আইন ও সালিশ কেন্দ্রের প্রতিবেদন
গাজীপুর প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৮ নভেম্বর ২০২৪ ১৯:২৬ পিএম
গাজীপুরে গত আট মাসে বিভিন্ন বয়সি ৫১৪ জন নারী সহিংসতার শিকার হয়েছেন। আইন ও সালিশ কেন্দ্রের গাজীপুর কার্যালয়ের কর্মকর্তারা গাজীপুর প্রেস ক্লাবের সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবনিমিয়কালে এ তথ্য তুলে ধরেন।
বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) সকাল ১১টা থেকে দুপুর পর্যন্ত গাজীপুর শহরের মধ্য ছায়াবিথী এলাকার আইন ও সালিশ কেন্দ্র কার্যালয়ের সভাকক্ষে মতবিনিমিয় সভায় নারীর প্রতি সহিংসতা, অগ্নি প্রকল্পের কার্যক্রম ও অর্জন বিষয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে অর্ধবার্ষিক প্রতিবেদন তুলে ধরা হয়। প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন সংস্থার গাজীপুর জেলা ব্যবস্থাপক আসাদুজ্জামান আমান।
আইন ও সালিশ কেন্দ্রের সিএসও সদস্যদের তথ্যানুযায়ী যারা সহিংসতার শিকার হয়েছেন তাদের মধ্যে শূন্য থেকে ১০ বছর বয়সি রয়েছে ১৫ জন, ১১ থেকে ২০ বছর বয়সি ৮১ জন, দুই থেকে ৩০ বছর বয়সি ৭৯ জন, ৩১ থেকে ৪০ বছর বয়সি ৮৪ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছর বয়সি ৫৪ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছর বয়সি ২০১ জন এবং ৬১ বছরের ওপর বয়সি রয়েছেন ১৫ জন।
প্রতিবেদনে বলা হয়, আইন ও সালিশ কেন্দ্রের মাধ্যমে ৫১৪ জন ভুক্তভোগী নারীর মধ্যে সহযোগিতার প্রয়োজন ছিল ৩৪৪ জনের। এর মধ্যে আইনি সেবায় ১৪৫ জন, চিকিৎসাসেবায় ২৯ জন এবং মনোস্তাত্ত্বিক পরামর্শের প্রয়োজন ছিল ১৬১ জনের।
এতে বলা হয়, অগ্নি প্রকল্পের অধীনে প্রাথমিক কাউন্সিলিং সেবা দিয়ে প্রতিকারের ব্যবস্থা করা হয় ১৫৭ জন নারীকে, আইনি সহায়তার পরামর্শ নেন ৫১ জন, সিএসওএর উদ্যোগে স্থানীয় পর্যায়ে সালিশের ব্যবস্থা করা হয় ১৬ জনের ক্ষেত্রে, চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয় পাঁচজনকে এবং পরামর্শের ভিত্তিতে আদালতে মামলা করার ক্ষেত্রে সহযোগিতা করা হয় ১৬ জন নারীকে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, গণমাধ্যমে প্রকাশিত পরিসংখ্যান অনুযায়ী ৬৯ জন নারী সহিংসতার শিকার হয়েছেন। এর মধ্যে ধর্ষণ ও সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছেন ১৬ জন নারী, ধর্ষণ-পরবর্তী হত্যার শিকার হয়েছেন চারজন, ধর্ষণের পর আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন পাঁচজন, বিভিন্নভাবে হত্যার শিকার ১৭ জন, লাশ উদ্ধার করা হয়েছে ১২ জনের, শারীরিক নির্যাতনের শিকার ১২ জন এবং শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়ে আত্মহত্যা করেন তিনজন নারী।
মতবিনিময় সভায় উপস্থিত সাংবাদিকরা তাদের মতামত ব্যক্ত করেন। নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে এবং সংবাদপত্রের ভূমিকা নিয়ে আলোচনা, সাংবাদিকদের বিশ্লেষণধর্মী ও দায়িত্বশীলতার সঙ্গে সংবাদ পরিশেনের প্রতি গুরুত্ব আরোপ করা হয়। নির্ধারিত বিষয়ে আরও মতবিনিময় করেন অগ্নি প্রকল্পের সমন্বয়কারী অ্যাডভোকেট আসমা খানম রুবা। উপস্থিত ছিলেন অর্থ ও প্রশাসক কর্মকর্তা প্যামেলিয়া সাহা, ডাটা ম্যনেজমেন্ট কনসালটেন্ট মো. মহসীন আলী।
আইন ও সালিশ কেন্দ্রের গাজীপুরের জেলা ব্যবস্থাপক আসাদুজ্জামান আমান বলেন, ‘গাজীপুরের পাঁচটি উপজেলার ৩৯টি ইউনিয়নে নারীর প্রতি সহিংসতা রোধে কাজ করে আইন ও সালিশ কেন্দ্রের অগ্নি প্রকল্প। চলতি বছরের মার্চ থেকে অক্টোবর পর্যন্ত আট মাস গাজীপুরে বিভিন্ন বয়সের ৫১৪ জন নারীর সঙ্গে (ধর্ষণ, যৌন হয়রানি, সালিশ, পারিবারিক নির্যাতন ও ফতোয়া) সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে।’