সিরাজগঞ্জ প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৭ নভেম্বর ২০২৪ ১২:৫১ পিএম
আপডেট : ২৭ নভেম্বর ২০২৪ ১৩:০৮ পিএম
ঠিকাদার মীর সেরাজুল ইসলাম। ছবি : সংগৃহীত
সিরাজগঞ্জে ঠিকাদারি কাজে সরকারি নিয়মের তোয়াক্কা না করে লোহার পাইপের পরিবর্তে বাঁশ ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে এক ঠিকাদারের বিরুদ্ধে। বেলকুচি উপজেলার সমেশপুর হাটে দোতলা একটি ভবন নির্মাণে লোহার পাইপের পরিবর্তে বাঁশ ব্যবহার করা নিয়ে জটিলতা দেখা দিয়েছে। নির্মাণকাজের ঠিকাদার সাবেক আওয়ামী লীগ নেতা মীর সেরাজুল ইসলামকে নিম্নমান ও নিয়ম না মেনে কাজ করার জন্য প্রকৌশল অফিস থেকে দুই দফা চিঠি দিলেও দাপট দেখিয়ে কাজ করে চলেছেন। এ বিষয়ে ক্ষুব্ধ হাটের সাধারণ মানুষ। তবে নিয়ম না মেনে কাজ করার কোনো সুযোগ নেই বলে জানিয়েছেন জেলা এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী সাইফুল ইসলাম।
এলজিইডি অফিসসূত্রে জানা যায়, গ্রামীণ বাজার অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় দেশব্যাপী হাটভবন নির্মাণ করা হচ্ছে। এর আওতায় সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলার সমেশপুর বাজারে দোতলাবিশিষ্ট ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে। ২০২৩ সালের মে মাসে মেসার্স লিটন এন্টারপ্রাইজ চুক্তিবদ্ধ হয়। এতে ২ কোটি ২৫ লাখ টাকা ব্যয় ধরা হয়। বিভিন্ন প্রকার ব্যয়ের মধ্যে প্রায় ১৫ লাখ টাকার স্টিল শাটার ও লোহার পাইপের ব্যবহারের কথা উল্লেখ থাকলেও ঠিকাদার ইচ্ছামতো বাঁশের ব্যবহার করে যাচ্ছেন। কাজটি গেল এপ্রিলে শেষ করার কথা থাকলেও আজ অবধি কাজ হয়েছে ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ বলে জানায় স্থানীয় প্রকৌশল অফিস। কাজের মান এবং বিবরণীতে স্টিল শাটার ও লোহার পাইপের ব্যবহার করার কথা উল্লেখ করে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে চিঠিও দেওয়া হয়েছে। প্রকৌশল অফিস থেকে বারবার তাগাদা দিলেও দাপট দেখিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন ঠিকাদার। ভবনটিতে প্রথম তলার ঢালাই করার জন্য কাঠ ও বাঁশ দিয়ে ফ্রেম করা হয়েছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, মীর সেরাজুল আওয়ামী লীগের প্রভাবে এখনও জেলা নির্বাহী প্রকৌশল অফিসের সঙ্গে যোগসাজশ করে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। এ হাটের স্থানীয়দের দাবি, ভবনটি যেন সঠিকভাবে করা হয়।
এ বিষয়ে বেলকুচি উপজেলা প্রকৌশলী বোরহান উদ্দিন বলেন, ‘আমরা গত মাসে ডিজাইন মোতাবেক ও মানসম্মত সামগ্রী ব্যবহারের জন্য দুই দফা চিঠি প্রদান করেছি। এ কাজের ক্ষেত্রে স্টিল ও লোহার পাইপ দিয়ে ছাদ ঢালাইয়ের উল্লেখ আছে। কিন্তু ঠিকাদার এখন পর্যন্ত বাঁশ ও কাঠ দিয়ে ঢালাইয়ের জন্য ফ্রেম করেছেন। বাঁশ ও কাঠ দিয়ে ঢালাই দিলে এ ধরনের বড় মানের ভবনের জন্য ক্ষতি হতে পারে। এভাবে নির্মাণ হলে ভবনের স্থায়িত্বকাল কমে যাবে। আমাদের এ কাজে প্রায় ১৫ লাখ টাকার স্টিল শাটার ধরা আছে।’
এ বিষয়ে ঠিকাদার মীর সেরাজুল ইসলাম বলেন, ‘বাঁশ শাটারে ব্যবহার করলে কী সমস্যা! স্টিল শাটার ব্যবহার করব কি না, আমার ব্যাপার। ভবন ভেঙে গেলে ক্ষতিপূরণ আমাকে দিতে হবে তাতে অন্যের সমস্যা কী?‘ এ ছাড়া এ বিষয়ে অফিস সব জানে এবং সমন্বয় করে কাজ করা হচ্ছে বলে জানান তিনি। কাজে ধীরগতি কেন? এ বিষয়ে কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি।
সিরাজগঞ্জ এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘যেহেতু ভবনের শাটারিংয়ের জন্য বরাদ্দ দেওয়া আছে, কোনোভাবেই বাঁশ ও কাঠ দিয়ে শাটারিং দেওয়া যাবে না। ঠিকাদারকে এরই মধ্যে জানানো হয়েছে। সাত দিনের মধ্যে বাঁশ ও কাঠের শাটারিং খুলে ফেলার জন্য বলা হয়েছে।’