× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

বেতাগী

আদালত না থাকায় বিচার প্রার্থীদের ভোগান্তি

সাইদুল ইসলাম মন্টু, বেতাগী (বরগুনা)

প্রকাশ : ২৭ নভেম্বর ২০২৪ ১১:০৫ এএম

আপডেট : ২৭ নভেম্বর ২০২৪ ১১:০৬ এএম

১৯৯২ সালে বরগুনার বেতাগী থেকে আদালত স্থানান্তর করা হয় জেলা সদরে। এরপর থেকে উপজেলা আদালত ভবন কোনো কাজেই আসছে না। প্রবা ফটো

১৯৯২ সালে বরগুনার বেতাগী থেকে আদালত স্থানান্তর করা হয় জেলা সদরে। এরপর থেকে উপজেলা আদালত ভবন কোনো কাজেই আসছে না। প্রবা ফটো

রবগুনার বেতাগীতে উপজেলা আদালত না থাকায় এলাকার মানুষদের নানা সংকট ও সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। এতে বিচারপ্রার্থীদের জেলা সদরে যাওয়া-আসা, উকিলের পাওনাসহ বিভিন্ন খরচ মেটাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। 

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বরগুনা মহকুমা থাকাকালে ১৯৬৯ সালে বেতাগী থানা আদালতের কার্যক্রম শুরু হয়। পরে এরশাদ সরকারের আমলে উপজেলা প্রতিষ্ঠার সুবাদে বেতাগীতে থানা আদালত প্রতিষ্ঠা করা হয়। তবে ১৯৯২ সালে বেতাগী থেকে আদালত স্থানান্তর করা হয় জেলা সদরে। 

এদিকে, উপজেলা আদালতের দাবিতে বিভিন্ন সময় ম্যাস লাইন মিডিয়া সেন্টার (এমএমসি)’র নেটওয়ার্কিং সেমিনার এবং আদালত বাস্তবায়ন সংগ্রাম কমিটি ও উপজেলা মানবাধিকার জোট মানববন্ধনসহ বিভিন্ন পালন করে আসছে। দাবির স্বপক্ষে প্রধানমন্ত্রী, আইন বিচার ও সংস্থাপন মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিস্ট বিভাগে স্মারকলিপিও দেওয়া হয়। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

জানা গেছে, বেতাগী উপজেলার একটি পৌরসভা ও সাতটি ইউনিয়নের ৭১টি গ্রামে দুই লাখের বেশি মানুষের বসবাস। জেলা সদর থেকে ৪৫ কিলোমিটার দূরে বেতাগী উপজেলা পরিষদের অবস্থান। যোগযোগব্যবস্থার দিক দিয়েও এলাকাটি পিছিয়ে। তা ছাড়া সদরে স্থানান্তরিত বেতাগী থানা আদালতের বিশৃঙ্খল অবস্থা। বিচারক, আইনজীবী, আদালতের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বসার ব্যবস্থা নেই। আসামি ও বহিরাগতদের দরজার বাইরে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। আসামিদের জবানবন্দির গোপনীয়তা রক্ষা করা সম্ভব হয় না। আদালত কার্যালয়ে প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম নেই। আদালতের অভাবে মামলার বাদী-বিবাদী উভয় পক্ষকে মাইলের পর মাইল পথ পাড়ি দিয়ে বরগুনায় জেলা সদরে যাওয়া-আসা করতে হয়। এতে খাওয়া ও উকিলের পাওনা মেটাতে হিমশিম খেতে হয় ভুক্তভোগীদের। 

বরগুনা থেকে ৪৫ কিলোমিটার দূরত্বে বেতাগী সদর। সেখান থেকে আরও ১৫ কিলোমিটার উত্তরে বিবিচিনি ইউনিয়ন। ওই ইউনিয়নের দেশান্তরকাঠী গ্রামের ভুক্তভোগী মো. হারুন-অর-রশীদ বলেন, এখানে আদালত থাকলে উপজেলা সদরের কাছে লোকজন বাড়িতে বসেই মামলা পরিচালনা করতে পারত। সদর থেকে একটু দূরে যাদের বসবাস, তারা সকাল সকাল কাজ সেরে বাড়ি ফিরতে পারত। মামলায় কম টাকা ব্যয় হতো। সীমাহীন দুর্ভোগ ও কষ্টের শিকার হতে হতো না। কিন্তু আদালত স্থানান্তরের ফলে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি বেড়েছে। বেশি অর্থ ব্যয়ের কারণে অনেকে মামলার ব্যয়ভার পরিচালনা করতে পারছে না। তা ছাড়া প্রশাসনিক জটিলতায় মামলার কার্যক্রম দেরিতে হয়। প্রয়োজনীয় সাক্ষী সংগ্রহ করা সম্ভব হয় না। এতে মানুষ ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। 

এদিকে, এরশাদ সরকারের আমলে নির্মিত উপজেলা আদালত ভবন অযত্ন আর অবহেলায় ধ্বংসের মুখে পড়ছে। বিচারপ্রার্থী প্রভাষক জহিরুল ইসলাম শাহিন বলেন, জেলা সদরে আদালত থাকায় কষ্টের আর শেষ নেই। অর্থ ও সময় সব দিক দিয়েই ক্ষতির শিকার হতে হয়। 

বরগুনা আইনজীবী সমিতির সদস্য অ্যাডভোকেট মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, প্রশাসনিক জটিলতায় মামলার কার্যক্রম দেরি হচ্ছে। প্রয়োজনীয় সাক্ষী সংগ্রহ করা সম্ভব হয় না। মানুষ ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। অন্যদিকে বহু টাকা খরচ করে নির্মাণ করা আদালত ভবন অযত্ন আর অবহেলায় ধ্বংস হচ্ছে। 

বরগুনায় জেলা সদরে বেতাগী থানা আদালতে কর্মরত অ্যাডভোকেট বিমান কান্তি গুহ বলেন, এখান থেকে যে কারণে আদালত স্থানান্তর করা হয়েছে, তার কোনো যৌক্তিকতা নেই। জনস্বার্থে এ উপজেলায় আদালত পুনঃস্থাপনের দাবি জানাই। 

বেতাগী পৌরসভার সাবেক প্যানেল মেয়র হুমায়ূন কবির মল্লিক বলেন, মানুষের দীর্ঘদিনের ভোগান্তি লাঘবে জেলা সদর থেকে যাতে দ্রুত বেতাগীতে আদালত স্থানান্তর করা হয়, তা পুনর্বিবেচনার জন্য সংশ্লিষ্টদের দিকে আমরা তাকিয়ে আছি। 

সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মো. শাজাহান কবির বলেন, থানা আদালত পুনঃস্থাপনে সরকারের যে নীতিমালা রয়েছে তার সবই এখানে বিদ্যমান। রয়েছে প্রয়োজনীয় অবকাঠামো ভবন, হাজতখানা, পুলিশ ব্যারাক, বৈদ্যুতিক সংযোগসহ সব ব্যবস্থা। জেলায় রয়েছে এ উপজেলার কোর্ট পরিচালনার জন্য সম্পূর্ণ আলাদা জনবল ও কাঠামো। এখন শুধুমাত্র আদালত পুনঃস্থাপনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হলেই কার্যক্রম পরিচালিত হতে পারে।

বেতাগী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও প্রশাসক ফারুক আহমদ বলেন, এ বিষয়ে স্থানীয় প্রশাসনের হাতে কিছু নেই। এটি সরকারের উচ্চ পর্যায়ের সিদ্ধান্তের ব্যাপার। তবে বিচারপ্রার্থীদের ভোগান্তির কথা বিবেচনা করে এখানে থানা আদালত স্থাপন জরুরি হয়ে পড়েছে। 

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : মোরছালীন বাবলা

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা