নরসিংদী প্রতিবেদক
প্রকাশ : ৩০ নভেম্বর ২০২৪ ২১:০৪ পিএম
আপডেট : ৩০ নভেম্বর ২০২৪ ২১:০৯ পিএম
মুসল্লিদের দেওয়া ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটামের মধ্যেই অপসারণ করা হয়েছে নরসিংদী পৌরশহরের হাড়িধোয়া নদীর তীরে গড়ে তোলা ইসকনের অস্থায়ী অনুষ্ঠানস্থল। শনিবার (৩০ নভেম্বর) সকাল থেকেই নরসিংদীর ইসকন মন্দির কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের মাধ্যমে অস্থায়ী অনুষ্ঠানস্থল অপসারণে কাজ শুরু করে বিকালের মধ্যেই বেশিরভাগ সামগ্রী তারা অপসারণ করে ফেলে। এ সময় আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন ছিল।
জানা যায়, নরসিংদীতে গত শুক্রবার ইসকন নিষিদ্ধের দাবিতে ও আইনজীবী সাইফুল ইসলামকে হত্যার প্রতিবাদে বাদ জুমা বিভিন্ন মসজিদ-মাদ্রাসা থেকে মুসল্লি ও ছাত্র-জনতা পৌরসভা মোড়ে এসে সমবেত হয়। পরে একটি বিক্ষোভ মিছিল শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে রেলওয়ে স্টেশন মসজিদের সামনে এসে জড়ো হয়। সেখানে অনুষ্ঠিত সভায় ইসকনকে ‘জঙ্গি সংগঠন’ আখ্যা দিয়ে নিষিদ্ধের দাবি জানিয়ে শহরের হাড়িধোয়া নদীর তীরে গড়ে তোলা আস্তানা উচ্ছেদে জেলা প্রশাসনকে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেন মুসল্লিরা।
ইসকন কর্তৃপক্ষ জানায়, ইসকন প্রতিবছর জাঁকজমকভাবে রথযাত্রার আয়োজন করে। তবে নরসিংদী ইসকন মন্দিরের সামনে খালি জায়গা না থাকায় প্রশাসন থেকে অনুমতি নিয়ে হাড়িধোয়া নদীর তীরে অস্থায়ী স্থাপনা করে অনুষ্ঠান করে থাকে। অনুষ্ঠান শেষে তারা নিজেরাই এটা অপসারণ করে নেয়।
নরসিংদী ইসকন মন্দিরের অধ্যক্ষ পতিত পাবন নিমাই দাস বলেন, মন্দিরের খালি জায়গা না থাকার কারণে প্রশাসনের অনুমতিসাপেক্ষে নদী তীরের এ জায়গাটা অনুষ্ঠানস্থল হিসেবে ব্যবহার করা হয়। অনুষ্ঠান শেষেই বেশিরভাগ অংশ খুলে ফেলা হয়। আর নদীর পানি কমে গেলে বাকিটুকু অপসারণ করা হয়। এখন দেশের পরিস্থিতি বিবেচনায় আমরা নিজ উদ্যোগেই এটা অপসারণ করেছি। প্রশাসন আমাদের সহযোগিতা করছে।
হিন্দু বৌদ্ধ কল্যাণ ফ্রন্টের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব ও নরসিংদী জেলা কৃষক দলের সদস্য সচিব দীপক কুমার বর্মণ প্রিন্স বলেন, এটা উৎসব উপলক্ষে অস্থায়ী স্থাপনা করে অনুষ্ঠানের জন্য ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এখন দেশের সার্বিক পরিস্থিতির কারণে বিষয়টা সামনে চলে আসায় ইসকন নিজের ইচ্ছায় স্থাপনাগুলো সরিয়ে নিচ্ছে।
জমিয়তে ওলামায়ে ইসলাম নরসিংদী জেলা যুগ্ম আহ্বায়ক মুফতি রফিকুল ইসলাম বলেন, স্থানীয় কওমি মাদ্রাসা পরিষদ, ওলামায়ে একরাম ও মুসল্লিদের ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটামের পরিপ্রেক্ষিতে হাড়িধোয়া নদীর ওপর অবৈধভাবে গড়ে তোলা ইসকনের আস্তানা অপসারণ করে নেওয়া হচ্ছে। ইসকন হিন্দুদের কোনো সংগঠন নয়, হিন্দুদের কেউ এটার প্রতিনিধিত্ব করে না। তারা ভারতের দালাল, বাংলাদেশের শত্রু ও স্বাধীনতার শত্রুÑ এ কথা দেশবাসীর কাছে সূর্যের ন্যায় স্পষ্ট হয়ে গেছে।
নরসিংদী সদর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মাসুদ আলম বলেন, হাড়িধোয়া নদীর তীরে ইসকনের অনুষ্ঠানের অস্থায়ী স্থাপনা তারা নিজেরাই অপসারণ করছে। প্রশাসন এলাকার নিরাপত্তা নিশ্চিতে সচেষ্ট রয়েছে।