× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

পার্বত্য অঞ্চল

কালো বিনি চালের ভাপা পিঠা

রিকোর্স চাকমা, রাঙামাটি

প্রকাশ : ০১ জানুয়ারি ২০২৫ ১৩:২৩ পিএম

রাঙামাটি শহরের চিং হ্লা মং চৌধুরী মারী স্টেডিয়াম এলাকায় কালো বিনি চালের তৈরি ভাপা পিঠা বিক্রি করছেন গরিকা চাকমা ও সেবিকা চাকমা। সোমবার বিকালে তোলা। প্রবা ফটো

রাঙামাটি শহরের চিং হ্লা মং চৌধুরী মারী স্টেডিয়াম এলাকায় কালো বিনি চালের তৈরি ভাপা পিঠা বিক্রি করছেন গরিকা চাকমা ও সেবিকা চাকমা। সোমবার বিকালে তোলা। প্রবা ফটো

শীতের আমেজ ছড়িয়ে পড়েছে দেশের সব জায়গায়। এ সময় বাড়ি বাড়ি পড়ে শীতের পিঠা বানানোর ধুম। সময়ের ধারাবাহিকতায় বাণিজ্যিকভাবে রাস্তার পাশে ভাসমান কিংবা স্থায়ী দোকানেও বানানো হয় পিঠা। পার্বত্য জেলা রাঙামাটিতেও জেঁকে বসেছে শীত। ধোঁয়া ওঠা গরম গরম পিঠার দোকানগুলোয় ভিড় বাড়ে ভোজনরসিকদের। এ সময় কদর বাড়ে ভাপা পিঠার। তবে ভিন্ন রকম এক ভাপা পিঠা তৈরি হয় রাঙামাটি জেলা শহরের ভাসমান দোকানে। যেখানে তৈরি হয় কালো বিনি চালের ভাপা পিঠা। 

রাঙামাটি জেলা শহরের চিং হ্লা মং চৌধুরী মারী স্টেডিয়াম এলাকায় ভাসমান দোকান বসিয়ে বিক্রি হয় গরম গরম ধোঁয়া ওঠা কালো বিনি চালের তৈরি ভাপা পিঠা। বিকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ভিড় জমে দোকানগুলোয়। স্থানীয়দের পাশাপাশি পর্যটকদের কাছেও বেশ চাহিদা রয়েছে পাহাড়ের জুমে উৎপাদিত কালো বিনি চালের তৈরি ভাপা পিঠার। আর এই ভাপা পিঠা বিক্রি করে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হচ্ছে পাহাড়ি নারীরা।

সরেজমিনে দেখা যায়, বিকাল গড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে গরম ভাপ ওঠা কালো বিনি চালের ভাপা পিঠার স্বাদ নিতে ভিড় করছে স্থানীয় বিভিন্ন বয়সি লোকজনসহ পর্যটকরা। একেকটি পিঠা বিক্রি হচ্ছে বিশ টাকা দামে। বিনি চালের ভাপা পিঠা ছাড়াও রয়েছেÑ বরা পিঠা, সান্ন্যে পিঠা, কলা পিঠা, পাজনসহ মাছ ও মাংসের কাবাব।

চট্টগ্রাম থেকে বেড়াতে আসা আরাফাত নোমান বলেন, এই ধরনের পিঠা বিভিন্ন জায়গায় পাওয়া যায় না। পাহাড়ের জুমের কালো বিনি চালের তৈরি ভাপা পিঠা সুস্বাদু হয়ে থাকে। এ পিঠার খোঁজ পেয়ে এখানে খেতে এসেছি। খুব ভালো লাগল। 

স্থানীয় ইব্রাহিম খলিল বলেন, আমরা প্রায়ই মাঠে খেলা শেষ করে সন্ধ্যায় বন্ধুরা মিলে এখানে গরম গরম কালো বিনি চালের ভাপা পিঠা খেতে আসি। খুব ভালো লাগে। একদম তাজা। খাবারের দামও কম, মানেও বেশ ভালো।

কথা হয় স্থানীয় মঙ্গল কুমার চাকমার সঙ্গে। তিনি বলেন, বিকালে হাঁটতে বের হয়ে এখানে এসে দেখছি গরম গরম কালো বিনি চালের তৈরি ভাপা পিঠা বানানো হচ্ছে। তাই দেখে খেতে আসলাম। জুম চাষের কালো বিনি চাল দিয়ে তৈরি হয় এ পিঠা। যে কেউ খেয়ে মজা পাবে। দামেও কম, মাত্র বিশ টাকা। আমি নিজে দুটি খেয়েছি আর পরিবারের সবার জন্য নিয়ে যাব ভাবছি। 

বিক্রেতা গরিকা চাকমা বলেন, আমরা কালো বিনি চালগুলো ব্যবসায়ীদের থেকে কিনে থাকি। দুই জনে মিলে এখানে বিকাল হতে সন্ধ্যা পর্যন্ত ভাপা পিঠা বিক্রি করি। সন্ধ্যায় পিঠা খাওয়ার ব্যাপক ভিড় জমে। এখানে স্থানীয়দের পাশাপাশি বাইরের পর্যটকরাও আসে পিঠা খেতে। অন্যান্য পিঠার চাইতে কালো বিনি চালের তৈরি ভাপা পিঠার চাহিদাটা বেশি। একেকটা পিঠা বিশ টাকা করে বিক্রি করি। এভাবে দৈনিক বেচা-কেনার ওপর নির্ভর করে দুই হতে তিন হাজার টাকা আয় হয়। এতে করে আমরাও আর্থিকভাবে কিছুটা স্বাবলম্বী হতে পারছি। 

আরেক বিক্রেতা পরানি চাকমা বলেন, আমি তিন বছর ধরে শীতের মৌসুমে এখানে পিঠা বিক্রি করছি। এতে পরিবারের কিছুটা আয় বেড়েছে। মূলত কালো বিনি চালগুলো গুঁড়ো করে, নারিকেল ও গুড় দিয়ে এই ভাপা পিঠা তৈরি করি। সবার আর্কষণ থাকে কালো বিনি চালের ভাপা পিঠার প্রতি। তাই এই পিঠার চাহিদাও রয়েছে। বিকাল গড়ার সঙ্গে সঙ্গেই এখানে পিঠা খাওয়ার ভিড় জমে। দৈনিক কখনও দুই হাজার আবার কখনও চার হাজার টাকার পর্যন্ত এই ভাপা পিঠা বিক্রি হয়। এতে অন্য খরচগুলো বাদ দিয়ে অর্ধেকের অর্ধেক লাভ থাকে। 

বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুাটর শিল্প করপোরেশন (বিসিক) রাঙামাটি জেলা কার্যালয়ের সহকারী মহাব্যবস্থাপক ইসমাইল হোসেন বলেন, পিঠা তৈরির সঙ্গে জড়িত স্থানীয় পাহাড়ি নারীদের আমরা প্রশিক্ষণ দিয়ে তাদের ঋণের ব্যবস্থা করতে কর্মসংস্থান ব্যাংকে সুপারিশ করতে পারি।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : মোরছালীন বাবলা

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা