× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন

দৃষ্টি হারিয়ে ধুঁকছেন আজিজুল

রিফাত আবির, বাঞ্ছারামপুর (ব্রাহ্মণবাড়িয়া)

প্রকাশ : ১২ জানুয়ারি ২০২৫ ১১:৪৬ এএম

গত বছরের ১৮ জুলাই বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে গিয়ে গুলিতে চোখ হারান ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার বাহেরচর গ্রামের আজিজুল হক। ছবিতে বাবা-মায়ের সঙ্গে আজিজুল। প্রবা ফটো

গত বছরের ১৮ জুলাই বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে গিয়ে গুলিতে চোখ হারান ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার বাহেরচর গ্রামের আজিজুল হক। ছবিতে বাবা-মায়ের সঙ্গে আজিজুল। প্রবা ফটো

দৃষ্টিশক্তি হারানোর প্রায় ছয় মাস পার হলেও খবর নেয়নি কেউ। অনেকটা বিনা চিকিৎসায় ধুঁকছেন তিনি। বেঁচেও মৃতের মতো পড়ে আছেন বাড়িতে। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তির দৃষ্টিশক্তি হারানোর কারণে নেমে এসেছে চরম অনিশ্চয়তা। পরিবার যাপন করছে মানবেতর জীবন। অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ নিয়েও চিন্তার ভাঁজ পড়েছে কপালে। 

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার তেজখালী ইউনিয়নের বাহেরচর গ্রামের কৃষক কামাল মিয়ার ছেলে আজিজুল হক। নরসিংদী সদরের মাধবদী এলাকার পৌনাপুর ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার আলিম দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। দুই ভাই ও দুই বোনের মধ্যে তৃতীয় তিনি। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি বড় ভাইয়ের ২০২০ সালে মৃত্যু হয়। তাই লেখাপড়ার পাশাপাশি স্থানীয় নরসিংদীর মাধদীর দেবজানি টেক্সটাইল মিলে শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন আজিজুল। সংসারের খরচ, বাবার চিকিৎসা ও ছোট বোনের লেখাপড়ার খরচ বহন করতেন তিনি।

পরিবার সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ১৮ জুলাই মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে মাধবদী এলাকায় যান আজিজুল হক। একপর্যায়ে পুলিশ মিছিলে গুলি চালালে গুরুতর আহত হন। তার দুই চোখে ও মুখের বিভিন্ন অংশে গুলি লাগে। প্রথমে তাকে নরসিংদী সদর হাসপাতালে, পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল নেওয়া হয়। এরপর জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়। আহত হওয়ার পর চিকিৎসার খরচ আত্মীয়স্বজন বন্ধুবান্ধবরা জুগিয়েছেন।

পবিরারের অসচ্ছলতার কারণে বড় ভাইয়ের সঙ্গে নরসিংদী চলে আসেন। মাধবদী এমদাদিয়া দাখিল মাদ্রাসায় অষ্টম শ্রেণিতে ভর্তি হয়ে টেক্সটাইল মিলে চাকরি নেন। দাখিল পাস করার পর মাধবদী পৌনাপুর ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসায় ভর্তি হয়। চাকরি করে মাসে ১৮ হাজার টাকা আয় করতেন। এই টাকার বেশিরভাগই সংসার চালাতে বাবাকে দিয়ে দিতেন। এখন একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তির অসুস্থতার কারণে পরিবারের নেমে এসেছে চরম অন্ধকার।

আজিজুল হক বলেন, স্বৈরাচার হটিয়ে বিপ্লবী সরকার এনেছি। কিন্তু কেউ আমাদের খোঁজ নিচ্ছে না। তখন আশ্বাস দিয়েছে চোখের চিকিৎসা করাবে। এখন পর্যন্ত আমাকে সরকারের পক্ষ থেকে কিংবা সমন্বয়কও এসে দেখেনি। শুনেছি জুলাই বিপ্লব ফাউন্ডেশন থেকে অনেকে সহায়তা পাচ্ছে। আমি কিছুই পেলাম না। বেঁচেও যেন মৃত, পরিবারের বোঝা হয়ে আছি।

আজিজুলের মা শুকতারা বেগম বলেন, পরিবারের চলায় অনেক কষ্ট, এখন ছেলেরে কীভাবে চিকিৎসা করাই। পাড়া-প্রতিবেশী সহযোগিতা করতেছে। বড় ছেলে মারা গেছে তারপর এই ছেলেই সংসার চালাত। আমার সেই ছেলেরই এখন পরের সাহায্যে চলতে হয়। সরকার যদি উন্নত চিকিৎসা করিয়ে অন্তত একটা চোখও ভালো করতে পারত, তাহলেও ছেলের জীবনটা চলত।

আজিজুলের বাবা কামাল মিয়া বলেন, আমার এই ছেলেই পরিবারের অবলম্বন ছিল। সে ঘরে অন্ধ হয়ে বসে আছে। সে তো মরা মানুষের মতো পড়ে আছে। সরকারি কোনো সহযোগিতাও পেলাম না। অনেক কষ্টে জীবনযাপন করছি।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : মোরছালীন বাবলা

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা