মৌলভীবাজার প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৮ নভেম্বর ২০২৪ ১৯:৩১ পিএম
আপডেট : ২৮ নভেম্বর ২০২৪ ১৯:৪১ পিএম
মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে নারী চা-শ্রমিক ও অন্যান্য কর্মজীবী নারীর প্রতি সহিংসতা ও বৈষম্য সমাধানে ১৬ দিনের প্রচারাভিযান শীর্ষক সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) উপজেলার ব্র্যাক লার্নিং সেন্টারে দিনব্যাপী এ সংলাপের আয়োজন করা হয়। এ সময় চা-শ্রমিকদের নিয়ে প্রকাশিত ‘টি ওয়ার্কার্স অব বাংলাদেশ : রিয়ালিটিজ অ্যান্ড চ্যালেঞ্জস’ বইটির মোড়কও উন্মাচন করা হয়।
সোসাইটি ফর এনভায়রনমেন্টাল হিউম্যান ডেভেলপমেন্টের (সেড) পরিচালক ফিলিপ গাইনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সংলাপে অতিথির বক্তব্য দেনÑকলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের উপমহাপরিদর্শক মোহাম্মদ মাহবুবুল হাসান, মৌলভীবাজারের সাবেক সিভিল সার্জন ডা. সত্যকাম চক্রবর্তী, শ্রীমঙ্গল উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা সুয়েব হোসেন চৌধুরী, কমলগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান রাম ভজন কৈরী, বাংলাদেশ চা-শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মাখন লাল কর্মকার, সহ-সভাপতি জেসমিন আক্তার, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নৃপেন পাল, অর্থ সম্পাদক পরেশ কালিন্দী, শ্রীমঙ্গল প্রেস ক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এম ইদ্রিস আলী।
আরও বক্তব্য দেন মৌলভীবাজার জেলা হরিজন ঐক্য পরিষদের মহিলাবিষয়ক সম্পাদিকা বাসন্তি বাসফোর, চা-শ্রমিক ইউনিয়ন জুড়ী ভ্যালী কমিটির সহসভাপতি শ্রীমতী বাউরি, যৌন অধিকারকর্মী রাজিয়া সুলতানা, হিজড়া অধিকারকর্মী ইভান আহমেদ কথা, পরিচ্ছন্নতাকর্মী সুকন বাসফোর প্রমুখ।
সংলাপে চা-শ্রমিকদের আর্থসামাজিক অবস্থা, কর্মপরিবেশ, চা বাগানে শ্রম আইনের প্রয়োগ ও অপপ্রয়োগ, মজুরি, স্বাস্থ্য, নারীর প্রতি সহিংসতা, সামাজিক সুরক্ষা ইত্যাদি বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য-উপাত্ত ও বিশ্লেষণ তুলে ধরা হয়।
প্রারম্ভিক বক্তব্যে চা বাগান নিয়ে সেড’র নতুন প্রকাশনা ‘টি ওয়ার্কার্স অব বাংলাদেশ : রিয়ালিটিজ অ্যান্ড চ্যালেঞ্জেস’ এবং পূর্বের আরও ১০টি গ্রন্থের সাথে সবাইকে পরিচিত করে সেড’র পরিচালক ফিলিপ গাইন বলেন, ‘বিজ্ঞ অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক রেহমান সোবহান চা শিল্পের মালিকানায় শ্রমিকদের অংশীদারত্ব দেওয়ার পক্ষপাতী। এ রকম স্মল হোল্ডিংয়ের মডেল আছে শ্রীলঙ্কায়। এ ধরনের মডেল নিয়ে কি আমরা বাংলাদেশে কথা বলতে পারছি?’
অধিকারকর্মী রাজিয়া সুলতানা বলেন, ‘পূর্বেও রাষ্ট্রের কাছে যৌনকর্মীরা তেমন সাহায্য পায়নি। ছাত্র আন্দোলনের পরে এই কর্মীদের অবস্থা এখন আরও খারাপ। ভাসমান যেসব যৌনকর্মী আছে তারা এখন রাস্তায় কোথাও দাঁড়াতে পারে না, কেউ না কেউ তাদের রাস্তা থেকে সরিয়ে দেয়। কোথায় যাবে এরা?’
বাংলাদেশ চা-শ্রমিক ইউনিয়নের জুড়ী ভ্যালী কমিটির সহসভাপতি শ্রীমতী বাউরি বলেন, ‘মাঠে কাজ করা এত নারী চা-শ্রমিকের কথা চিন্তা করে কি শ্রম আইনের সংশোধন হয়? পাতা তোলার সেকশনে না আছে শৌচাগার, না আছে বিশুদ্ধ খাবার পানি।’
দিনব্যাপী সংলাপে সাংবাদিক, সমাজকর্মী, যৌনকর্মী, হিজড়া, চা-শ্রমিক, বেদে, ঋষি, কায়পুত্র, জলদাসসহ বিহারি প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।