বাগেরহাট প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০১ জানুয়ারি ২০২৫ ১৪:১৮ পিএম
আপডেট : ০১ জানুয়ারি ২০২৫ ১৪:৩৪ পিএম
ছবি- সংগৃহীত
সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ও প্রজনন মৌসুমে কাঁকড়ার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সুন্দরবনে কাঁকড়া আহরণে দুই মাসের নিষেধাজ্ঞা শুরু হয়েছে। বুধবার (১ জানুয়ারি) থেকে ২৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সুন্দরবনের অভ্যন্তরে সকল নদী ও খালে এই নিষেধাজ্ঞা চলমান থাকবে।
এই সময়ে কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান কাঁকড়া ধরা, বিক্রয় ও সংরক্ষণ বা পরিবহন করতে পারবে না। এর ফলে বন বিভাগের পক্ষ থেকে কাঁকড়া আহরণের পাস (অনুমতিপত্র) বন্ধ রাখায় গহিন বনাঞ্চল থেকে লোকালয়ে ফিরেছেন সংশ্লিষ্ট জেলেরা।
বন বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, সুন্দরবনের বাংলাদেশ অংশের জলভাগে ১৪ প্রজাতির কাঁকড়া আছে। সুন্দরবন সংলগ্ন কয়রা উপজেলায় প্রায় তিন হাজার নৌকাকে সুন্দরবনে প্রবেশের অনুমতিপত্র দেওয়া হয়। উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, কয়রায় নিবন্ধিত জেলের সংখ্যা ১৩ হাজার ৫২৬ এবং এর প্রায় অর্ধেকই কাঁকড়া ধরার সঙ্গে যুক্ত। এই সময়টি কাঁকড়ার প্রজনন মৌসুম। কাঁকড়ারা এই সময়ে ডিম ছাড়ে এবং বংশবৃদ্ধির জন্য বিশেষভাবে সংবেদনশীল থাকে। কাঁকড়া আহরণ চালু থাকলে তাদের প্রজনন প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হয়। যা প্রাকৃতিক ভারসাম্য নষ্ট করে।
এ কারণে বন বিভাগের পক্ষ থেকে প্রতি বছর নির্দিষ্ট সময়ের জন্য নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। কেউ এই নিষেধাজ্ঞা অমান্য করলে বন আইনের আওতায় তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে জানিয়েছে বন কর্তৃপক্ষ।
এই উদ্যোগে সবার সহযোগিতা কামনা করেছে বন বিভাগ।
বন বিভাগের খুলনা অঞ্চলের বন সংরক্ষক মিহির কুমার দো প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘সুন্দরবনের কাঁকড়া প্রজাতি শুধু অর্থনৈতিক দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ নয়। এটি সুন্দরবনের খাদ্যশৃঙ্খল রক্ষায় ভূমিকা রাখে। প্রজনন মৌসুমে কাঁকড়াদের রক্ষা করা না গেলে এর দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব পড়বে পুরো সুন্দরবনের বাস্তুতন্ত্রে। প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষায় এ নিষেধাজ্ঞা মেনে চলার জন্য স্থানীয় জনগণ, জেলে এবং সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে। এরপরও কেউ যদি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে কাঁকড়া আহরণ করে, তাহলে তার বিরুদ্ধে বন আইনে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’