× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

বেদানা চাষে দারুণ সফল এক দম্পতি

শাহিনুর সুজন, চারঘাট (রাজশাহী)

প্রকাশ : ১৯ ডিসেম্বর ২০২৪ ০৮:৫৭ এএম

রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার হলিদাগাছী গ্রামে বেদানা বাগান পরিচর্যায় শিবলী সাদিক ও তাবাসসুম তাসনিম দম্পতি। প্রবা ফটো

রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার হলিদাগাছী গ্রামে বেদানা বাগান পরিচর্যায় শিবলী সাদিক ও তাবাসসুম তাসনিম দম্পতি। প্রবা ফটো

দানায় ভরপুর অথচ নাম বেদানা। পুষ্টিকর ফল হিসেবে দেশে বেদানার চাহিদা সারা বছরই থাকে শীর্ষে। আবহাওয়াগত কারণে বেদানা চাষে অনেকটাই পিছিয়ে বাংলাদেশ। আমদানিনির্ভরতার মাধ্যমে মিটে দেশের চাহিদা। তবে সম্প্রতি বেদানা চাষে সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে রাজশাহীর চারঘাট এলাকায়।

উপজেলার হলিদাগাছী গ্রামে সমতল ভূমিতে বেদানা চাষ করে চমক দেখিয়েছেন কৃষি উদ্যোক্তা দম্পতি শিবলী সাদিক ও তাবাসসুম তাসনিম। বেদানা চাষে এই দম্পতির সাফল্যে প্রতিদিনই পার্শ্ববর্তী উপজেলাসহ বিভিন্ন স্থান থেকে বাগান দেখতে ও চারা কিনতে আসছে মানুষ। শিবলী সাদিক পেশায় একজন ব্যবসায়ী ও তাবাসসুম তাসনিম গৃহিণী। এ দম্পতি নিজেদের কাজের পাশাপাশি বেদানা চাষে রাজশাহী জেলায় নিজেদের সাফল্যের নজির স্থাপন করেছেন; যা এলাকার শত শত মানুষকে প্রেরণা জোগাচ্ছে।

সরেজমিন দেখা যায়, সারি সারি গাছে লাল, গোলাপি ও হালকা সবুজাভ রঙের বেদানা ঝুলছে। কোনো গাছে ফুল দেখা দিয়েছে, কোনোটাতেয় ফুল থেকে ফলে রূপান্তর ঘটছে। কৃষি দম্পতির বাড়ির পাশের বেদানা বাগানের এমন দৃশ্য দেখতে ভিড় করছে মানুষ।

জানা যায়, ২০১৮ সালে ভারতে বেড়াতে গিয়ে একটি গাছের চারা নিয়ে আসেন শিবলী। বাড়ির উঠানে সেই চারা রোপণ করেন তিনি। দুই বছর পর গাছটি বড় হলে ১৫টি কলম তৈরি করেন। সেই ১৫টি গাছ বাড়ির পাশে রোপণ করেন স্বামী-স্ত্রী মিলে। দুই বছর পর গাছগুলো থেকে পর্যায়ক্রমে ৩০০ কলম তৈরি করেন। ১৫ মাস আগে দুই বিঘা জমিতে সেই গাছ রোপণ করেছেন। ছয় মাস পর থেকে ১৬০টি গাছে ফল আসা শুরু হয়েছে। ফল আসা শুরুর পর গত নয় মাসে প্রতিটি গাছ থেকে গড়ে চার কেজি হারে বেদানা সংগ্রহ করে বাজারে বিক্রি করেছেন তারা। পাশাপাশি গাছের বাড়তি অংশগুলো ছাঁটাই না করে সেগুলো দিয়ে কলম তৈরি করে বিক্রি করছেন প্রতিটি ৩৫০ টাকা দামে। বেদানা ও বেদানার কলম বিক্রি করে গত নয় মাসে প্রায় তিন লাখ টাকা আয় করেছে এ দম্পতি।

তরুণ উদ্যোক্তা শিবলী সাদিক বলেন, পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে ইলেকট্রনিকস বিষয়ে ডিপ্লোমা শেষ করে কাজ খুঁজে পাচ্ছিলাম না। ছোট একটা ব্যবসা শুরু করেছিলাম। ভারত থেকে বেদানার চারা এনে ১৫টি গাছে ভালো ফল পেয়ে স্ত্রীর পরামর্শে বাগান বড় করার চিন্তা করি। বাড়ির পাশের দুই বিঘা জমিতে ৫০ হাজার টাকা খরচ করে পর্যায়ক্রমে ৩০০ কলম রোপণ করি। চারা রোপণের ছয় মাস পর থেকেই ফল আসা শুরু হয়েছে। বাজারে বেদানার চাহিদা প্রচুর, দামও ভালো। ৩৫০-৪৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছি। এ বছর প্রতি গাছে চার কেজি হারে ফল পেলেও সামনের মৌসুমে ১০ কেজি ছাড়িয়ে যাবে। এতে কমপক্ষে ১০ লাখ টাকার বেদানা বিক্রির আশা আছে।

তাবাসসুম তাসনিম বলেন, বাড়ির পাশেই আমাদের বেদানা বাগান। ছোট থেকেই কৃষিকাজে বাবাকে সহযোগিতা করতাম। এখন সংসারের কাজের পর বাড়তি সময় বেদানা বাগানের পেছনে ব্যয় করি। শ্রমিকদের সঙ্গে নিয়ে বাগানের পরিচর্যা করি। প্রতি সপ্তাহে গাছে ছত্রাকনাশক প্রয়োগ করতে হয়। এ ছাড়া তেমন রোগবালাই হয় না। দূর-দূরান্ত থেকে লোকজন এসে দেখতে। তখন মনে হয় দুজনের প্রচেষ্টায় আমাদের পরিশ্রম সার্থক হয়েছে। আমরা আরও পাঁচ বিঘা জমিতে বেদানার বাগান করব, জমি তৈরির কাজ চলছে।

স্থানীয় শিক্ষক জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, দেশের মাটিতে বেদানা চাষ হচ্ছে, এটা অবাক করার মতো বিষয়। বেদানা বাগানের প্রতিটি গাছে ফল ধরেছে, খেতেও ভীষণ সুস্বাদু। শিবলী ও তাসনিম দম্পতির বেদানা বাগান দেখতে বিভিন্ন এলাকা থেকে লোকজন এসে ভিড় করছেন, এটা আমাদের গ্রামের জন্যও গর্বের।

চারঘাট উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আল মামুন হাসান বলেন, নিজ উদ্যোগ ও প্রচেষ্টায় বেদানা বাগান গড়ে তুলেছে শিবলী ও তাসনিম দম্পতি। আমরা প্রতিনিয়ত তাদের বাগানের খোঁজখবর নিয়ে পরামর্শ দিয়ে থাকি। বারোমাসি জাতের বেদানা হওয়ায় সারা বছরই তারা ফল বিক্রি করতে পারছেন। তাদের সফলতা দেখে এলাকার অন্য কৃষি উদ্যোক্তারাও ভিনদেশি ফল চাষে আগ্রহী হচ্ছেন।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : মোরছালীন বাবলা

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা