লক্ষ্মীপুর প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪ ২০:১৩ পিএম
আপডেট : ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪ ২০:২২ পিএম
লক্ষ্মীপুর বালিকা বিদ্যানিকেতনের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক লিটন চন্দ্র দেবনাথ ও সহকারী শিক্ষিকা ফরিদা ইয়াছমিনের পদত্যাগের দাবিতে পৃথক বিক্ষোভ মিছিল করেছে শিক্ষার্থীরা। এর মধ্যে শিক্ষার্থীদের এক অংশ শিক্ষক লিটনের পক্ষে ফরিদার পদত্যাগ, অপর অংশ ফরিদার পক্ষে লিটনের পদত্যাগ দাবি করে।
বুধবার (৪ ডিসেম্বর) দুপুরে প্রায় দেড় ঘণ্টা পৃথকভাবে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ করে লক্ষ্মীপুর-ঢাকা আঞ্চলিক মহাসড়ক অবরোধ করে রাখে শিক্ষার্থীরা। এ সময় সড়কের দুই পাশে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়।
এর আগে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ থেকে শিক্ষার্থীরা দুই অংশে বিভক্ত হয়ে শিক্ষক লিটন ও ফরিদার পক্ষে-বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করে। পরে মিছিল নিয়ে তারা জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে এসে জড়ো হয়।
বিক্ষোভে শিক্ষার্থীদের এক পক্ষের অভিযোগ, ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক লিটন চন্দ্র দেবনাথ বিভিন্নভাবে বিদ্যালয়ের বিভিন্ন শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের হয়রানি ও নির্যাতন করে আসছেন। তার বিরুদ্ধে বিদ্যালয়ের আয়াকে ধর্ষণেরও অভিযোগ রয়েছে।
আরেক পক্ষের অভিযোগ, সহকারী শিক্ষিকা ফরিদা ইয়াছমিনের কাছে প্রাইভেট না পড়লে নানান অজুহাতে তিনি শিক্ষার্থীদের মারধর করেন। একই সঙ্গে সহকর্মীদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন। অসদাচরণের ঘটনায় গত ২১ নভেম্বর বিদ্যালয়ের কম্পিউটার শিক্ষক শাহনাজ আক্তার পরিচালনা কমিটির সভাপতির কাছে ফরিদার বিরুদ্ধে অভিযোগও করেছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক লিটন চন্দ্র দেবনাথ ও সহকারী শিক্ষিকা ফরিদা ইয়াছমিনের মধ্যে দ্বন্দ্বের ঘটনায় গত কয়েক দিন ধরেই বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তাপ বিরাজ করছে। গতকাল শিক্ষার্থীদের বার্ষিক পরীক্ষা ছিল। কিন্তু শিক্ষক লিটন ও ফরিদা বিদ্যালয়ে এসে বাগবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন। তারা শিক্ষার্থীদের সঙ্গেও অশালীন আচরণ করার পরই দুই শিক্ষকের পক্ষে-বিপক্ষে শিক্ষার্থীরাও নিজেদের মধ্যে বিবাধে জড়িয়ে পড়ে। একপর্যায়ে শিক্ষক লিটন ও ফরিদার পদত্যাগের দাবিতে মিছিল নিয়ে জেলা প্রশাসক (ডিসি) অফিসের সামনে গিয়ে সড়ক অবরোধ করে। পরে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) সম্রাট খীসা ঘটনাস্থল এসে শিক্ষার্থীদের আশ্বস্ত করলে শিক্ষার্থীরা অবরোধ তুলে নেয়।
এ বিষয়ে সহকারী শিক্ষিকা ফরিদা ইয়াছমিনের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি, খুদেবার্তা দিলেও তিনি কোনো সাড়া দেননি।
ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক লিটন চন্দ্র দেবনাথ বলেন, শিক্ষক ফরিদা ও আয়া আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে। এতে শিক্ষার্থীরা তাদের বিরুদ্ধে ক্ষুদ্ধ হয়ে উঠেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন শিক্ষক বলেন, প্রাইভেট পড়ানোকে কেন্দ্র করে লিটন ও ফরিদার সঙ্গে দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়। এখন নিজেদের দ্বন্দ্ব তারা শিক্ষার্থীদের মাঝে ছড়িয়ে দিয়েছে।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) সম্রাট খীসা বলেন, দুই শিক্ষককেই কারণ দর্শানোর নোটিস দেওয়া হবে এবং জরুরি ভিত্তিতে বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।