বেতাগী (বরগুনা) প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০১ জানুয়ারি ২০২৫ ১১:৩৫ এএম
বরগুনার বেতাগী উপজেলার হোসনাবাদ ইউনিয়ন পরিষদ-সংলগ্ন দক্ষিণ হোসনাবাদের জলিসা বাজার সড়কের ইট তুলে ও দুইপাশের গাছ কেটে বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার তোলা। প্রবা ফটো
বরগুনার বেতাগীতে উপজেলা পরিষদ নির্মিত একটি সড়কের ইট ও সড়কের পাশের তালগাছ বিক্রির অভিযোগ উঠেছে দুই ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ইউনিয়ন পরিষদের সচিব শৈলেন চন্দ্র রায় চারজনের বিরুদ্ধে থানায় একটি মামলা করলে এক ইউপি সদস্যসহ তিনজনকে আটক করেছে থানা পুলিশ।
আটককৃতরা হলেনÑ বর্তমান ইউপি সদস্য ও হোসনাবাদ ইউনিয়ন যুবলীগের সহসভাপতি মো. মাসুদ আলম মৃধা, তার সঙ্গী জালাল হাওলাদার ও মো. রিয়াজ।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার হোসনাবাদ ইউনিয়ন পরিষদ-সংলগ্ন দক্ষিণ হোসনাবাদের জলিসা বাজারের রাস্তাটি কয়েক বছর আগেই নির্মাণ করে উপজেলা পরিষদ। বর্তমানে পানি উন্নয়ন বোর্ড নতুন করে রাস্তাটির ওপর বাঁধ নির্মাণ করছে। কাজের সুবিধার্থে ওই রাস্তার প্রায় ২০ হাজার ইট উঠিয়ে তা পরিষদের সামনে স্তূপ করে রাখা হয়। কিন্তু ওই ওয়ার্ডের বর্তমান সদস্য মো. মাসুদ আলম মৃধা ও সাবেক ইউপি সদস্য মো. সিদ্দিকুর রহমান গত রবিবার রাতে ৩ হাজার পিস ইট অন্যত্র বিক্রি করে দেন। পাশাপাশি সড়কের পাশে লাগানো প্রায় ২০টি তালগাছ কেটে তার অধিকাংশ বিক্রি করেন অভিযুক্তরা। ইট বিক্রির খবরে স্থানীয়রা থানা পুলিশকে জানালে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে দুই ক্রেতাকে আটক করে। এছাড়া সোমবার অভিযুক্ত এক ইউপি সদস্য মাসুদ আলম ইউএনওর সাথে দেখা করতে গেলে তাকে পুলিশে সোপর্দ করেন ইউএনও।
স্থানীয় বাসিন্দা মো. বজলুর রহমান বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাজ শুরু হওয়ায় রাস্তার ইটগুলো তুলে পরিষদের সামনে রাখা হয়। সোমবার রাতে পুলিশ এসে বিক্রীত কিছু ইট উদ্ধার করে। এ সময় ইটের ক্রেতারা জানায়, তারা মাসুদ ও সিদ্দিক মেম্বারের কাছ থেকে ইটগুলো কিনেছে।
আরেক বাসিন্দা সাহেব আলী বলেন, সিদ্দিক ও মাসুদ মেম্বারই রাস্তার ইট উঠিয়ে ইউনিয়ন পরিষদে ভবনের সামনে রাখে।
ভারপ্রাপ্ত ইউপি চেয়ারম্যান আলতাফ হোসেন ফরাজী বলেন, ‘আমি ইটগুলো তুলে পরিষদের সামনে স্তূপ করে রাখতে বলেছিলাম। তবে ইট ও গাছ বিক্রির বিষয়ে আমাকে তারা কোনো কিছুই জানায়নি।’
অভিযুক্ত ইউপি সদস্য মো. মাসুদ আলম মৃধা বলেন, ‘বেড়িবাঁধের কাজ শুরু হওয়ায় চেয়ারম্যানের নির্দেশে আমি ইটগুলো তুলে পরিষদের সামনে স্তূপ করে রাখি। তবে সেখান থেকে কে বা কারা ইট ও গাছ বিক্রি করেছে তা জানি না।’
ইউপি সচিব শৈলেন চন্দ্র রায় বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাজের স্বার্থে ইটগুলো তুলে ভবনের সামনে স্তূপ করা হয়। কিন্তু ওই দুই ইউপি সদস্য ইটগুলো রাতের আঁধারে বিক্রি করায় ইউএনও স্যারের নির্দেশে চারজনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করছি।
বেতাগী থানার ওসি মো. মনিরুজ্জামান বলেন, ইট বিক্রির ঘটনায় ইউপি সচিব থানায় একটি মামলা করেছেন। এ ঘটনায় ইউপি সদস্য মাসুদসহ তিনজনকে আটক করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
বেতাগী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. বশির গাজী বলেন, সরকারি ইট বিক্রির সাথে বর্তমান ও সাবেক দুই মেম্বারের জড়িত থাকার কথা জানতে পেরেছি। অভিযুক্ত এক ইউপি সদস্য আমার কাছে এসেছিল, আমি তাকে পুলিশে সোপর্দ করেছি।