× ই-পেপার প্রচ্ছদ সর্বশেষ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি শিক্ষা ধর্ম ফিচার ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

বিএসএফের রাস্তা ও বেড়া নির্মাণ যেভাবে বন্ধ করল বিজিবি

রাজু আহমেদ, রাজশাহী

প্রকাশ : ১০ জানুয়ারি ২০২৫ ১২:৩২ পিএম

আপডেট : ১০ জানুয়ারি ২০২৫ ১২:৩৬ পিএম

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী-বিএসএফ আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে বাংলাদেশের চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জে সীমান্ত ঘেঁষে রাস্তা ও কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণের কাজ থেকে সরে এসেছে বলে নিশ্চিত করেছেন রাজশাহী বিজিবির সেক্টর কমান্ডার কর্নেল ইমরান ইবনে-এ-রৌফ।

বৃহস্পতিবার দুপুরে চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে ফেরার পথে প্রতিদিনের বাংলাদেশকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, সীমান্তে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি উভয় দেশের উত্তেজিত জনগণের প্রাণ রক্ষাকে প্রাধান্য দিয়েছে বিজিবি। ফলস্বরূপ কোনো পক্ষের ক্ষতি বা বড় কোনো সংঘর্ষ ছাড়াই একটি সুষ্ঠু সমাধানে আসা সম্ভব হয়েছে। উভয় দেশের সমন্বয়ে যৌথ প্যাট্রোল টিম বুধবার রাত থেকে কাজ করছে।

পরিস্থিতির বর্ণনা দিয়ে কর্নেল ইমরান ইবনে-এ-রৌফ বলেন, জিরো লাইন থেকে উভয়পাশে দেড়শ গজের মধ্যে কোনো স্থাপনা করার কথা না। তবে ওরা (বিএসএফ) সীমান্তের ১ হাজার ২০০ মিটার এলাকাজুড়ে কাঁটাতারের বেড়া দিচ্ছিল। এর ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ এলাকায় জিরো লাইনের ৬০ মিটারের মধ্যে কাঁটাতার বসানোর প্রস্তুতি ছিল তাদের, যা আন্তর্জাতিক আইনের পরিপন্থি। এটার বিরোধিতা বা প্রতিরোধ আমরা করেছি।

তিনি বলেন, ঘটনার শুরুর দিকে একপর্যায়ে দুই দেশের সীমান্তবর্তী এলাকার জনগণ উত্তেজিত হয়ে দা, ছুরি, কুড়াল ও লাঠি নিয়ে ছুটে আসে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে উৎসুক ও ক্ষুব্ধ জনগণকে সেখান থেকে সরানো বড় চ্যালেঞ্জ ছিল। কারণ তাদের (জনগণের) যেকোনো পদক্ষেপ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে নিয়ে যেতে পারত।

এমন অবস্থায় বিজিবি নিজ দেশের জনগণকে শান্ত করার পাশাপাশি বিএসএফকেও তাদের জনগণকে শান্ত করে সেখান থেকে সরিয়ে নিতে বলে। বিএসএফ একপর্যায়ে বিষয়টি বুঝতে পারে এবং সবার আগে সীমান্ত থেকে তাদের জনগণকে সরিয়ে নেয়। এরপর দুই পক্ষে আলোচনা শুরু হয়।

বিজিবির এই সেক্টর কমান্ডার বলেন, ‘আমরা দফায় দফায় বিএসএফের কমান্ডিং অফিসার ও সেক্টর কমান্ডারের সঙ্গে পতাকা বৈঠক করি। সবশেষ বুধবার বিকালে চাঁপাইনবাবগঞ্জের সোনামসজিদ সীমান্তের কাছে ভারতীয় অংশে মালদা সেক্টর কমান্ডার তরুণ কুমার গৌতমের নেতৃত্বে একটি টিম আলোচনার টেবিলে বসার আহ্বান জানায়। আমি সেখানে বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে যাই। ঘণ্টাব্যাপী আলোচনা শেষে সন্ধ্যা সাড়ে ৫টায় ফিরে আসি।’

আলোচনার টেবিলে মালদা সেক্টর কমান্ডার তরুণ কুমার গৌতমকে বিজিবির সেক্টর কমান্ডার কর্নেল ইমরান ইবনে-এ-রৌফ বলেন, ‘টেবিলে বসে বিষয়টির সমাধান করতে হবে। নইলে দুই দেশের সাধারণ নাগরিক ক্ষতিগ্রস্ত হবে। আমাদের দায়িত্বহীন পদক্ষেপ বা ব্যবহারের কারণে যেন কোনো সাধারণ নাগরিক ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।’

কর্নেল ইমরান বৈঠকে বিএসএফ কর্মকর্তাদের আরও বলেন, ‘সীমান্তে কাজ বন্ধ রাখেন, যতক্ষণ পর্যন্ত আলোচনার মাধ্যমে আমরা বিষয়টির সমাধান করতে না পারছি। আর আলোচনার টেবিলে আমাদেরকে আপনারা বোঝান যা করছেন, যে নির্মাণ কাজ করছেন, তা কিসের ভিত্তিতে করছেন, কতটুকু প্রয়োজন আছে এটার এবং তা কতটুকু বৈধ। যাতে করে আমি আমার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বলতে পারি এবং তারা দেশের নাগরিকদের কাছে কৈফিয়ত দিতে পারেন। এটা না হলে আপনারা কাজ করবেন, জনগণ আবার সীমান্তে চলে আসবে। দায়িত্বশীল জায়গা থেকে এটা আমাদের উভয়পক্ষের কাম্য হতে পারে না। পৃথিবীর সামনে আমরা যেন নিজেদেরকে জোকারে পরিণত না করি।’

এ সময় বিএসএফের পক্ষ থেকে বলা হয়, বিষয়টি তাদের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে বোঝাতে হবে।

উত্তরে বিজিবি জানায়, মাঠপর্যায়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা আসবেন না। কাজেই সঠিক বিষয়টা মাঠপর্যায়ের বিএসএফ কর্মকর্তাদেরই তুলে ধরতে হবে।

রাজশাহী বিজিবির সেক্টর কমান্ডার প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, অবশেষে বুধবার রাত সাড়ে ১২টায় বিজিবি ও বিএসএফ সীমান্তে যৌথ প্যাট্রোল দিয়েছে। সাধারণত পরিস্থিতি খারাপ হলে এই প্যাট্রোল টিম কাজ করে না। এরপর আমি নিজে বৃহস্পতিবার সকালে ওই সীমান্তে গিয়েছি। নিজে দেখে এসেছি সেখানে তারা কোনো নির্মাণকাজ করছে না। বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পরই বৃহস্পতিবার দুপুরে চাঁপাইনবাবগঞ্জ ছেড়ে রাজশাহীতে আমার কার্যালয়ের দিকে রওনা দিয়েছি।’

একই সঙ্গে তিনি বলেন, ‘তবে বিএসএফ তাদের এলাকায় জনবল বৃদ্ধি করেছে। আমরাও তা করেছি। এটা সিচুয়েশনের কারণে, স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। সেই সাথে আমরা উভয় দেশ নিজ নিজ জনগণকে নিয়ন্ত্রণে রেখেছি। আমরা আশা করব, তারাও দায়িত্বশীল আচরণ করবেন।’

প্রসঙ্গত, আন্তর্জাতিক আইন অনুসারে দুই দেশের সীমানার জিরো লাইনের উভয় প্রান্তের দেড়শ গজের মধ্যে কোনো প্রকার স্থাপনা করার কথা না। তবে চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ সীমান্তের চৌকি বিওপি এলাকায় গত রবিবার সকালে ভারতের মালদহ জেলার গোপালগঞ্জ থানার সবদলপুর বিএসএফ ক্যাম্পের সদস্যরা সীমান্ত ঘেঁষে রাস্তা ও কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণের কাজ শুরু করেন।

এ সময় বাংলাদেশ সীমান্তরক্ষী বাহিনী-বিজিবির সদস্যরা বাধা দিলে তারা সরে যায়। তবে মঙ্গলবার আবারও তারা একই কাজ শুরু করলে এবার সীমান্তের বাংলাদেশিরা তা নিয়ে প্রতিবাদ জানায়। একপর্যায়ে উভয় দেশের জনগণ মুখোমুখি অবস্থান নেয়।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : মোরছালীন বাবলা

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা