আশুলিয়া (ঢাকা) প্রতিবেদক
প্রকাশ : ৩০ নভেম্বর ২০২৪ ১৪:০৭ পিএম
ঢাকার শিল্পাঞ্চল আশুলিয়ায় বাৎসরিক ছুটির পাওনা টাকা ও ৭ কর্মকর্তার অপসারণ দাবিতে নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন একটি তৈরী পোশাক কারখানার শ্রমিকেরা। এতে ওই মহাসড়কের উভয় পাশের যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। পরে প্রায় ৩ ঘন্টা পর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের আশ্বাসে তারা মহাসড়ক ছেড়ে দেন।
শনিবার (৩০ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ৮টা থেকে আশুলিয়ার শ্রীপুরস্থ শিন শিন গ্রুপের জেনস প্লাস লিমিটেড কারখানার প্রায় সহস্রাধিক শ্রমিকেরা মহাসড়ক অবরোধ করেন।
আশুলিয়া শিল্পাঞ্চল পুলিশ-১ এর পুলিশ সুপার মো. মমিনুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
শ্রমিকেরা বলেন, বাৎসরিক ছুটির পাওনা টাকা ও ৭ জন কর্মকর্তার অপসারণ চেয়ে দুই মাস ধরে দাবি জানিয়ে আসছেন শ্রমিকেরা। কিন্তু কর্তৃপক্ষ এনিয়ে তালবাহানা করতে থাকেন। পরে গত বৃহস্পতিবার ২৮ নভেম্বর দুপুরে কাজ বন্ধ করে দিয়ে কারখানার ভেতরে শান্তিপূর্ণ কর্মবিরতি শুরু করেন শ্রমিকেরা। একপর্যায়ে কর্তৃপক্ষ তাদের দাবি মেনে নিয়ে দুইজন কর্মকর্তাকে অপসারণ করেন এবং শ্রমিকদের দাবিকৃত টাকার মধ্য থেকে নামমাত্র কিছু টাকা মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে দিতে থাকেন। বাকী টাকা শনিবার দিবেন বলে আশ্বাস দেন।
শিন শিন কারখানার সুইং অপারেটর তানিয়া আক্তার তৃষা, নুর ইসালামসহ আরও অনেক শ্রমিক জানান, কারখানাটিতে প্রায় ১হাজার ৩০০ জন শ্রমিক কাজ করেন। তাদের কারও ৫ বছর, কারও ৭ বছর আবার কারও বেশিদিনের ছুটির টাকা পাওনা রয়েছে। এসব পরিশোধের দাবি জানিয়ে আন্দোলন করেন তারা। আন্দোলনের কারণে কারখানাটির মালিকপক্ষ শ্রমিকদের সম্পূর্ণ বাৎসরিক ছুটির টাকা পরিশোধের পরিবর্তে আংশিক প্রদান করে বাকি টাকা বকেয়া রাখেন। ৩ বছরের ছুটির টাকা জমা হলে এক বছরের টাকা পরিশোধ করেন এবং দুই বছরের টাকা বকেয়া রাখা হয়। গত বৃহস্পতিবার কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের ছুটির টাকা পরিশোধের কথা বললেও পরে দেখা যায় শ্রমিকরা আংশিক টাকা পেয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে গত বৃহস্পতিবার শ্রমিকরা কারখানায় কাজ বন্ধ করে আন্দোলন শুরু করে কর্মবিরতি পালন করে। পরবর্তীতে মালিকপক্ষ কোন ঘোষণা ছাড়াই আজ শনিবার কারখানা সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেন। তাই বাধ্য হয়েই সড়কে নেমেছি।
এদিকে, আজ শনিবার সকালে কারখানায় এসে শ্রমিকেরা প্রধান ফটক বন্ধের নোটিশ দেখতে পান। পরে এ নিয়ে কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে কথা বলতে পারেননি শ্রমিকেরা। পরে সকাল সাড়ে ৮ টার দিকে নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করতে থাকেন। এতে ওই মহাসড়কের উভয় পাশে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিলে মহাসড়ক ছেড়ে দেন শ্রমিকেরা।
শিন শিন গ্রুপের জেনস প্লাস লিমিটেড কারখানার এইচ আর এডমিন মো. জামাল বলেন, শ্রমিকদের সকল পাওনাদি আইন অনুযায়ী পরিশোধ করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ভুল বোঝাবোঝির কারণে এমনটি হচ্ছে। তবে এখন ঝামেলা নেই, মিটে গেছে। কারখানা আজ কেন সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে এমন প্রশ্ন করতেই ফোনটি কেটে দেন এই কর্মকর্তা।
শিল্পাঞ্চল পুলিশের পুলিশ সুপার মো. মমিনুল ইসলাম বলেন, বাৎসরিক ছুটির টাকাসহ বিভিন্ন দাবি জানিয়ে গত বৃহস্পতিবারও আন্দোলন করেন শ্রমিকেরা। ওইদিন নিকোজিয়েশন (সমাধান) হয়নি। শনিবার সকালে কারখানায় এসে বন্ধের নোটিশ দেখতে পেয়ে আবার শ্রমিকেরা রাস্তায় নামেন।