× ই-পেপার প্রচ্ছদ সর্বশেষ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি শিক্ষা ধর্ম ফিচার ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

কাউন্সিলর টিপু হত্যা

গুলি করেন চরমপন্থি শহীদের ভাতিজা পাপ্পু, বাস্তবায়নে ঋতু

কক্সবাজার অফিস

প্রকাশ : ১৫ জানুয়ারি ২০২৫ ২২:১৯ পিএম

গুলি করেন চরমপন্থি শহীদের ভাতিজা পাপ্পু, বাস্তবায়নে ঋতু

কক্সবাজারে পরিকল্পিতভাবে এনে গুলি করে হত্য করা হয়েছিল খুলনার সাবেক কাউন্সিলর গোলাম রব্বানী টিপুকে। গত ৯ জানুয়ারি রাতে কক্সবাজার সমুদ্রসৈকত সংলগ্ন হোটেল সীগালের সামনে রাস্তার ফুটপাতে টিপুকে গুলি করে হত্যা করে শেখ শাহরিয়ার ইসলাম পাপ্পু নামের খুলনার যুবক। এই পাপ্পু খুলনার শীর্ষ সন্ত্রাসী ও চরমপন্থি নেতা শহিদুল ইসলাম ওরফে হুজি শহীদের ভাতিজা। হুজি শহীদকে ২০১৫ সালের অক্টোবরে দৌলতপুর খান এ সবুর রোডে ইসলামী ব্যাংকের সামনে গুলি করে হত্যা করা হয়। আর সে হত্যা মামলার আসামি গোলাম রব্বানী টিপু।

হুজি শহীদ হত্যার প্রতিশোধসহ স্থানীয় দ্বন্দ্বের জেরে টিপুকে হত্যার পরিকল্পনা করা হয়েছিল। পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করেছিলেন টিপুর সঙ্গে থাকা ঋতু নামের নারী। হত্যার সময় সহযোগীর ভূমিকায় ছিলেন গোলাম রসুল নামের খুলনার অপর যুবকসহ কয়েকজন।

ঘটনার পাঁচ দিন পর মৌলভীবাজার থেকে সরাসরি জড়িত এই তিন আসামিকে গ্রেপ্তারের পর বুধবার (১৫ জানুয়ারি) দুপুরে কক্সবাজার জেলা পুলিশ আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত তুলে ধরেন কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মুহাম্মদ রহমত উল্লাহ।

মৌলভীবাজার জেলার জিরি থানাধীন কাপনা পাহাড় এলাকায় বুধবার গ্রেপ্তার হওয়া তিনজন হলেনÑ খুলনা সিটি করপোরেশনের দেওয়ানা মোল্লাপাড়ার সেলিম আকনের মেয়ে ঋতু (২৪), একই এলাকার জামাল শেখের ছেলে শেখ শাহরিয়ার ইসলাম পাপ্পু (২৭) এবং খুলনা সিটি করপোরেশনের মধ্য কারিগরপাড়ার হায়দার সরদার অদুদের ছেলে গোলাম রসুল (২৫)।

সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার রহমত উল্লাহ বলেন, ৮ জানুয়ারি ঋতুকে সঙ্গে নিয়ে কক্সবাজার আসেন গোলাম রব্বানী টিপু। ৯ জানুয়ারি গুলি করে হত্যার ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর থেকে হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের গ্রেপ্তারে পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযান অব্যাহত ছিল। এরই ধারাবাহিকতায় গোপন তথ্যে পুলিশ জানতে পেরে ঘটনায় জড়িত নারীসহ ৩ জনকে মৌলভীবাজার থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের পর ৩ জনের দেওয়া তথ্যমতে, কক্সবাজার পৌরসভার কলাতলীর সৈকত বহুমুখী সমবায় সমিতি আবাসিক এলাকাস্থ কক্স কুইন রিসোর্টের ২০৮ নম্বর কক্ষের চিলেকোঠা থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত পিস্তল ও ৪ রাউন্ড গুলি ভর্তি ম্যাগাজিন উদ্ধার করা হয়।

পুলিশ সুপার বলেন, গ্রেপ্তার তিনজনই হত্যাকাণ্ডে সরাসরি জড়িত ছিল। এদের মধ্যে ঋতু নামের নারী কক্সবাজার ঘুরতে এসে কাউন্সিলর টিপুর সঙ্গে হোটেলে উঠেছিলেন।

জেলা পুলিশের তথ্য বলছে, হত্যাকাণ্ডের পর থেকে সঙ্গীর নারী কোনো হাদিস পাওয়া না গেলেও হোটেল কক্ষে বাসের একটি লাগেজ ট্যাগ পায় তদন্ত সংশ্লিষ্টরা। ওটি ছিল ইম্পেরিয়াল এক্সপ্রেসের একটি বাসের। মূলত সেই বাসেই কক্সবাজার আসে হত্যাকারীরা। এটির সূত্র ধরেই কাজ শুরু করে তারা। এই বাসের অন্যান্য যাত্রীসহ নম্বর তল্লাশি করা  হয়। তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় এক পর্যায়ে ঋতুর নাম উঠে আসে। তারপর থেকে ঋতুর অবস্থান শনাক্তের চেষ্টা করা হয়। এক পর্যায়ে মৌলভীবাজার জেলার জিরি থানার কাপনা পাহাড় এলাকা থেকে এই হত্যাকাণ্ডের অন্যতম সহযোগী ঋতুসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয় বলে জানিয়েছেন পুলিশ সুপার।

পুলিশ সুপারের দেওয়া তথ্য বলছে, গ্রেপ্তার ঋতু খুলনার দৌলতপুরের সেলিম আকন্দের মেয়ে। তার স্বামী আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন। দীর্ঘদিন ধরে কাউন্সিলর টিপুর সঙ্গে সখ্যতা তৈরি করে পুরো হত্যার পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করে নারীটি।

মুহাম্মদ রহমত উল্লাহ বলেন, গোলাম রব্বানী টিপু দৌলতপুর এলাকার শীর্ষ সন্ত্রাসী ও চরমপন্থি নেতা শহিদুল ইসলাম ওরফে হুজি শহীদ হত্যা মামলার আসামি ছিলেন। ২০১৫ সালের অক্টোবরে দৌলতপুর খান এ সবুর রোডে ইসলামী ব্যাংকের সামনে শহিদুল ইসলামকে গুলি করে হত্যা করা হয়। আর পাপ্পু শহীদের ভাতিজা। একাধিক মামলার আসামি পাপ্পুকে শুটার নামে এলাকায় চেনে। হুজি শহীদ হত্যার প্রতিশোধ এই হত্যার একটি কারণ। এ ছাড়া স্থানীয় রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব, ওয়ার্ড কাউন্সিলর নির্বাচন ও অন্যান্য কারণও রয়েছে।

এদিকে, গ্রেপ্তার ৩ জনকে গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় কক্সবাজার আদালতে উপস্থাপন করা হলে ৩ জনই ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেন। 

আদালতের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, গ্রেপ্তার ঋতু সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট হামীমুন তানজিনের আদালতে, শেখ শাহরিয়ার ইসলাম পাপ্পু সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আখতার জাবেদের আদালতে এবং গোলাম রসুল সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আসাদ উদ্দিন মো. আসিফের আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেছেন। সন্ধ্যা ৬টা থেকে শুরু হওয়া জবানবন্দি রাত ৮টা পর্যন্ত শেষ হয়নি।

১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদানের সত্যতা স্বীকার করেছেন কক্সবাজার সদর থানার ওসি ইলিয়াস খান।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : মোরছালীন বাবলা

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা