পটিয়া (চট্টগ্রাম) প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৬ জানুয়ারি ২০২৫ ২১:৪৪ পিএম
চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার পূর্ব হাইদগাঁওয়ে প্রতিপক্ষের হামলায় আহত দিনমজুর সামশুল আলম গত ৩০ ডিসেম্বর চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। তার মৃত্যুতে অবুঝ দুই সন্তান কানিজ ফাতিমা ও মোহাম্মদ ইব্রাহিমকে নিয়ে অসহায় হয়ে পড়েছেন স্ত্রী সুমি আক্তার। দুই সন্তানের ভরণপোষণ ও পড়ালেখা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। এ দুশ্চিন্তাই চোখে অন্ধকার দেখছেন গৃহবধূ সুমি আক্তার।
হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার ও বিচার এবং চিকিৎসাধীন থাকাকালে প্রতিবেশী আর্থিকসহ নানাভাবে সহযোগিতা করেছে তাদের চুরি ও ডাকাতি মামলায় ফাঁসানোর প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেন সুমি আক্তার। সোমবার (৬ জানুয়ারি) দুপুরে পটিয়া পৌর সদরে একটি রেস্টুরেন্টে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
লিখিত বক্তব্যে সুমি আক্তার জানান, গত ১৪ নভেম্বর হাইদগাঁও সাতগাছিয়া দরবার শরিফ এলাকা থেকে লেবু বিক্রি করে পটিয়া সদরে ফিরছিলেন দিনমজুর সামশুল। পথিমধ্যে ভাঙাপুল এলাকায় পূর্বশত্রুতার জের ধরে তাকে মারধর করা হলে থানায় অভিযোগ করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে প্রতিপক্ষ ইউনুছ, নাছির, রফিক, মাঈনুল, রাজ, আবু মোরশেদ, মারুফ, মো. মুছা, মিন্টু, সায়েমসহ ২৫-৩০ জন গত ২১ ডিসেম্বর বিকালে ভাঙাপুল এলাকায় তার পথরোধ করে। পূর্বপরিকল্পিতভাবে রড, লাঠিসোঁটা নিয়ে তাকে এলোপাতাড়ি মারধর করতে থাকেন। একপর্যায়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়লে তাকে টানাহেঁচড়া করে ইউনুছের মুদি দোকানের গুদামে লুকিয়ে রাখেন। পরে স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে থানা পুলিশ ও এলাকাবাসী তাকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৩০ ডিসেম্বর সকালে মৃত্যু হয়। হামলার সময় শত শত লোক বেরিয়ে এলেও ওই সন্ত্রাসীদের ভয়ে কেউ তাকে বাঁচাতে এগিয়ে আসেনি।
হত্যার ঘটনায় গত ২২ ডিসেম্বর সুমি আক্তার বাদী হয়ে মো. ইউনুছকে প্রধান আসামি করে ১৬ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত ৪-৫ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন।
অভিযুক্ত মো. ইউনুছ গ্রেপ্তার হওয়ায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। তার স্ত্রী আছমা আক্তার জানান, আমি সাজানো কিংবা বানোয়াট কোনো অভিযোগ করিনি। বিবাদীরা পরিকল্পিতভাবে আমার স্বামীর ওপর হামলা করে দোকান থেকে নগদ টাকা-পয়সা লুট করে নিয়ে গেছে। বরং তারাই ঘটনা ঘটিয়ে মিথ্যাচার করছে। এ ছাড়া অভিযুক্ত অন্যদের পাওয়া যায়নি।
জানতে চাইলে পটিয়া থানার ওসি আবু জায়েদ মো. নাজমুন নুর বলেন, এ ঘটনায় ইতোমধ্যে প্রধান আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্যদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা চলছে।