মধ্যাঞ্চলীয় অফিস
প্রকাশ : ২১ জানুয়ারি ২০২৫ ২০:৩৩ পিএম
আপডেট : ২১ জানুয়ারি ২০২৫ ২১:২২ পিএম
প্রবা ফটো
টানা তিনদিন ধরে পানির সংকটে পড়ে কিশোরগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতাল। ‘হাসপাতালে দুই দিন ধরে পানি সরবরাহ বন্ধ’ শিরোনামে গত সোমবার (২০ জানুয়ারি) দৈনিক প্রতিদিনের বাংলাদেশে সংবাদ প্রকাশের পর পানি সরবরাহ করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এতে হাসপাতালের রোগী ও তাদের স্বজনরা দুর্ভোগ থেকে রক্ষা পান।
মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) দুপুরে সরেজমিনে হাসপাতাল ঘুরে ও রোগীদের সঙ্গে কথা বলে এই তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে।
সোমবার রাতে নতুন মোটর লাগানোর পর পানির এই সংকট কেটেছে। পানি না
থাকায় গত তিনদিন চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয় রোগী ও তাদের স্বজনদের।
উল্লিখিত শিরোনামে সংবাদ প্রকাশের পর টনক নড়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের।
পরে সিভিল সার্জন ডা. সাইফুল ইসলাম কিশোরগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সহায়তা
নিয়ে ৮ হাজার ৬০০ লিটার পানি সরবরাহ করেন। ফলে হাসপাতালের রোগী ও তাদের স্বজনরা দুর্ভোগ
থেকে মুক্তি পান।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ, রোগী এবং তাদের স্বজনরা কিশোরগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস
ও সিভিল ডিফেন্সকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।
জানা যায়, কিশোরগঞ্জ জেলার ১৩টি উপজেলার অন্যতম চিকিৎসাকেন্দ্র কিশোরগঞ্জ
২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতাল। প্রতিদিন জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রায় ১ হাজার ৫০০
রোগী বহির্বিভাগে ও আন্তঃবিভাগে চিকিৎসা নিয়ে থাকে। এরমধ্যে প্রতিদিন গড়ে ১ হাজার ২০০
জন বহির্বিভাগে এবং প্রায় সাড়ে ৩০০ রোগী আন্তঃবিভাগে ভর্তি থেকে হাসপাতালের বিভিন্ন
ওয়ার্ডে অবস্থান করে চিকিৎসা নিয়ে থাকেন।
রোগী এবং তাদের স্বজনরা জানিয়েছেন, এখন তারা পর্যাপ্ত
পানি পাচ্ছেন। তাদের পানি নিয়ে আর দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে না। পানির মোটর নষ্ট হয়ে যাওয়ায়
হাসপাতালটিতে গত শনিবার সকাল থেকে শৌচাগারসহ অন্যান্য জায়গায় ব্যবহারের পানি সরবরাহ
বন্ধ হয়ে যায়। এতে পানি ব্যবহারের অভাবে শৌচাগার থেকে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ে হাসপাতালে।
টানা দুইদিন বিকল হয়ে যাওয়া মোটরটি সচল করার চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হয় কর্তৃপক্ষ। এরমধ্যে
ফায়ার সার্ভিস ও জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগের মাধ্যমে পানি সরবরাহের চেষ্টা করা হয়।
কিন্তু তাতে প্রয়োজন মেটেনি। অবশেষে নতুন মোটর লাগানোর পর পানির সংকট কেটেছে।
হাসপাতালের স্বাস্থ্যকর্মীরা বলেন, ‘গত তিনদিন
পানি সরবরাহ বন্ধ থাকায় নিচতলায় মসজিদের পাম্প থেকে পানি নিয়ে কাজ করতে হয়েছে। পর্যাপ্ত
পানি ব্যবহার করা সম্ভব হয় নাই। হাসপাতালের মেঝে পরিষ্কার এবং রোগীদের বিছানার চাদর
ও অন্যান্য কাপড় পরিষ্কার করা কষ্ট হয়েছে। বহির্বিভাগের চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা প্রয়োজনে
পানি ব্যবহার করতে পারে নাই। হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স, অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মীদেরও
দুর্ভোগ পড়তে হয়েছে। এখন আমরা পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পাচ্ছি। আমাদের আর পানি নিয়ে
দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে না।’
কিশোরগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের (ভারপ্রাপ্ত) সিনিয়র স্টেশন
অফিসার আবুজর গিফারি বলেন, ‘ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবগত করলে
তারা হাসপাতালে পানি দিতে অনুমতি দেয়। পরে আমরা দুই গাড়ি পানি সরবরাহ করি।’
কিশোরগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের (ভারপ্রাপ্ত) তত্ত্বাবধায়ক ডা. নূর মোহাম্মদ শামসুল আলম জানান, ‘হাসপাতালে দুই দিন ধরে পানি সরবরাহ বন্ধ’ শিরোনামে গত সোমবার (২০ জানুয়ারি) দৈনিক প্রতিদিনের বাংলাদেশে সংবাদ প্রকাশের নিউজটি দেখার পর দ্রুত পানির নতুন মোটর লাগানো চিন্তা করি। তবে আমরা আমাদের অবস্থান থেকে সমস্যা সমাধানে সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি। সোমবার রাতে একটি নতুন মোটর লাগানোর পর পানি সরবরাহ স্বাভাবিক হয়েছে। এখন রোগীরা পানি পাচ্ছেন। পানি নিয়ে আর দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে না রোগীদের।’