এম পলাশ শরীফ, মোরেলগঞ্জ (বাগেরহাট)
প্রকাশ : ০৪ জানুয়ারি ২০২৫ ১২:৩৮ পিএম
বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ কৃষি ব্যাংক সড়কে অবস্থিত জেকে একাডেমির পাশে আবর্জনা ফেলায় এভাবেই স্তূপ হয়ে আছে। সম্প্রতি তোলা। প্রবা ফটো
ময়লা ও বর্জ্যের শহরে পরিণত হয়েছে বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ পৌরসভা। প্রতিষ্ঠাকালীন থেকেই অবহেলিত এ পৌরসভার কার্যক্রম যেন খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে। এলাকায় নেই কোনো ময়লা-আবর্জনা, পলিথিন ও বর্জ্য বিনষ্ট করার নির্দিষ্ট কোনো ডাম্পিং স্টেশন। যে কারণে বিভিন্ন সড়কের পাশে গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সংলগ্ন যত্রতত্রভাবে ফেলা রাখা হচ্ছে ময়লা-আবর্জনা। কর্তৃপক্ষেরও পরিকল্পিত উদ্যোগহীনতায় প্রতিনিয়ত দুর্গন্ধ পরিবেশে পৌরবাসীসহ উপজেলা শহরে আসা পথচারী, স্কুল-কলেজ শিক্ষার্থীদের বসবাস করতে হচ্ছে। এ ছাড়া নদী ও খালের পাড়েও ময়লা-আবর্জনা ফেলে রাখায় পানির সঙ্গে মিশে গিয়ে দূষিত হচ্ছে প্রকৃতি।
১৯৮৮ সালের ২৫
আগস্ট ‘গ’ শ্রেণিভুক্ত মোরেলগঞ্জ পৌরসভার কার্যক্রম হয়। ২০০৪ সালে নির্বাচনে অ্যাডভোকেট
মনিরুল হক তালুকদার প্রথম মেয়র নির্বাচিত হয়ে একটানা চারবারের মেয়র হিসেবে ১৭ বছর দায়িত্বে
থাকা অবস্থায় ২০১৭ সালে পৌরসভাটি ‘ক’ শ্রেণিভুক্ত হলেও পৌরবাসীর নাগরিক সেবায় কাঙ্ক্ষিত
সফলতা আসেনি। নাগরিক সেবা থেকে পৌরবাসী বঞ্চিত হয়েছে বছরের পর বছর। একাধিকবার পৌরকর
বৃদ্ধি হলেও যোগাযোগব্যবস্থা অনুন্নতই রয়ে গেছে। তেমন কোনো পরিবর্তন ঘটেনি। ৯টি ওয়ার্ডের
রাস্তা-ঘাট, পয়োনিষ্কাশন ড্রেনেজ ব্যবস্থা, ময়লা অপসারণ, জলাবদ্ধতা দূরীকরণে দৃশ্যমান
ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি।
গতকাল শুক্রবার
সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলা প্রশাসন এলাকার সড়কের পাশে, সাবেক কৃষি ব্যাংকসংলগ্ন ড্রেন,
বিভিন্ন অলি-গলি ময়লার স্তূপে পরিণত হয়েছে। পৌর পার্কের পাশে মাছের বাজারসংলগ্ন ও লতিফিয়া
কামিল মাদ্রাসার পেছনে নদীর তীরে একাধিক স্থানসহ শহরের বিভিন্ন জায়গায় যত্রতত্র স্তূপ
করে ফেলে রাখা হয়েছে পলিথিন, প্লাস্টিকসহ ময়লা-আবর্জনা। যেন ময়লার ভাগাড়। ডেঙ্গু আক্রান্ত
হচ্ছে অনেকে। অবস্থাদৃষ্টে ডাম্পিং স্টেশনহীন অপরিচ্ছন্নতার বর্জ্যের নগরী যেন এ পৌরসভা।
মোরেলগঞ্জ বাজারের
ব্যবসায়ী আব্দুর রাজ্জাক, মোনায়েম খান বলেন, বাজারের ব্যবসায়ীরা নিজস্ব অর্থায়নে ও
উদ্যোগে পরিচ্ছন্নতাকর্মী দিয়ে বাজারের দোকানের রাস্তা পরিষ্কার করান। তারপরও ড্রেনের
মশার প্রকোপে অতিষ্ঠ পৌর বাজারের ব্যবসায়ীরা। এক্ষেত্রে নিয়মিত কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ
প্রয়োজন।
মোরেলগঞ্জ পৌরসভা
নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ওয়াজিহুর রহমান বলেন, পৌরসভার বর্জ্য বিনষ্ট করার জন্য ডাম্পিংয়ের
জমি নির্ধারণে পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে, সিটিসিআরপি প্রকল্পের আওতায় বিভিন্ন ওয়ার্ডে
২৫ কিলোমিটার কার্পেটিং রাস্তা এবং ৬-৭ কিলোমিটার নতুন ড্রেনেজ ব্যবস্থা প্রকল্প ইতোমধ্যে
অনুমোদন হয়েছে। আগামী বছর থেকে এ কাজ শুরু হবে।
পৌর প্রশাসক ও মোরেলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. নাজমুল ইসলাম বলেন, পৌরসভার বর্জ্য বিনষ্ট করার ডাম্পিংয়ের অকৃষিজমি খোঁজা হচ্ছে। জমি পেলে অধিগ্রহণ করে জরুরিভাবে ডাম্পিং স্টেশন করা হবে। ইতোমধ্যে এ নিয়ে সভাও করা হয়েছে।