গাজীপুর প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২২ ডিসেম্বর ২০২৪ ২১:১২ পিএম
গাজীপুরে কল-কারখানার বর্জ্যে মোগড় খালের দুর্গন্ধযুক্ত দূষিত পানি থেকে বাঁচতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছে এলাকাবাসী। দূষিত পানির কারণে ফসল হচ্ছে না, এলাকার অধিকাংশ মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে বিভিন্ন রোগে।
রবিবার (২২ ডিসেম্বর) দুপুরে গাজীপুর মহানগরীর জাঝড়ে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। পানির দূষণরোধে দ্রুত পরিবেশ উপদেষ্টার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন তারা। মানববন্ধনে এলাকার শিশু, নারী-পুরুষসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার কয়েকেশ মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নেয়।
এ সময় বক্তব্য দেনÑ শ্রমিক দল নেতা আক্তারুজ্জামান বাবুল, হাজী মুজিবুর রহমান, হাজী মো. নওয়াব আলী, আব্দুর রশিদ, আব্দুর রহিম, মো. সেলিম মিয়া, আবু হানিফ প্রমুখ।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, গাজীপুর মহানগরীর ভোগড়া বাইপাস মোড় থেকে নগরীর ১৫, ১৭, ৩২ নম্বর ওয়ার্ডসহ কয়েকটি ওয়ার্ডের ওপর দিয়ে মোগড় খালটি প্রবাহিত হয়েছে। প্রায় ৩০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এ খাল বিভিন্ন এলাকায় বিভিন্ন নামে পরিচিত ও প্রবাহিত হয়ে টঙ্গী খালে গিয়ে শেষ হয়েছে। মহানগরীর ভোগড়া ও আশাপাশের এলাকার বিভিন্ন কলকারখানা, বাসাবাড়ি ও বাজারের দূষিত পানি এ খাল দিয়ে প্রবাহিত হয়। খালটির পাশে যারা বসবাস করে, দূষিত পানির ঝাঁঝালো গন্ধে বসবাস করা দুষ্কর হয়ে পড়েছে। খালপাড়ের জমিতে কোনো ফসলাদি হয় না। লালন পালন করা যায় না কোনো গৃহপালিত প্রাণীও। এ ছাড়া খালের পাড়ে বসবাসকারী শিশু-নারী-পুরুষ ও সাধারণ মানুষের নানা প্রকার রোগবালাই লেগেই আছে।
মোগড়খাল এলাকার বাসিন্দা নাজিম উদ্দিন বলেন, কারখানার বর্জ্যে ও ধোঁয়ায় আমরা এলাকায় বসবাস করতে পারছি না। আশপাশের কারখানায় কাজ করা যেসব শ্রমিক আমাদের এখানে ভাড়া থাকত, তারা এখন রুম ছেড়ে দিচ্ছে। এ ছাড়া পানিবাহিত রোগবালাই প্রতিনিয়ত বাড়ছে।
জাঝর এলাকার বাসিন্দা তৌফিকুর রহমান বলেন, মোগড় খাল নামের যে খালটি সেখানে আমরা ছোটবেলায় গোসল করতাম। অথচ এখন সেখানে নামা যায় না। কুচকুচে কালো পানি, সাথে দুর্গন্ধ। গত ১ মাসে খালের পানি লাগায় বেশ কয়েকজন অসুস্থ হয়ে গেছে।
স্থানীয় বাসিন্দা আক্তারুজ্জামান বাবুল বলেন, খালটির দূষণে প্রচণ্ড দুর্গন্ধ হয়। দিনের বেলায় দুর্গন্ধ কিছুটা কম থাকলেও রাতে দুর্গন্ধ বাড়ে। দিনে এবং রাতে প্রচুর মশা দেখা যায়। এসব মশা হতে ডেঙ্গু রোগী বাড়ছে প্রতিদিন। পানি এতই কালো যা ব্যবহার অনুপযোগী। কৃষকরা কৃষিসেচেও এ খালের কোনো পানি ব্যবহার করতে পারছেন না। আমরা কয়েকবার এ খালদূষণের বিষয়টি গাজীপুরের জেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তরকে জানালেও কোনো প্রতিকার পাওয়া যাচ্ছে না।