উজিরপুর (বরিশাল) প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৮ জানুয়ারি ২০২৫ ১৯:১৮ পিএম
আপডেট : ০৮ জানুয়ারি ২০২৫ ১৯:৩৪ পিএম
অভিযুক্ত মো. নুরুল হক সর্দার।
বরিশালের উজিরপুর উপজেলার বামরাইল ইউনিয়নের পূর্ব ধামসার গ্রামের সোনার বাংলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. নুরুল হক সর্দারের বিরুদ্ধে সাবেক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) স্বাক্ষর জালিয়াতি করে ৩৩ লাখ ৪০ হাজার ৯৫ টাকার বিল-ভাউচার করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় এলাকাবাসী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন।
এলাকাবাসীর অভিযোগের ভিত্তিতে উজিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আলী সুজা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হাসনাত জাহান খানকে তদন্তকারী কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব প্রদান করেছেন।
অভিযোগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার বামরাইল ইউনিয়নের পূর্ব ধামসার গ্রামের সোনার বাংলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. নুরুল হক সর্দারের ২০১৬ সালে এক ছাত্রীর সঙ্গে অসামাজিক ও অশ্লীল ভিডিও ভাইরাল হয়। এ ঘটনায় তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ঝুমুর বালা তার বেতন-ভাতা বন্ধ করে দেন। ২০২৩ সালেও বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর সঙ্গে অসামাজিক ও অশ্লীল আচরণ করলে সে ভিডিও ভাইরাল হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে স্থানীয় জনতা ও স্কুল কর্তৃপক্ষ তাকে সাময়িক বরখাস্ত করে। পরে তিনি ২০২৪ সালের মাঝামাঝি পুনরায় বিদ্যালয় যোগদান করেন। এর পর নিজেই বিগত দিনের বেতন-ভাতাসহ ৩৩ লাখ ৪০ হাজার ৯৫ টাকার একটা ভুতুড়ে বিল তৈরি করে রেজল্যুশন করে তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সাখাওয়াত হোসেনের স্বাক্ষর টেম্পারিংয়ের মাধ্যমে জাল করে শিক্ষা অধিদপ্তরে সাবমিট করেন।
জমাকৃত বিল প্রসঙ্গে সাবেক ইউএনও সাখাওয়াত হোসেন জানান, এত বড় বিলে তিনি স্বাক্ষর করেননি। সাখাওয়াত হোসেন তিনি বর্তমানে পিরোজপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। তিনি গত বছরের ৫ নভেম্বর উজিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব হস্তান্তর করেন।
সোনার বাংলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের বিতর্কিত শিক্ষক মো. নুরুল হক সর্দার গত বছরের ৩ নভেম্বর স্বাক্ষর জাল করে সাবমিট করেন। টেম্পারিংয়ের মাধ্যমে স্বাক্ষর করার বিষয়ে প্রধান শিক্ষক বিষয়টির সত্যতা স্বীকার করেন।
সোনার বাংলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সাবেক সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা হাবিবুর রহমান জানান, সাবেক ইউএনওর স্বাক্ষর জাল করার বিষয়টি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত হওয়া উচিত।
বিদ্যালয়ের দাতা সদস্য আব্দুল লতিফ মোল্লা জানান, একজন প্রধান শিক্ষকের কাজ থেকে এ ধরনের দুর্নীতি ও জালিয়াতি কোনোভাবেই মানা সম্ভব না, এর বিচার হওয়া উচিত। বর্তমান ইউএনও আলী সুজা জানান, সাবেক নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সাখাওয়াত হোসেনের স্বাক্ষর জালিয়াতি ও বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হওয়ার ক্ষেত্রে জালিয়াতির বিষয়ে একটি অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার ভূমি হাসনাত জাহান খানকে তদন্তকারী কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।