নওগাঁ প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৬ নভেম্বর ২০২৪ ২২:৪৪ পিএম
নওগাঁয় ন্যায্যমূল্যের দোকানে প্রতিদিনই বাড়ছে দিনমজুর থেকে শুরু করে স্বল্প আয়ের মানুষসহ মধ্যবিত্ত মানুষের ভিড়। দ্রব্যমূল্যের এই ঊর্ধ্বগতির বাজারে ন্যায্যমূল্যের দোকানে কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে স্বল্প আয়ের খেটে খাওয়া শ্রেণি ও মধ্য আয়ের মানুষের মাঝে। আগামীতে দোকানগুলোতে আরও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য যুক্ত করে এমন উদ্যোগের দীর্ঘ পথচলা দেখতে চায় ভোক্তারা।
শনিবার (২৩ নভেম্বর) দোকানের উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আউয়াল। এ সময় সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এসএম রবিন শীষ, প্রশাসনের কর্মকর্তা, ছাত্র সমাজের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। দোকানটি উদ্বোধনের পর থেকেই কমদামে পণ্য কিনতে ভিড় করে ক্রেতারা। বাজারমূল্য থেকে কিছুটা কম দামে পণ্য পেয়ে উপকৃত হচ্ছেন বলে জানায় তারা।
সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এসএম রবিন শীষ বলেন, স্বল্প আয়ের মানুষের কথা চিন্তা করে ন্যায্যমূল্যের দোকান চালু করা হয়েছে। মাঠে উৎপাদিত কৃষকদের ফসল বিশেষ করে কাঁচা সবজি হাত বদল হলেই দাম বেড়ে যায়। যার কারণে কৃষকরা যেমন তাদের উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্যমূল্য পাওয়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছে তেমনিভাবে ভোক্তাদের দ্বিগুণ মূল্য দিয়ে সেই পণ্যগুলো কিনতে হচ্ছে। ফলে উভয়পক্ষই প্রতারণার শিকার হচ্ছে, আর তৃতীয় পক্ষ লাভবান হচ্ছে। এমন সমস্যা থেকে উত্তরণে সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে পণ্য কিনে ন্যায্যমূল্যের এই দোকানে বিক্রি করা হচ্ছে। এতে কৃষকরা তাদের উৎপাদিত ফসলের ন্যায্যমূল্য যেমন পাচ্ছে, তেমনি স্বল্প আয়ের মানুষরাও কিছুটা স্বস্তি পাচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, ভোক্তারা খোলা বাজারের চেয়ে ন্যায্যমূল্যের দোকানে ৫-১০ টাকা কম দামে পণ্য পাচ্ছে। দোকানে আপাতত তিনটি পণ্য আলু ৬৫ টাকা ও পেঁয়াজ ১০৫ টাকা কেজি এবং ডিম ৪৫ টাকা হালিতে বিক্রি করা হচ্ছে। এই দোকান থেকে একজন ক্রেতা ২ হালি ডিম, ২ কেজি করে আলু ও পেঁয়াজ কিনতে পারবে। প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত এই দোকান চালু থাকবে।
দোকানে পণ্য কিনতে আসা শহরের চকদেবপাড়া মহল্লার বাসিন্দা আলতাব হোসেন বলেন, প্রতিদিনই বাজারে কোনো নোটিস ছাড়াই কোনো না কোনো পণ্যের দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে। কিন্তু আমাদের আয় বৃদ্ধি পাচ্ছে না। এতে করে আমরা স্বল্প আয়ের মানুষরা জীবনযাপন করতে হিমশিম খাচ্ছি। বাজারের তালিকা আর ছোট করা যাচ্ছে না। এমন ঊর্ধ্বগতির বাজারে ন্যায্যমূল্যের দোকান আমাদের কিছুটা স্বস্তি দিচ্ছে। তবে শুধু আলু, পেঁয়াজ আর ডিমই নয় অতিদ্রুত আমরা তেল, ডালসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় অধিকাংশ পণ্য কম দামে এই দোকান থেকে পেতে চাই। আমাদের এমন দাবি দ্রুত বাস্তবায়ন করতে সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করছি।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আউয়াল বলেন, জেলায় উৎপাদিত কাঁচা সবজির ক্ষেত্রে স্থানীয় খোলা বাজারে একটি প্রতিযোগিতা সৃষ্টির লক্ষ্যেই ন্যায্যমূল্যের এই দোকান চালু করা হয়েছে। সরাসরি মাঠপর্যায়ে কৃষকদের সঙ্গে যোগাযোগ করে সবজি এনে এই দোকানে ন্যায্যমূল্যে ভোক্তাদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। এতে কৃষক ও ভোক্তা উভয়ই উপকৃত হবে। পরবর্তী সময়ে ফলাফল ভালো হলে জেলার প্রতিটি উপজেলায় এই দোকান চালু করা হবে। এ ছাড়া প্রতিটি হাটে প্রান্তিক পর্যায়ের কৃষকদের জন্য টোল ফ্রি সবজি বিক্রির কর্নার চালুর পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। এমন কর্মকাণ্ডের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে পারলে জেলার কৃষক ও ভোক্তারা উভয়েই উপকৃত হওয়ার পাশাপাশি লাভবানও হবে।