কক্সবাজার অফিস
প্রকাশ : ০৫ জানুয়ারি ২০২৫ ২১:৫৭ পিএম
আপডেট : ০৫ জানুয়ারি ২০২৫ ২১:৫৮ পিএম
কক্সবাজারের টেকনাফে ধারাবাহিক অপহরণের ঘটনায় তিনটি ইউনিয়নের মানুষ চরম আতঙ্কিত রয়েছেন। এমন পরিস্থিতিতে টেকনাফের পাহাড়ে সেনা বাহিনীর নেতৃত্বে বিশেষ অভিযানের দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি ও স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে।
টেকনাফের সন্তান কবি ও সাংবাদিক নুপা আলমের ব্যক্তিগত উদ্যোগে রবিবার (৫ জানুয়ারি) বেলা ১১টার দিকে কক্সবাজার শুরু হয় অবস্থান কর্মসূচির। যেখানে বিভিন্ন পেশাজীবী, রাজনৈতিকবিদসহ অনেকেই সংগতি জানিয়ে তার পাশে অবস্থান নেন।
অবস্থান কর্মসূচিতে সূচনা বক্তব্যে নুপা আলম বলেন, গত কয়েক বছর ধরে টেকনাফের পাহাড় কেন্দ্রিক রোহিঙ্গা ও স্থানীয় কতিপয় অপরাধের নেতৃত্বে স্বশস্ত্র সন্ত্রাসী গোষ্ঠি পাহাড়ে অবস্থান নিয়েছে। যারা কয়েক বছরে ধরে ধারাবাহিকভাবে সাধারণ স্থানীয় মানুষ ও রোহিঙ্গাদের অপহরণ করে পাহাড়ে জিম্মি করে আসছে। ওখানে নিমর্ম নির্যাতন পরবর্তি মুক্তিপণ আদায়ের ঘটনা ও হত্যা ঘটনা সংঘটিত হচ্ছে। শুধু গত এক বছরের মধ্যে টেকনাফের বিভিন্ন এলাকা থেকে ১৯২ জনকে অপহরণের ঘটনা ঘটেছে। যাদের বেশিভাগই মুক্তিপণ দিয়ে ফিরতে হয়েছে। হত্যার ঘটনাও ঘটেছে।
তিনি আরও বলেন, টেকনাফ উপজেলার বাহারছড়া, হোয়াইক্যং ও হ্নীলা ইউনিয়ন পুরোটাই পাহাড় ঘেঁষে। টেকনাফ সদর ইউনিয়ন ও পৌরসভার কিছু এলাকায়ও পাহাড় রয়েছে। ফলে এই ৪টি ইউনিয়নের মানুষ এখন চরম নিরাপত্তাহীনতায় এবং আতঙ্কে রয়েছেন।
বিভিন্ন তথ্য বলছে, দুর্গম পাহাড় ঘিরে কয়েকটি স্বশস্ত্র গোষ্ঠি রয়েছে। যাদের সংখ্যা ৩০০ থেকে ৪০০ শ’। যারা পাহাড়ে তৈরি করেছে বিশেষ আস্তানা। কিছু সংখ্যক স্থানীয়দের আশ্রয় প্রশ্রয়ে চলছে এমন অপরাধ। বিগত সরকারের সময় এই চক্রটিকে কতিপয় প্রভাবশালীর সখ্যতার অভিযোগ ছিল। কিন্তু ৫ আগস্ট পরবর্তি সময়ে এসেও তা বন্ধ না হওয়ায় উদ্বেগ-উৎকন্ঠা বেড়েছে বহুগুণ। গত এক সপ্তাহে অপহরণ হয়েছে ৩০ জন। যার মধ্যে দুইজন এখনও জিন্মি রয়েছে। টেকনাফের মানুষ মনে করেন, সেনা বাহিনীর নেতৃত্বে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করা হলে এই ভয়াবহ অপরাধ রোধ করা সম্ভব।
কর্মসূচিতে সংগতি জানিয়ে বক্তব্য দেন টেকনাফ উপজেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট হাসান সিদ্দিকী, টেকনাফের ব্যবসায়ী এইচএম ওসমান গণি, চাকুরিজীবী হাসান আলী, সাংবাদিক আহসান কুতুবি, সাজন বড়ুয়া, মুহিব উল্লাহ মুহিব, ইব্রাহিম, মোহাম্মদ রাসেল প্রমুখ।
কর্মসূচি শেষে প্রধান উপদেষ্টা ও স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বরাবরে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। স্মারকলিপিটি গ্রহণ করে জেলা প্রশাসকের পক্ষে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) নিজাম উদ্দিন আহমদ।
এসময় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) নিজাম উদ্দিন আহমদ বলেন, টেকনাফের অপহরণের বিষয় অবহিত রয়েছে। যেখানে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী অভিযান অব্যাহত রাখলেও রোধ করা যাচ্ছে না। স্মারকলিপি যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হবে।