যোগাযোগ
টাঙ্গাইল প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৭ নভেম্বর ২০২৪ ০৯:৪১ এএম
দেশের দীর্ঘতম রেলওয়ে সেতুর ওপর দিয়ে মঙ্গলবার পরীক্ষামূলক চলাচল করে ট্রেন। প্রবা ফটো
উত্তরবঙ্গের একমাত্র প্রবেশদ্বার টাঙ্গাইলের প্রমত্তা যমুনা নদীর ওপর দেশের দীর্ঘতম যমুনা রেলওয়ে সেতুর মূল কাজ সম্পন্ন হয়েছে। দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর সেতুতে গতকাল মঙ্গলবার প্রথমবার ট্রায়াল ট্রেন চালানো হয়েছে। সকালে চালানো ট্রায়াল ট্রেন প্রথমবার ঘণ্টায় ১০ কিলোমিটার গতিতে চলে। পরে ঘণ্টায় ট্রেনের গতি ছিল যথাক্রমে ২০ ও ৪০ কিলোমিটার। ট্রেনের মূল চালক ছিলেন মাইনুল ইসলাম, সহকারী চালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন আব্দুস সালাম।
ট্রায়াল ট্রেন উদ্বোধনের সময় উপস্থিত ছিলেনÑ রেলসেতু প্রকল্প পরিচালক আল ফাত্তাহ মোহাম্মদ মাসুদুর রহমান, প্রকল্প ব্যবস্থাপক ফ্রান্সের মার্ক হবি, নির্মাণ ব্যবস্থাপক জাপানের মি. ইপোমাফসু, ট্রাক এক্সপার্ট জাপানের নাকাজিমা, নিরাপত্তা প্রকৌশলী কামরুল হাসান চৌধুরীসহ দেশি-বিদেশি বিভিন্ন ঊর্ধ্বতনের কর্মকর্তারা।
ট্রায়ালে ট্রেন চালানোর সময় টাঙ্গাইল ও সিরাজগঞ্জের দুই পাড়ের মানুষের মাঝে ব্যাপক উচ্ছ্বাস দেখা যায়। তারা এখন সেতু উদ্বোধনের প্রহর গুনছে।
উদ্বোধন ট্রায়াল ট্রেনের চালক মাইনুল ইসলাম বলেন, ‘আমার খুব ইচ্ছা ছিল প্রথম ট্রেনটি আমি চালাব। আমার ইচ্ছা পূরণ করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করছি।’
যমুনা রেলওয়ে সেতু প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিডি) আল ফাত্তাহ মো. মাসুদুর রহমান জানান, গত সোমবার থেকে ট্রায়াল ট্রেন শুরু হলেও গতকাল মঙ্গলবার সকালে উদ্বোধনী ট্রায়াল ট্রেন পরিচালনা করা হয়েছে। আজ বুধবার পর্যন্ত ট্রায়াল ট্রেন চলবে। চলতি বছরের ডিসেম্বর মাসে উদ্বোধনের কথা থাকলেও তা হচ্ছে না। আগামী ২০২৫ সালের জানুয়ারি মাসের প্রথম বা দ্বিতীয় সপ্তাহে উদ্বোধনের সম্ভাবনা রয়েছে।
যমুনা রেলসেতু রেলওয়ে প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, নির্মাণাধীন যমুনা রেলসেতু সাধারণ ট্রেন ছাড়াও দ্রুতগতির (হাই স্পিড) ট্রেন চলাচলের উপযোগী করে নির্মাণ করা হচ্ছে। ফলে সেতুতে ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ২৫০ কিলোমিটার গতিতে ট্রেন চলাচল করতে পারবে। তবে উদ্বোধনের প্রথম বছরে সাধারণত ঘণ্টায় ১০০ থেকে ১২০ কিলোমিটার গতিতে ট্রেন চলাচল করবে।
১৯৯৮ সালে যমুনা সেতু চালু হওয়ার পর ঢাকার সঙ্গে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের রেলযোগাযোগ স্থাপিত হয়। ২০০৮ সালে সেতুটিতে ফাটল দেখা দেওয়ায় ট্রেনের গতি কমিয়ে দেওয়া হয়। বর্তমানে প্রতিদিন প্রায় ৩৮টি ট্রেন ঘণ্টায় ২০ কিলোমিটার গতিতে সেতু পারাপার হচ্ছে। এই সমস্যার সমাধানে সরকার যমুনা নদীর ওপর আলাদা রেলসেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেয়। ২০২১ সালের মার্চে সেতুর পাইলিংয়ের কাজ শুরু হয়।