বান্দরবান
বান্দরবান প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৮ জানুয়ারি ২০২৫ ১১:৪০ এএম
গ্রামীণ সড়ক সংস্কার, উন্নয়ন ও সম্প্রসারণের নামে বান্দরবান সদর উপজেলার বান্দরবান-কেরানীহাট প্রধান সড়ক হতে রেইচা-গোয়ালিয়াখোলা সড়কের দুই পাশের ৫ শতাধিক গাছ কাটা হয়েছে। একই রাস্তার দুই ধারে সারি সারি সবুজবেষ্টিত সব গাছ কাটা হবে। মঙ্গলবার তোলা। প্রবা ফটো
বান্দরবানে গ্রামীণ সড়ক সংস্কার, উন্নয়ন ও সম্প্রসারণের নামে জেলার সদর উপজেলার বান্দরবান-কেরানীহাট প্রধান সড়ক হতে রেইচা-গোয়ালিয়াখোলা সড়কের দুই পাশে থাকা হাজারের অধিক গাছ কেটে ফেলার অভিযোগ উঠেছে আমানউল্লাহ নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। গত কয়েকদিনে কয়েকশ গাছ কেটে ফেলা হয়েছে।
জেলার স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ অফিসের তথ্যমতে, বান্দরবান স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর এলজিইডি ২০২৩-২৪ অর্থবছরে রাস্তাটি সম্প্রসারণ-পূর্বক দৃঢ় ও উন্নয়নকরণে একটি প্রকল্প গ্রহণ করে। ৭ কিমি ১৫০ মিটার রাস্তাটির উন্নয়নে তিন প্যাকেজে ৩০ কোটি ৫০ লাখ টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে।
সম্প্রতি সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, সড়কের দুই পাশে দাঁড়িয়ে থাকা গাছগুলোর মধ্য থেকে পাঁচ শতাধিক কাটা হয়েছে। অনেক গাছের ডালপালা ছেঁটে রাখা হয়েছে। অনেকগুলো গুঁড়ি ভেকু দিয়ে উপড়িয়ে ফেলা হচ্ছে।
শ্রমিক মোহাম্মদ রফিক ও নজরুল বলেন, ব্যবসায়ী আমানউল্লাহ আমান আমাদেরকে গাছগুলো কাটার জন্য বলেছেন। চার দিন ধরে ৫৫-৬০টার মতো গাছ কাটতে পেরেছি। দিনের বেলায় গাছের ডালপালা কেটে রাখি। একদল রাতে এসে গাছের গোড়ালি থেকে কেটে ট্রাকে করে নিয়ে যায়। আরেক দল পরের দিন ভেকু দিয়ে গোড়ালিগুলো উপড়িয়ে ফেলে মাটি দিয়ে ভরাট করে রেখে দেয়।
ব্যবসায়ী আমানউল্লাহ আমান বলেন, রাস্তাটি সম্প্রসারণে বান্দরবান সদর ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান সাবুখয় মারমার নেতৃত্বে ইউনিয়ন অফিসে গাছগুলো কাটার জন্য নিলাম হয়। ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত ওই নিলামে ১০ লাখ টাকায় রাস্তার দুই পাশের মোট ১ হাজার গাছ কাটার অনুমতি পেয়েছি। নিয়ম অনুযায়ী ইউপির ব্যাংক অ্যাকাউন্টে টাকার চেক জমা দেওয়ার পর গাছগুলো কাটা শুরু করলে উপজেলা প্রশাসন, ইউনিয়ন পরিষদ, এলজিইডি ও বন বিভাগ অফিসিয়ালি অনুমতি না থাকার অজুহাতে বাধা প্রদান করে। পরে ওই চার প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে বান্দরবান জজ আদালতে মামলা করি, যার মামলা চলমান।
সাবেক সদর ইউপি চেয়ারম্যান সাবুখয় মারমা বলেন, ২০১৮ সালে ১৮ নভেম্বর রেইচা-গোয়ালিয়া খোলার সড়কের পাশে থাকা গাছগুলো কাটার জন্য নিলাম ডাকা হয়। নিলামে আমানউল্লাহ আমান নামে রেইচার স্থানীয় ব্যবসায়ী ১০ লাখ টাকায় নিলামজয়ী হন। কাছ কাটার পূর্বে আমানউল্লাহ আমার হাতে ৫ লাখ টাকা ক্যাশ দিয়ে বাকি টাকা পরে দেবে জানিয়েই গাছগুলো কাটা শুরু করেন।
সদর ইউপির চেয়ারম্যান অংসা হ্লা মারমা জানান, সাবেক চেয়ারম্যান সাবুখয় মারমা থাকাকালীন গাছগুলো কাটার জন্য নিলামে তুলেছিলেন।
বান্দরবান বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মোহাম্মদ আব্দুর রহমান বলেন, রেইচা-গোয়ালিয়াখোলা রাস্তা সম্প্রসারণের জন্য রাস্তার দুই পাশের গাছ কর্তনে বাধা পেয়ে একজন আদালতে ১টি মামলা করেছেন। আদালত যে সিদ্ধান্ত দেবেন, বন বিভাগ তা পালন করবে।
জেলার স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগে সিনিয়র সহকারী প্রকৌশলী পারভেজ সারোয়ার হোসেন বলেন, এলজিইডি যেহেতু রাষ্ট্রের উন্নয়নের জন্যই কাজ করে; সেহেতু রাষ্ট্র, রাষ্ট্রের জনগণ এবং পরিবেশের ক্ষতি হয়Ñ এমন কোনো কাজ এলজিইডি করবে না।