× ই-পেপার প্রচ্ছদ সর্বশেষ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি শিক্ষা ধর্ম ফিচার ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

ভুক্তভোগীদের সংবাদ সম্মেলন

ইউরোপ নেওয়ার মিথ্যা আশ্বাসে হাতিয়ে নিল কোটি টাকা

ভৈরব (কিশোরগঞ্জ) প্রতিবেদক

প্রকাশ : ০৮ জানুয়ারি ২০২৫ ১৭:৪০ পিএম

ভুক্তভোগীদের সংবাদ সম্মেলন। প্রবা ফটো

ভুক্তভোগীদের সংবাদ সম্মেলন। প্রবা ফটো

ইউরোপের দেশে পাঠানোর কথা বলে প্রতারকচক্রের সদস্যরা হাতিয়ে নিয়েছে একই গ্রামের ১৫ জন ব্যক্তির ১ কোটি ২৭ লক্ষ টাকা। এ ঘটনায় সংবাদ সম্মেলন করেছেন কিশোরগঞ্জ ভৈরবের ভুক্তভোগী ও তাদের পরিবারের সদস্যরা। আজ বুধবার (৮ জানুয়ারি) সকাল ১১টায় উপজেলার শ্রীনগর ইউনিয়নের নতুনবাজার এলাকায় এ  সংবাদ সম্মেলন করেন।

সংবাদ সম্মেলনে রাজধানীর গুলশান ও শাহজাদপুরে থাকা ভিসা অ্যাপ্লিকেশন সেন্টার নামে ট্রাভেলসের মালিক, তার স্ত্রী ও ম্যানেজারের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়।

অভিযুক্তরা হলেন- ট্রাভেলস মালিক কক্সবাজার জেলার রামু উপজেলা খুনিয়া পালং ইউনিয়নের এম.এস আজিজুল হক ও তার স্ত্রী ম্যানেজিং পার্টনার সাফরিন হক ও ম্যানেজার ইউনুস।

সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগীরা প্রতারকচক্রের সদস্যদের বিচারের আওতায় এনে পাসপোর্টসহ টাকা ফেরতের দাবি জানান।

ভুক্তভোগী ও অভিযোগকারী শ্রীনগর উত্তরপাড়া এলাকার মো. মামুনুর রহমানের মামা তৌফিকুর রহমান লিখিত বক্তব্যে বলেন, ‘২০২৩ সালে আগস্ট মাসে আমার ভাগিনা ইতালি প্রবাসী আসরাফুল আলমের বন্ধু সোহাগের মাধ্যমে ভিসা অ্যাপ্লিকেশন সেন্টার নামে ট্রাভেলসের মালিক এম.এস আজিজুল হক ও তার স্ত্রী সাফরিন হকের সঙ্গে পরিচয় হয়। ভুক্তভোগীদের প্রথমে কানাডার জন্য ভুয়া কাজের ভিসা প্রদান করেন। আমার ভাগিনা ছাড়াও শ্রীনগর গ্রামের তাহের মিয়ার ছেলে রুস্তম আলী ও আব্দুল হামিদ মিয়ার ছেলে মো. ইব্রাহীম মিয়ার কাছ থেকে ৮০ লাখ টাকা নেয়। তাদের পাসপোর্টে ভারতীয় ভিসা সংযোজন করে। পরে আমার ভাগিনার কাছ থেকে আরও ১০ লাখ টাকা নেন। টাকাগুলো নিয়ে গত বছর ১২ মার্চ ভুক্তভোগীদের মধ্যে ৭ জনকে ভারত ও নেপাল নিয়ে যায়। ভারত থেকে পর্তুগালের ভিসা না লাগিয়ে তাদেরকে কিছুদিন রেখে ওই বছর ২৮ জুন বাংলাদেশে নিয়ে আসেন। এ ছাড়াও শ্রীনগর গ্রামের এলাইচ মিয়ার ছেলে তারেক মিয়া, আব্দুল খালেক মিয়ার ছেলে অন্তর মিয়া, আওয়াল মিয়ার ছেলে মোবারক মিয়া ও কিবরু মিয়ার ছেলে অন্তর মিয়াকে সার্বিয়া নেওয়ার কথা বলে অভিযুক্তরা তাদের কাছ থেকে আরও ৩৮ লাখ টাকা নেন। ভুক্তভোগী সবার কাছ থেকে প্রতারকচক্র কানাডা ও সার্বিয়া নেওয়ার কথা বলে পাসপোর্ট ও ভিসা ফি বাবদ মোট ১ কোটি ২৮ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয়।’

তৌফিকুর রহমান লিখিত বক্তব্যে আরও বলেন, ‘দেশে এসে ভুক্তভোগীরা ঢাকার শাহজাদপুর ও গুলশান অফিসে গেলে প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ পাওয়া যায়। পরবর্তীতে বিভিন্ন মাধ্যমে তাদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে আমরা স্বজন ও ভুক্তভোগীরা ব্যর্থ হই। শেষে কোনো উপায় না পেয়ে ভুক্তভোগীদের পক্ষে আমার ভাগিনা মামুনুর রহমান বাদী হয়ে বিজ্ঞ চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত, ঢাকায় বৈদেশিক কর্মসংস্থান ও আদিবাসী আইনে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা নং সি আর- ৩৫৪০/২৪খ্রি.। বর্তমানে মামলাটি সিআইডি তদন্ত করছে।

ভুক্তভোগীর স্বজন বুলবুল আহমেদ বলেন, ‘আমরা প্রতারকদের খুঁজে কক্সবাজারের বাড়িতে গেলে আমাদেরকে অপদস্ত করা হয়। আমরা কোনো রকম প্রাণে বেঁচে আসি।’

এ সময় ভুক্তভোগী রুস্তম মিয়া বলেন, ‘আমার কাছ থেকে ১৫ লক্ষ টাকা নিয়েছে। আমিসহ অন্যদেরকে ভারত নিয়ে ৩ মাস রাখে। পরে পর্তুগালের একটি ভুয়া ভিসা ধরিয়ে দেয়। আমাদেরকে দেশে ফিরে আসতে হয়েছে। আমি বর্তমানে সর্বহারা হয়ে আছি। আমার পরিবার নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছি।’

ভুক্তভোগী ইব্রাহীম মিয়া বলেন, ‘আমিসহ আরো দুইজনে মিলে ৪৫ লক্ষ টাকা দিয়েছি। সবাই এখন পরিবার নিয়ে কষ্টে আছি।

ভুক্তভোগী উসমান মিয়া বলেন, ‘আমি ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান বিক্রি করে দালালকে ১১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা দিয়েছি। দালালচক্রকে এখন খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। আমি নিঃস্ব হয়ে গেলাম।’

উপস্থিত ভুক্তভোগীরা বলেন, ‘বাংলাদেশ অর্ন্তবর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টাসহ সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ও পররাষ্ট্র উপদেষ্টার কাছে আকুল আবেদন যেন দ্রুততম সময়ের মধ্যে প্রতারকদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা হয়। এ ছাড়া জমাকৃত পাসপোর্ট ও ভিসা ফি বাবদ ১ কোটি ২৮ লক্ষ টাকা ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য বিনীতভাবে অনুরোধ রইল।

অভিযুক্ত এম. এস আজিজুল হকের স্ত্রী সাফরিন হক মুঠোফোনে বলেন, ‘আমার স্বামী ট্রাভেলস্ এজেন্সি চালায়। বিদেশ পাঠানোর জন্য টাকা নিয়ে থাকতে পারে। মামলার বিষয়টি আমরা অবগত হয়েছি। ভুক্তভোগীদের বিষয়টি সমাধানের জন্য চেষ্টা করছি।’

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) ফরিদ আহমেদ বলেন, ‘অভিযোগ পাওয়ার পর কানাডার ভিসাগুলো যাচাই-বাছাই করতে দেওয়া হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে তদন্ত শেষে প্রতিবেদন দাখিল করব।’

সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী ছাড়াও স্থানীয় নেতৃবৃন্দ ও এলাকাবাসীরা উপস্থিত ছিলেন৷

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : মোরছালীন বাবলা

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা