আহ্ছানিয়া মিশনের সম্পদ ও অর্থ আত্মসাৎকারীদের বিচার দাবিতে মানববন্ধন

সাতক্ষীরা আহ্ছানিয়া মিশনে জালিয়াতির মাধ্যমে সম্পদ ও মিশনের লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎকারী দুর্নীতিবাজদের বিচারের দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার (৪ জানুয়ারি) সকালে সাতক্ষীরা আহ্ছানিয়া মিশনের সহসভাপতি সাবেক জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবুল কাশেমের সভাপতিত্বে সাতক্ষীরা প্রেস ক্লাবের সামনে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

সাতক্ষীরা আহছানিয়া মিশনের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য আজহারুল ইসলাম পুটুর সঞ্চালনায় মানববন্ধনে বক্তব্য দেনÑ নলতা কেন্দ্রীয় আহ্ছানিয়া মিশনের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এনামুল হক খোকন, সাতক্ষীরা আহ্ছানিয়া মিশনের সাধারণ সম্পাদক ও সাতক্ষীরা প্রেস ক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোস্তাাফিজুর রহমান উজ্জল, কার্যনির্বাহী সদস্য আলহাজ আব্দুল খালেক, হাসিবুর রহমান রনি, সিনিয়র সাংবাদিক এসএম রেজাউল ইসলাম প্রমুখ। 

মানববন্ধনে সাতক্ষীরা আহ্ছানিয়া মিশনের সাধারণ সম্পাদক ও প্রেস ক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান উজ্জল বলেন, উপমহাদেশের বিশিষ্ট শিক্ষা সংস্কারক শাহসুফি হজরত খানবাহাদুর আহছানউল্লা (র.) ১৯৫৪ সালে সাতক্ষীরা আহছানিয়া মিশন প্রতিষ্ঠার জন্য শহরের মুনজিতপুরে ৪২ শতক জমি ক্রয় করেন। দলিলে ৪২ শতক জমি উল্লেখ থাকলেও বর্তমানে মিশনের ৩৩ শতক জমি ভোগদখলে রয়েছে। ১৯৪৮ সালে মিশন প্রতিষ্ঠার সময় রচিত গঠনতন্ত্রে মাদ্রাসা, এতিমখানা, লিল্লাহ বোডিং, হেফজখানা, লাইব্রেরি, দাতব্য চিকিৎসালয়, ছাপাখানা, গেস্ট হাউসসহ বেশ কিছু প্রতিষ্ঠানের কথা উল্লেখ করেন। অথচ জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক ফিরোজ কামাল শুভ্র, জেলা শ্রমিক লীগ নেতা তহিদুর রহমান ডাবলু, আব্দুর রব ওয়ার্সী, আবু শোয়েব এবেলসহ কয়েকজন ভূমিদস্যু মিশনের সব অঙ্গপ্রতিষ্ঠান দখলে নিয়ে নিয়োগ বাণিজ্য, ভুয়া জমি ক্রয়ের নামে এতিমখানার ফান্ড থেকে প্রায় ৪০ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছে। আবু শোয়েব এবেল মিশনের জমিতে ভবন নির্মাণ করে ৬ বছর ভাড়া না দিয়ে বহাল তবিয়তে ব্যবসা পরিচালনা করছেন। 

এসব বিষয়ে প্রতিকার চেয়ে জেলা প্রশাসক, সমাজসেবা অধিদপ্তরসহ সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দায়ের করা হলেও কোনো প্রতিকার না করে উল্টো ওই চক্রের প্রভাবে গত ৬ নভেম্বর মিশনের পূর্ণাঙ্গ কমিটি বাতিল করে নতুন অ্যাডহক কমিটি গঠন করেন জেলা প্রশাসক। বিষয়টি পুনর্বিবেচনার জন্য মিশনের ২১ কর্মকর্তা জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত আবেদন করলেও তিনি তা গ্রহণ না করায় তারা হাইকোর্টে একটি রিট পিটিশন দায়ের করে। মহামান্য হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ অ্যাডহক কমিটির কার্যক্রমের ওপর স্টে রুল জারি করেন। 

হাইকোর্ট স্টে রুল জারি করায় জেলা প্রশাসক গত ১৮ ডিসেম্বর মিশনের সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান উজ্জলকে অফিসে ডেকে নিয়ে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করেন। 

শুধু তাই নয়, জেলা প্রশাসক হাইকোর্টের আদেশ উপেক্ষা করে অ্যাডহক কমিটির কার্যক্রম পরিচালনা করছেন এবং ওই মহলটির দ্বারা প্রভাবিত হয়ে মিশন কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে বিদ্বেষমূলক বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করছেন। যা মিশনকে চরম ক্ষতির মুখে ফেলছে। বক্তারা প্রকৃত ঘটনা তদন্ত করে অপরাধীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জোর দাবি জানিয়েছেন। 

মানববন্ধনে সাতক্ষীরা আহ্ছানিয়া মিশন, নলতা কেন্দ্রীয় আহছানিয়া মিশনসহ বিভিন্ন মিশনের দুই শতাধিক সদস্য ও খান বাহাদুর আহছানউল্লার ভক্তবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।