শেরপুর প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১০ জানুয়ারি ২০২৫ ২১:১১ পিএম
আপডেট : ১০ জানুয়ারি ২০২৫ ২৩:৪৭ পিএম
নিহত সাদিয়ার মা মারুফা বেগমের আহাজারি।
শেরপুরে এক পাষণ্ড পিতা সৎভাইদের ফাঁসাতে গিয়ে নিজের বাকপ্রতিবন্ধী মেয়ে সাদিয়া খাতুনকে (১৩) কুপিয়ে হত্যা করেছে। এ অভিযোগে বাবা জমাদার মিয়ার বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেছেন মেয়ের মা মারুফা বেগম। শেরপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহাঙ্গীর আলম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে গত সোমবার দুপুরে সদর উপজেলার কামারের চর ইউনিয়নের পয়স্তীরচর এলাকার সবজির ক্ষেত থেকে ওই কিশোরীর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
অভিযোগ রয়েছে, শেরপুর সদর উপজেলার কামারের চর ইউনিয়নের দশানিপাড়ার কোমর শেখের ছেলে জমাদার মিয়া তার সৎভাইদের ফাঁসানোর জন্যই নিজের বাকপ্রতিবন্ধী মেয়েকে দিনের বেলায় কুপিয়ে খুন করে পালিয়ে যান।
এ ঘটনায় সাদিয়ার মা মারুফা বেগম বাদী হয়ে জমাদার মিয়াকে প্রধান আসামি ও আরও ৫-৬ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।
পুলিশ খুনি পিতার গ্রেপ্তার অভিযান অব্যাহত রাখার মধ্যেই মূল আসামি জমাদার আলী আদালতে আত্মসমর্পণ করেছেন। বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) দুপুরে স্বেচ্ছায় সদর জিআর আমলী আদালতে আত্মসমর্পণ করেন জমাদার। পরে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আলমগীর মাহমুদ তাকে জেলা কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এর সত্যতা নিশ্চিত করেছেন কোর্ট পরিদর্শক জিয়াউর রহমান।
এ ব্যাপারে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) তারেক বিন হাসান বলেন, এলাকায় খোঁজখবর নিয়ে প্রাথমিক তদন্ত করে জানা গেছে জমাদার আলী অত্যন্ত খারাপ প্রকৃতির ও মামলাবাজ। হত্যাকাণ্ডের কিছুক্ষণ আগে জমাদার তার বাকপ্রতিবন্ধী মেয়েকে নিয়ে হেঁটে যাচ্ছে, তা সিসিটিভির ফুটেজে দেখা গেছে। সাদিয়া হত্যার পর থেকেই তাকে গ্রেপ্তারের অভিযান চলমান ছিল। পুলিশের তাড়া খেয়ে তিনি আদালতে আত্মসমর্পণ করেছেন। তাকে জিজ্ঞাসবাদের জন্য শিগগিরই রিমান্ডের আবেদন জানানো হবে।
জিজ্ঞাসাবাদে খুনের প্রকৃত রহস্য উদ্ঘাটন হবে বলে আশা করছি।
এদিকে ঘটনার পর থেকে এলাকাবাসীর মধ্যে প্রচণ্ড ক্ষোভ সঞ্চারিত হয়েছে। এ ব্যাপারে কামারেরচর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হাফিজুর রহমান দুলাল বলেন, সৎভাইদের ফাঁসানোর জন্য নিজের বাকপ্রতিবন্ধী মেয়েকে খুন করেছেন জমাদার।
কামারের চর বাজারের হোটেল মালিক হারুন অর রশীদ বলেন, আমার হোটেলে মেয়েটিকে সিঙাড়া খাওয়ায় জমাদার মিয়া। এ সময় মেয়েটির হাতে একটা দা ছিল। এর পর তারা মাঠের দিকে চলে যায়। এর কিছুক্ষণ পরই মেয়েটার লাশ দেখতে পাওয়া গেল।
স্থানীয় বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম বলেন, আমি দেখেছি বাকপ্রতিবন্ধী মেয়েটিকে নিয়ে জমাদার মিয়া মাঠে আসে। এ সময় মেয়েটার হাতে দা দেখছি। এর পরই মেয়েটাকে কুপিয়ে হত্যা করে। সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) তারেক বিন হাসান বলেন, এ ঘটনায় জমাদার মিয়াসহ আরও ৫-৬ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে থানায় মামলা হয়েছে।