× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

সেতু না থাকায় ৩০ হাজার মানুষের দুর্ভোগ

শিশির খাঁন, সদরপুর-চরভদ্রাসন (ফরিদপুর)

প্রকাশ : ০৫ জানুয়ারি ২০২৫ ১০:৪৫ এএম

ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার নাসিরাবাদ ইউনিয়নের দরগা বাজার থেকে চরনাসিরপুর ট্রলারঘাটে প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে আড়িয়াল খাঁ নদ পার হতে হয় নারী, শিশু ও শিক্ষার্থীসহ হাজারো মানুষকে। ওই স্থানে একটি সেতুর দাবি এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের। সম্প্রতি তোলা। প্রবা ফটো

ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার নাসিরাবাদ ইউনিয়নের দরগা বাজার থেকে চরনাসিরপুর ট্রলারঘাটে প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে আড়িয়াল খাঁ নদ পার হতে হয় নারী, শিশু ও শিক্ষার্থীসহ হাজারো মানুষকে। ওই স্থানে একটি সেতুর দাবি এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের। সম্প্রতি তোলা। প্রবা ফটো

ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলার আড়িয়াল খাঁ নদের ওপর একটি সেতুর অভাবে চরাঞ্চলের চারটি ইউনিয়নের প্রায় ৩০ হাজার মানুষকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। প্রতিদিন নৌকা কিংবা ট্রলারে করে ঝুঁকি নিয়ে খরস্রোত নদ পাড়ি দিতে হয় ব্যবসায়ী, শিক্ষার্থী, নারী-পুরুষসহ হাজারো মানুষকে। 

স্থানীয়দের ভাষ্যমতে, সদরপুর উপজেলা চরমানাইর ও চরনাসিরপুর ইউনিয়ন, ভাঙ্গা উপজেলার নাসিরাবাদ ইউনিয়ন ও মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার সন্যাসীর চর ইউনিয়ন থেকে দরগাবাজার ঘাট হয়ে ভাঙ্গা ও সদরপুর উপজেলাসহ বিভিন্ন জায়গায় যেতে পাড়ি দিতে হয় আড়িয়াল খাঁ নদ। চরের হাজারো মানুষ ভোগান্তি থেকে রেহাই পেতে সেতু নির্মাণের দাবি জানিয়ে এলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি। তারা জানায়, উল্লেখিত স্থানে একটি সেতু নির্মিত হলে অতিরিক্ত ট্রলার ভাড়া না গুনে সহজে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যেতে পারবে শিক্ষার্থীরা। পাশাপাশি এই অঞ্চলের উৎপাদিত কৃষিপণ্য বাজারজাত করতে ভোগান্তিতে পড়তে হবে না কৃষকদের। কিন্তু সেতু না থাকায় স্বাস্থ্যসেবা, আইনি সেবা, ফায়ার সার্ভিস সেবাসহ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে এলাকার মানুষ। ইউনিয়নগুলো নদের কারণে উপজেলা থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ায় এখানে প্রতিনিয়ত বাড়ছে মাদক, জুয়া, চুরি ডাকাতিসহ অনেক অনৈতিক কর্মকাণ্ড। দরগাবাজার ঘাটে সেতু হলেই সদরপুর ও ভাঙ্গা উপজেলার সঙ্গে সরাসরি সড়কপথে যুক্ত হতে পারবে চরাঞ্চলটি। শুধু তা-ই নয়, এই অঞ্চলের সড়ক ব্যবহার করে সদরপুর ও ভাঙ্গার অনেক যাত্রী পদ্মা সেতু হয়ে কম সময়ে ঢাকায় যাতায়াত করতে পারবে। 

সদরপুর উপজেলার চরমানাইর ইউনিয়নের ভ্যানচালক সালাউদ্দিন মুন্সি বলেন, এখানে সেতু হলে আমাদের রাস্তাঘাটও উন্নত হবে। আমরা চলাফেরা করে অনেক শান্তি পাব। এতে এলাকায় ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি, পুলিশের গাড়ি, অ্যাম্বুলেন্সসহ কোনো গাড়ি সহজে প্রবেশ করতে পারবে। 

কৃষক বারেক মৃধা বলেন, আমরা আমাদের উৎপাদিত কৃষিপণ্য সময়মতো বাজারে নিতে পারি না। অনেক টাকা ট্রলার ও ভ্যান ভাড়া দিয়ে বাজারে নিতে হয়। এতে পণ্যের যে দাম পাই, তাতে পোষায় না। একটা সেতু হলে অনেক সহজে বাজারে যেতে পারব। 

ভাঙ্গা উপজেলার নাসিরাবাদ ইউনিয়নের আছিরন নেছা বলেন, একবার গভীর রাতে আমার এক ভাবির প্রসব বেদনা উঠেছিল। সেই রাতে ঘাটে গিয়ে ট্রলার পাইনি। কত কষ্ট করেছি সেই রাতে। পরে ভোরবেলা ট্রলারচালককে খবর দিয়ে এনে তাকে হাসপাতালে নিতে হয়েছে।

মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার সন্যাসীর চর ইউনিয়নের বাসিন্দা আকিদুল হক বলেন, আমরা এই ঘাট দিয়ে ভাঙ্গা ও সদরপুরে নানা কাজে যাই। একটু রাত হলেই ট্রলার পাই না। এমনও হয়েছে রাতে ট্রলার না পেয়ে আশপাশের কোনো বাড়িতে মিনতি করে রাত কাটাতে হয়েছে। এই এলাকায় সেতু না থাকায় পুলিশ আসতে পারে না। তাই চুরি, ডাকাতি ও মাদক সেবন ও কারবারি বেড়ে গেছে।

সেতু নিয়ে কথা বলে দুই স্কুলশিক্ষার্থী হাসিবুল ও রুনা। তারা বলে, পরীক্ষার সময় ট্রলার মিস হয়ে যাওয়ায় আমরা সময়মতো পরীক্ষা দিতে পারি না। একটু বৃষ্টি হলেই ঘাটে ট্রলার না থাকায় স্কুলেও যেতে পারি না। এতে লেখাপড়ায় আমরা পিছিয়ে পড়ছি।

ভাঙ্গা উপজেলার নাসিরাবাদ ইউপি চেয়ারম্যান আলমগীর খান বলেন, এখানে সেতুর অভাবে যারা অসুস্থ রোগী, তারা ঠিকভাবে তাদের চিকিৎসা সেবাটা পায় না। আমি মনে করি, আমাদের এই সদরপুর থানার দুটি ইউনিয়ন চর নাসিরপুর ও চরমানাইরসহ ভাঙ্গা থানায় আমার নির্বাচনী এলাকা নাসিরাবাদের কিছু অংশ মিলে সবার প্রাণের দাবি এই সেতু। দরগাবাজারে সেতুটা হলে জনগণকে দুর্ভোগ পোহাতে হবে না। আমার পক্ষ থেকে জোর দাবি যাতে কর্তৃপক্ষ এদিকে একটু নজর দিয়ে জনগণের কষ্ট লাঘব করে।

এ ব্যাপারে সদরপুর উপজেলা প্রকৌলশী মো. আব্দুল মমিন বলেন, আমাদের পরিকল্পনা রয়েছে। যদি কোনো প্রকল্প বা ডিপিপির মাধ্যমে এটা অনুমোদন পায়, তবে আগামীতে সেতুটা এলজিইডির মাধ্যমে বাস্তবায়ন করার চেষ্টা করব। এ বিষয়ে ইতোমধ্যে ঊর্ধ্বতনদের সঙ্গে আলোচনা করেছি। আশা করছি, শিগগির ভালো কোনো সংবাদ পাওয়া যাবে। 

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : মোরছালীন বাবলা

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা