উন্নয়ন প্রকল্পের মাধ্যমে সিসি ব্লক দ্বারা স্থায়ী বাঁধ নির্মাণেরও আশ্বাস দেন তিনি।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : মোরছালীন বাবলা

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা