চকরিয়া (কক্সবাজার) প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২১ জানুয়ারি ২০২৫ ১৫:৩২ পিএম
আপডেট : ২১ জানুয়ারি ২০২৫ ১৬:৪১ পিএম
চকরিয়া উপজেলা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত। ছবি : সংগৃহীত
কক্সবাজারের চকরিয়ার কদ্দাচড়া এলাকায় গরু ব্যবসায়ীর বাড়িতে লুটপাটের ঘটনায় আদালতে মামলা হয়েছে। ওই গরু ব্যবসায়ীর স্ত্রী মুর্শিদা বেগম সোমবার (২০ জানুয়ারি) চকরিয়া উপজেলা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ১৬ জন সন্ত্রাসীর নাম উল্লেখ করে নালিশি মামলা করেছেন।
বিচারক আনোয়ারুল কবির মামলাটি আমলে নিয়ে এ ব্যাপারে তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন দাখিল করতে কক্সবাজারের সিআইডি পুলিশের ওসিকে নির্দেশ দিয়েছেন।
আসামিরা হলেন- বেলাল উদ্দিন, কামাল উদ্দিন, আবদুল মালেক, রিয়াজ উদ্দিন, মোহাম্মদ শিফাত, নুরুচ্ছফা, হেলাল উদ্দিন, মোহাম্মদ শাকিব, ফরিদুল আলম, মোহাম্মদ কাইছার, নুরুল হক, আবদুল জলিল, মোহাম্মদ বাপ্পি, মারুফুল ইসলাম, মোহাদ্দেস ও হেলাল।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাদির আইনজীবী ও চকরিয়া উপজেলা অ্যাডভোকেট অ্যাসোসিয়েশন এর সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মিফতাহ উদ্দিন আহমদ।
গরু ব্যবসায়ী নাছির উদ্দিন চকরিয়া উপজেলার পুর্ববড় ভেওলা ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের কদ্দাচড়া এলাকার বাসিন্দা।
মামলার এজাহারে মুর্শিদা বেগম বলেন, ‘আমার স্বামী নাছির উদ্দিন একজন গরু ব্যবসায়ী। ঘটনার দিন (১৭ জানুয়ারি) দুপুর আড়াইটার দিকে অভিযুক্ত সন্ত্রাসীরা পূর্ব পরিকল্পিতভাবে অস্ত্রসহ দলবদ্ধ হয়ে গেট ভেঙে আমার বাড়িতে ঢুকে হামলা করে। এ অবস্থায় বাড়িতে থাকা আমার বড় ভাই আবদুল গাফফার ও আমার স্বামী নাছির উদ্দিন তাদেরকে বাঁধা দেওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় সন্ত্রাসীরা ধারালো কিরিচ দিয়ে কুপিয়ে ও বন্দুকের বাট দিয়ে পিটিয়ে আমার ভাই এবং আমার স্বামীকে জখম করে। এক পর্যায়ে সন্ত্রাসীরা অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে আলমারিতে রক্ষিত নগদ ২০ লাখ টাকা, ৫ ভরি স্বর্ণালংকার ও ছোট-বড় মিলিয়ে পালিত ১৬টি গরু-মহিষ লুট করে নিয়ে যায়।’
এজাহারে আরও বলা হয়, ‘হামলার শুরুতে জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯ এ ফোন দিই। তখন চকরিয়া থানা পুলিশের একটি টিম আমার বাড়িতে পৌঁছে। ওই সময় সন্ত্রাসীরা আমার বাড়িতে লুটতরাজ চালালেও পুলিশ নীরব ছিল। এ সুযোগে সন্ত্রাসীরা আরও বেপরোয়া হয়ে উঠে। ঘটনার পর পুলিশ ও সন্ত্রাসীরা চলে যায়। এ অবস্থায় আহত আমার ভাই ও আমার স্বামীকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় চকরিয়া উপজেলা সরকারি হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়। তবে শারীরিক অবস্থা অবনতি হওয়ায় চিকিৎসক আবদুল গাফফারকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ও নাছির উদ্দিনকে কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে স্থানান্তর করেন।
এ বিষয়ে সাহারবিল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নবী হোছাইন চৌধুরী বলেন, ‘ওইদিন মূলত সন্ত্রাসীরা আমাকে হত্যার উদ্দেশে আমার খোঁজে গিয়ে আমার বোন মুর্শিদা বেগমের বাড়িতে হামলা চালিয়ে লুটতরাজ করেছে। আমার ভাই ও ভগ্নিপতিকে কুপিয়ে জখম করেছে। ওইদিন বিকালে আমার বোনের বাড়িতে ডাকাতি করার পর একই ডাকাতচক্র সন্ধ্যার দিকে সাহারবিলের কোরালখালী এলাকায় পারভেজ উদ্দিনের পশু খামারে ডাকাতি করে। এ সময় ডাকাতরা খামার থেকে প্রায় ১৫ লাখ টাকা দামের ৬টি মহিষ লুট করে নিয়ে গেছে। এই ঘটনায় শনিবার (১৮ জানুয়ারি) সাহারবিল ইউনিয়নের কোরালখালী গ্রামের খামার মালিক পারভেজের স্ত্রী সেলিনা আক্তার থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন।’
অভিযোগে সাহারবিল ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কোরালখালী গ্রামের বেলাল, কামাল, আবদু মালেক বাবু, নুরুচ্ছফা, রিয়াজ, সিফাত, হেলাল, কাইছার, নুরুল হক, আব্দুল জলিল, পূর্ব বড় ভেওলা ইউনিয়নের কদ্দাছড়া নয়াপাড়ার ফরিদ, সাকিব, পইল্লা পাড়ার মারুফুল ও বাপ্পিসহ অজ্ঞাত আরও ৮ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।
সেলিনা আক্তার বলেছেন, ‘আমার স্বামীর পশু খামারে লুটপাটের ঘটনায় থানায় অভিযোগ করার পরও পুলিশ এখনও আইনি কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। এ অবস্থায় থানায় অভিযোগ করে আমরা পরিবার নিয়ে চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।’