× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

নিম্নমানের সামগ্রীতে সড়ক নির্মাণ, স্থানীয়দের ক্ষোভ

মাহাবুবুর রহমান মিঠুন, ঈশ্বরদী (পাবনা)

প্রকাশ : ০১ জানুয়ারি ২০২৫ ১২:৩৯ পিএম

পাবনার ঈশ্বরদীতে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) আওতাধীন একটি সড়ক নির্মাণে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। প্রবা ফটো

পাবনার ঈশ্বরদীতে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) আওতাধীন একটি সড়ক নির্মাণে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। প্রবা ফটো

পাবনার ঈশ্বরদীতে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) আওতাধীন একটি সড়ক নির্মাণে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে স্থানীয়রা। বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছে তারা। 

এলজিইডি সূত্রে জানা গেছে, পদ্মা নদীর সাঁড়াঘাটের বালুমহালের ৪০ থেকে ৪৫ টন ওজনের ট্রাক চলাচল করায় শহরের রেলগেট থেকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের সামনে হয়ে সাঁড়া ঝাউদিয়া স্কুল, সিভিলহাট তালতলা মোড় পর্যন্ত প্রায় ছয় কিলোমিটার দীর্ঘ সড়কটি দীর্ঘদিন ধরে চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়ে। চলতি বছরের মাঝামাঝিতে ৯ কোটি ৮৩ লাখ টাকা ব্যয়ে রাজশাহীর ঘোড়ামারা সাহেব বাজার এলাকার বরেন্দ্র কনস্ট্রাকশন লিমিটেড নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সড়কটির নির্মাণকাজ শুরু করে। তবে নতুন প্রযুক্তিতে সড়কটির চলমান কাজ নিয়ে জনমনে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। ইটের খোয়ার সঙ্গে মাটি মিশিয়ে পানিতে ভিজিয়ে করা হচ্ছে হালকা কাদাময়। এক দিন পর সেই কাদাময় ইটের খোয়া ফেলা হচ্ছে সড়কে। এসব দেখে স্থানীয়রা কাজের মান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। 

তবে ঈশ্বরদী উপজেলা প্রকৌশলী বলছেন, সড়কটি সম্পূর্ণ নতুন এক প্রযুক্তিতে (ওয়েট মিক্স মেকাডাম-ডব্লিউএমএম) নির্মাণ করা হচ্ছে। এ পদ্ধতিতে নানা গ্রেডের অ্যাগ্রিগ্রেড খোয়া মিশিয়ে সড়ক নির্মাণে ব্যবহার করা হয়। 

সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা গেছে, ঈশ্বরদী পৌর স্টেডিয়াম খেলার মাঠে রাস্তার উপকরণ ইট, বালু, খোয়া, মাটি মেশানোর জন্য রাখা হয়েছে। ইটের খোয়ার সঙ্গে মাটি মিশিয়ে পানিতে ভিজিয়ে খোয়াগুলো একদিকে স্তূপ করে রাখা হচ্ছে। সেই কাদামাখা খোয়াগুলো সড়কে ফেলে রোলারের কাজ চলছে। সেখানে কাজগুলো দাঁড়িয়ে পরিদর্শন করছে উপজেলা প্রকৌশলী বিভাগ ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোকজন। 

এ সময় স্থানীয় বাসিন্দা হাফিজুর রহমান, মনিরুল ইসলাম, সাহাবুল সরদার ও জাহাঙ্গীর আলম অভিযোগ করেন, প্রায় ১০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণাধীন সড়কটিতে নিম্নমানের ও কাদা মেশানো ইটের খোয়া ব্যবহার করা হচ্ছে। আবার সড়কটি মাত্র ১৫ থেকে ২০ টন ওজন ধারণক্ষমতা করে নির্মাণ করা হচ্ছে। কিন্তু এই সড়ক দিয়ে চলে অন্তত ৪০ থেকে ৫০ টন ওজনের বালুবোঝাই ট্রাক। সে হিসেবে ১০ কোটি টাকা ব্যয়ের এই রাস্তাটি ঠিক কত দিন টিকবে তা নিয়ে সন্দেহ দেখা দিয়েছে।

তবে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বরেন্দ্র কন্সট্রাকশন লিমিটেডের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিনিধি আলহাজ মো. সৈকত আলী বলেন, কোনো নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে সড়ক নির্মাণ হচ্ছে না। জনগণ না বুঝে এসব অভিযোগ করছে। খোয়ার সঙ্গে মাটি মেশানো দেখে তারা মনে করছে নিম্নমানের সামগ্রী। এটি মূলত নতুন একটি আইটেম যা ডব্লিউএমএম নামে পরিচিত। এতে ১৫ শতাংশ বালি ও ৮৫ শতাংশ খোয়া থাকবে। এগুলো সব মিশিয়ে ২৪ ঘণ্টা জাগ দিয়ে রেখে তারপর ব্যবহার করা হচ্ছে। আরেকটি বিষয় হলোÑ এক ইটভাটা থেকে তো সব খোয়া পাওয়া যাবে না। ভিন্ন ভিন্ন ভাটা থেকে ইট এনে খোয়া তৈরি করা হচ্ছে। প্রত্যেক ভাটার খোয়া আলাদা আলাদা। ভাটামালিকদের পক্ষ থেকে প্রতি এক লাখ ইটে সামান্য কিছু ইট নিম্নমানের চলে আসে। সেগুলো দেখে মনে হয় সবকিছুই নিম্নমানের। 

ঈশ্বরদী উপজেলা প্রকৌশলী মো. এনামুল হক কবির বলেন, নিম্নমানের ইটের খোয়ার সঙ্গে মাটি মিশিয়ে সড়কে দেওয়া হচ্ছেÑ এলাকার কিছু মানুষের এমন অভিযোগ সত্য নয়। এটা নতুন পদ্ধতি। এ কারণে স্থানীয় লোকজন বুঝতে না পেরে অভিযোগ করছে। গুণগত মান ঠিক রেখে কাজ করা হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, এলজিইডির নতুন পদ্ধতিতে (ডব্লিউএমএম) ঈশ্বরদীতে এই প্রথম এ সড়কের কাজ চলছে। সড়কটির দৈর্ঘ্য ৫ দশমিক ৬৩ কিলোমিটার, প্রস্থ ৫ দশমিক ৫ মিটার হবে। গড়ে সাড়ে ৬ ইঞ্চি নতুন এ পদ্ধতিতে খোয়া ফেলা হচ্ছে। এর ওপর কার্পেটিং হবে দেড় ইঞ্চি (৪০ এমএম)। তিনি বলেন, সড়কটির ধারণক্ষমতা হবে ১৫ থেকে ২০ টন। কিন্তু সড়কে চলাচল করে বালুমহালের ১০ চাকার অন্তত ৪০ থেকে ৪৫ টনের ট্রাক। এ কারণে সড়কগুলো দ্রুত নষ্ট হয়ে যায়। এবার নতুন নির্মিত সড়কে উপজেলাসংলগ্ন একটি বার স্থাপন করে নেওয়া হবে যাতে ভারী যানবাহন প্রবেশ না করে। বর্তমানে যে সড়ক নির্মাণ করা হয়েছে তা অনায়াসে ১০ বছর টিকবে বলে চ্যালেঞ্জ করলাম। 

এ ব্যাপারে অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী ও প্রকল্প পরিচালক (প্রেষণ) মো. আনোয়ার হোসেন বলেন,  সড়ক নির্মাণের কাজ আমার দায়িত্বে নেই। তবে ডব্লিউবিএম ও ডব্লিউএমএম দুইটি পদ্ধতির মধ্যে ডব্লিউএমএম পদ্ধতিটি সবচেয়ে ভালো। এ বিষয়ে স্থানীয় এলজিইডি অফিসে কথা বললে বিস্তারিত জানতে পারবেন।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : মোরছালীন বাবলা

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা