কুড়িগ্রাম প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৬ জানুয়ারি ২০২৫ ২১:৪৭ পিএম
আপডেট : ১৬ জানুয়ারি ২০২৫ ২১:৪৯ পিএম
জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সমন্বয়ক সারজিস আলম বলেছেন, আমরা সীমান্তে আর কোনো লাশ দেখতে চাই না। বাংলাদেশের যত নাগরিককে সীমান্তে লাশ করা হয়েছে তার বিচার আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালে করতে হবে।
বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) সকালে কুড়িগ্রাম শহরের কলেজ মোড়ে ‘মার্চ ফর ফেলানী’ কর্মসূচির শুরুতে দেওয়া বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
সীমান্তে হত্যাকাণ্ডের বিচার এবং হত্যা বন্ধের দাবিতে ‘মার্চ ফর ফেলানী’ কর্মসূচি যৌথভাবে পালন করে জাতীয় নাগরিক কমিটি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কুড়িগ্রাম জেলা শাখা। কুড়িগ্রাম শহর থেকে যাত্রা করে জেলার নাগেশ্বরী উপজেলার রামখানা ইউনিয়নের দীঘির পাড় এলাকায় দুপুরে সমাবেশে মিলিত হয় পদযাত্রাটি। এরপর সীমান্ত হত্যাকাণ্ডের শিকার কুড়িগ্রামের কিশোরী ফেলানীর বাড়িতে যান নেতারা।
‘মার্চ ফর ফেলানী’ কর্মসূচি থেকে সীমান্ত হত্যা বন্ধের দাবি জানিয়ে সারজিস বলেন, আর যদি আমার কোনো ভাই বা আমার কোনো বোন আমাদের ওই সীমান্তে আমাদের কাঁটাতারে লাশ ঝুলে থাকে তাহলে কাঁটাতারকে লক্ষ্য করে আজকের মার্চ ফর ফেলানীর মতো লংমার্চ করা হবে। আর যদি পরবর্তীতে আমাদের সেই মার্চ কাঁটাতারকে উদ্দেশ্য করে হয় তাহলে আমাদের লাখো কাঁটাতার ভেদ করে যত দূর দৃষ্টি যায় তত দূর এগিয়ে যাবে।
তিনি আরও বলেন, আমরা স্পষ্ট করে পৃথিবীর প্রত্যেকটি দেশকে একটি কথাই বলতে চাই, এই যে সীমান্ত হত্যা, তারকাঁটা দেওয়ার নামে জোর করে বাধা দেওয়ার জন্য যে প্রয়াস তা রুখে দেওয়ার জন্য নতুন করে যে অভ্যুত্থান হয়েছে এই অভ্যুত্থানের স্ফুলিঙ্গ সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে দেওয়া হবে।
বিভিন্ন রাষ্ট্রের উদ্দেশে সারজিস আলম বলেন, ছাত্র-জনতা আন্দোলনের মাধ্যমে যে নতুন বাংলাদেশ দিয়েছে সেই ছাত্র-জনতা নতজানু পররাষ্ট্রনীতি মেনে নেবে না। আগামীতে বাংলাদেশে যারাই ক্ষমতায় আসুক না কেন তারা যদি ক্ষমতা আঁকড়ে ধরার জন্য কোনো দেশের দালাল হোন তাহলে তাদের পরিণতি খুনি হাসিনার মতো হবে।
বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের ওপর ভারতের হস্তক্ষেপের অভিযোগ তুলে সারজিস বলেন, আমাদের পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্র বিগত ৫৩ বছর ধরে একটি গোষ্ঠীকে ক্ষমতার চেয়ারে বসিয়ে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বকে যেভাবে কুক্ষিগত করে রেখেছিল, বাংলাদেশের ছাত্র-জনতা ঐক্যবদ্ধভাবে ২০২৪ সালে তার মোক্ষম জবাব দিয়েছে।
লংমার্চের শুরুতে ফেলানী হত্যাসহ সীমান্তে সকল নাগরিক হত্যার বিচার, সীমান্তে প্রাণঘাতী অস্ত্র বন্ধ, শহীদ ফেলানীর নামে কুড়িগ্রাম কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক ভবনের নামকরণ, নতজানু পররাষ্ট্রনীতি বাতিল করে সাম্যের ভিত্তিতে পররাষ্ট্রনীতি গ্রহণ ও কুড়িগ্রামের চরের জীবনজীবিক উন্নয়নে নদী সংস্কারের ৫ দফা দাবি জানান সারজিস আলম।
লংমার্চে আরও উপস্থিত ছিলেন, জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসির উদ্দিন পাটোয়ারী, যুগ্ম আহ্বায়ক ড. আতিক মুজাহিদ, সদস্য সচিব আরিফ সোহেল, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দপ্তর সম্পাদক জাহিদ আহসান, সমন্বয়ক রকিব মাসুদসহ অন্যান্য কেন্দ্রীয় নেতা। এ ছাড়াও লংমার্চে ফেলানীর বাবা নুর ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।